ভিসির গলায় সমস্যা, কথা বলতে পারবেন না: সহকারী প্রক্টর

  © টিডিসি ফটো

ডাকসু ও হল সংসদ নির্বাচনে অনিয়ম ও কারচুপির অভিযোগে ফের নির্বাচনের দাবিতে উপাচার্যের অফিসের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। উপাচার্য ড. আখতারুজ্জামানের গলায় সমস্যা হওয়ায় কথা বলতে পারছেন না বলে জানিয়েছেন সহকারী প্রক্টর আবদুর রহীম। এদিকে শিক্ষার্থীদের দাবি, ভিসি তাদের সামনে এসে কথা না বলা পর্যন্ত তারা কার্যালয় থেকে সরবেন না।

ডাকসুর জিএস প্রার্থী এ আর এম আসিফুর রহমান বলেন, ‘আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি ভিসি এসে তার বক্তব্য পরিষ্কার না করা পর্যন্ত আমরা এখান থেকে সরব না। সাধারণ শিক্ষার্থীরা এ আন্দোলনে আছেন। তাদের প্রতি দায়বদ্ধতা থেকেই আমরা এ অবস্থান নিয়েছি।’

তিনি বলেন, ‘আমাদের প্রতিনিধি ভিসির নিকট গেছে। তার প্রতিনিধিও এসে কথা বলেছেন। কিন্তু এ বিষয়ে এখনো কোন অগ্রগতি হয়নি।’ 

সকাল থেকে ভিসির কার্যালয় অবরোধ করে সেখানে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। এতে কোটা সংস্কার আন্দোলন, বাম জোট এবং স্বতন্ত্র প্যানেলের প্রার্থী ও সমর্থকরা অংশ নিয়েছেন। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাস ও পরীক্ষা বর্জন কর্মসূচিও চলছে।

বাংলাদেশ সাধারণ শিক্ষার্থী অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক রাশেদ খাঁন বলেন, ‘শিক্ষার্থীরা চাইছে ভিসি স্যার যেন তাদের সাথে এসে কথা বলেন। স্যারের উচিৎ শিক্ষার্থীদের সামনে এসে কথা বলা। এখন পর্যন্ত তিনি আসেন নাই। তিনি আসলেই তার সাথে কথা বলে শিক্ষার্থীরা চলে যাবে।’

নির্বাচন বাতিল; পুনঃতফসিল ঘোষণা; উপাচার্যের পদত্যাগ; মামলা প্রত্যাহার ও হামলাকারীদের বিচারের দাবিতে সকালে নির্বাচন বর্জনকারী প্যানেলগুলোর প্রার্থী ও সমর্থকরা সন্ত্রাসবিরোধী রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে জড়ো হন। সেখান থেকে বের করা একটি বিক্ষোভ মিছিল ক্যাম্পাসের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে ভিসির কার্যালয়ের সামনে গিয়ে শেষ হয়।

সেখানে অবস্থান কর্মসূচি পালন করতে গিয়ে স্বতন্ত্র জোট থেকে ভিপি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী অরণি সেমন্তি খান বলেন, ‘স্যার বলেছিলেন, আমাদের লিখিত অভিযোগ দিতে।আমরা দিয়েছি, কিন্তু কোনো কাজ হয়নি। আমরা তিনদিনের সময় দিয়েছিলাম, কিন্তু কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। তাই আমরা এখন ভিসি স্যারের কার্যালয়ের সামনে এসে অবস্থান নিয়েছি। স্যার আমাদের কথা শুনতে বাধ্য।’

কর্মসূচিতে প্রগতিশীল ছাত্র জোট ও সাম্রাজ্যবাদী ছাত্র ঐক্যের সম্মলিত জোটের জিএস (সাধারণ সম্পাদক) পদপ্রার্থী উম্মে হাবিবা বেনজির প্রমুখসহ শতাধিক শিক্ষার্থী অংশ নিয়েছেন।

বেনজির বলেন, ‘আমরা ডাকসু নির্বাচনকে সাধুবাদ জানিয়েছিলাম। একটি স্বচ্ছ নির্বাচন সবাই আশা করেছিলাম। পাচঁটি প্যানেলের দাবি ছিল, গেস্টরুম, গণরুমে নির্যাতন বন্ধ করতে হবে। কিন্তু কোন আশাই পূরণ হয়নি। এজন্য আজ আমাদের ঐক্যবদ্ধ হওয়ার সময় এসেছে। গণতান্ত্রিকভাবে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার সময় এসেছে।’

রবিবার বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এই কর্মসূচির ঘোষণা দেন বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ, প্রগতিশীল ছাত্রজোট ও স্বতন্ত্র প্যানেলের প্রার্থীরা।

আন্দোলনকারীরা জানান, নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আল্টিমেটাম শনিবার শেষ হয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোন ধরণের সাড়া না পাওয়ায় ফের পাঁচ দফা দাবিতে আজ ক্লাস বর্জন ও উপাচার্যের কার্যালয়ের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করবেন তারা।


সর্বশেষ সংবাদ