হল সংসদে দায়িত্ব গ্রহণ করেননি তানহা-মীম

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ও হল ছাত্র সংসদে নবনির্বাচিত কমিটির প্রথম কার্যকারী সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে অনেক জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে ভিপি নুরসহ নির্বাচিত ছাত্র প্রতিনিধিদের মধ্যে সবাই দায়িত্ব গ্রহণ করলেও দুটি হল সংসদে বামপন্থী ছাত্রজোটের দুই সদস্য দায়িত্ব গ্রহণ করেননি। 

শনিবার দুপুরে ডাকসু ভবনে ডাকসুর সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামানে সভাপতিত্বে ডাকসুর প্রথম কার্যকারী সভা অনুষ্ঠিত হয়। অন্যদিকে স্ব স্ব হলের ছাত্র সংসদ কক্ষে প্রথম কার্যকারী সভা অনুষ্ঠিত হয়। স্ব স্ব হল ছাত্র সংসদের সভাপতিরা (হল প্রভোস্ট) সভার সভাপতিত্ব করেন।

বেলা ১১টায় ডাকসু ভবনে অনুষ্ঠিত কার্যনির্বাহী পরিষদের সভা শেষে দায়িত্ব গ্রহণ করেন ডাকসুর সহ-সভাপতি (ভিপি) নুরুল হক নুর, সাধারণ সম্পাদক (জিএস) গোলাম রাব্বানী, সহ-সাধারণ সম্পাদক (এজিএস) সাদ্দাম হোসেনসহ অন্য সম্পাদক ও সদস্যরা। একই সময়ে হলগুলোতে দায়িত্ব গ্রহণ করেন স্ব স্ব হল সংসদে নির্বাচিতরা।

তবে, মেয়েদের দুটি হল সংসদে নির্বাচিত দুইজন দায়িত্ব গ্রহণ করেননি। এরা হলেন— কবি সুফিয়া কামাল হল সংসদে সদস্য পদে বিজয়ী লামইয়া তানজিন তানহা ও বাংলাদেশ-কুয়েত মৈত্রী হল সংসদে সদস্য পদে নির্বাচিত ফারজানা আক্তার মীম। তারা দুজনই প্রগতিশীল ছাত্র ঐক্যের প্যানেল থেকে নির্বাচন করেছেন।

ডাকসুতে ২৫টি পদ ছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৮টি হল সংসদে (প্রত্যেকটিতে ১৩ জন) নির্বাচিত হয়েছেন ২৩৪ জন। এর মধ্যে শনিবার দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন ২৩২ জন। বাকি দুজন তাদের দায়িত্ব বুঝে নেননি।

দায়িত্ব না নেয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে লামইয়া তানজিন তানহা বলেন, এর আগেও বলেছি নির্বাচনে কারচুপি হয়েছে। যদিও আমার হলে কারচুপি হয়নি। তবুও অন্য হলে তো হয়েছে। আমার আদর্শের জায়গায় আমি অনঢ়। তাই দায়িত্ব গ্রহণ করিনি।

তিনি বাম জোটের ডাকসুর পুনরায় নির্বাচনের দাবিকে সমর্থন করে বলেন, যেহেতু আমি প্রগতিশীল ছাত্র ঐক্যের প্যানেল থেকে নির্বাচন করেছি, আমার প্যানেলের নেতারা এখন পুনরায় নির্বাচন দেয়ার দাবিতে আন্দোলন করছেন, সে জায়গায় দাঁড়িয়ে আমার দায়িত্ব নেয়ার প্রশ্নই আসে না।

এর আগে প্রধানমন্ত্রীর চায়ের দাওয়াতে অংশ নিতে গণভবনে যাননি নব-নির্বাচিত হল সংসদের এই দুই প্রতিনিধি। সবাই গণভবনে গেলেও শুধু যাননি কবি সুফিয়া কামাল হল সংসদ থেকে সদস্য পদে নির্বাচিত লামইয়া তানজিন তানহা ও বাংলাদেশ-কুয়েত মৈত্রী হল সংসদে সদস্য পদে নির্বাচিত ফারজানা আক্তার মীম।

তানহা দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেছিলেন, আমি নিজেকে পুরো ক্যাম্পাসের প্রতিনিধি মনে করি, শুধু আমার হলের না। ক্যাম্পাসে যদি একজনের ভোটাধিকারও হরণ হয় তাহলে সেটা আমার ব্যর্থতা। তাই এ নির্বাচনকে গ্রহণ করা আমার আদর্শে পড়ে না। তিনি আরও বলেন, গণভবনে যাওয়া বর্জন করার মাধ্যমে আমি আবারও দেখাচ্ছি যে এ নির্বাচনটা কারচুপির নির্বাচন। এটা আমার কাছে প্রতিবাদের একটা অস্ত্রের মতো মনে হয়েছে।

এর আগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে কবি সুফিয়া কামাল হল সংসদে সদস্য পদে নির্বাচিত হয়েও ফলাফল প্রত্যাখ্যান করেছিলেন লামইয়া তানজিন তানহা। তিনি ঢাবির ইংরেজি বিভাগের ২০১৮-২০১৯ সেশনের শিক্ষার্থী।

তানহা ১১ মার্চ অনুষ্ঠিত ডাকসু নির্বাচনে বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন থেকে কবি সুফিয়া কামাল হল সংসদে সদস্য পদে ৮৪১ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন। কিন্তু নির্বাচনে ব্যাপক অনিয়ম ও কারচুপির অভিযোগ এনে তিনি এ ফলাফল সরাসরি প্রত্যাখ্যান করেছিলেন। প্রত্যাখ্যানের ব্যাপারে তিনি দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেছিলেন, নির্বাচন তো সুষ্ঠু হয়নি। তাই আমি এ ফলাফল প্রত্যাখ্যান করেছি।

 


সর্বশেষ সংবাদ