ফের ডাকসু নির্বাচন: অনশনকারী তিন শিক্ষার্থী মেডিকেলে ভর্তি
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ও হল সংসদের ফের নির্বাচনের দাবিতে অনশনরত তিন শিক্ষার্থী গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় রয়েছে। তারা বর্তমানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় মেডিকেল সেন্টারে ভর্তি রয়েছে। শুক্রবার বিকালে ভুখা মিছিল করার সময় তাদের অবস্থা গুরুতর হলে মেডিকেলে নিয়ে যাওয়া হয়।
মেডিকেলে ভর্তিকৃত তিন শিক্ষার্থী হলেন— মিম আরাফাত মানব, শুয়েব মাহমুদ অনন্ত, আল মাহমুদ তাহা। তাদের শরীরির অবস্থা খুবই দুর্বল হয়ে গেছে। এছাড়া ব্লাড প্রেসার খুবই কমের মধ্যে রয়েছে। বর্তমানে তাদেরকে স্যালাইন দেওয়া হয়েছে।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল অফিসার ড.জামিল আহমেদ সাহেদ দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, তারা যে অনশন করছে এটা আমাদের দেখার বিষয় নয়। আমাদের কথা হলো তাদেরকে সুস্থ করতে হবে। এইখানে যারা ভর্তি হয়েছে তাদের শরীরের অবস্থা খুবই দুর্বল। তাদের প্রেসার কম। দুজনের বুমির ভাব রয়েছে। তাদেরকে স্যালাইন দেওয়া হয়েছে। তাদের মধ্যে দুজনকে মুখে খেতে বলা হয়েছে । তাদের মধ্যে একজনের অবস্থা তুলনামূলক ভালো। এছাড়া সবাইকে সুস্থ করে তুলার চেষ্টা করা হচ্ছে।
এদিকে, অপাজেয় বাংলায় এখনও আরও চারজন অনশনরত রয়েছেন। শুক্রবার সন্ধ্যায় সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, তাদের শরীরের অবস্থা খুবই দুর্বল। তাদের শরীর মাটিতে লুটিয়ে পড়েছে। তবুও তারা অনশন ভাঙ্গছেন না। তাদের মধ্যে একজন প্রতিবন্ধী রবিউল। তিনি শুক্রবার সকালে অসুস্থ হলে মেডিকেলে নেওয়া হয়। অনশনরত অবস্থায় মেডিকেলে সামান্য চেকআপ করেই তিনি আবার অনশনে বসেছেন। রবিউলের সাথে অন্যরা হলেন— মাইন উদ্দিন, তৌহিদ তানজিম, রাফিয়া তামান্না।
এর আগে, তীব্র গরম আর রৌদ্রের মধ্যেই অনশন চালিয়ে যাচ্ছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে পরাজিত চার প্রার্থী। গত মঙ্গলবার সন্ধ্যা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে রাজু ভাস্কর্যে অনশন চালিয়ে আসা এ চার প্রার্থীর সাথে বুধবার সকালে আরও কয়েকজন যোগ দেন। আর শুক্রবার অনশনে বসলেন প্রতিবন্ধী রবিউল।
অনশনকারীরা হলেন- জগন্নাথ হল সংসদের সদস্য পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী অনিন্দ্য মন্ডল, শহীদুল্লাহ হল সংসদের সাহিত্য সম্পাদক পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী শোয়েব মাহমুদ, মুহসীন হল সংসদের সংস্কৃতি সম্পাদক পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী মো. মাঈন উদ্দিন ও কেন্দ্রীয় সংসদের ছাত্র পরিবহন পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী তাওহীদ তানজীম। এছাড়া রাফিয়া তামান্না ও আল মামুন তাহাসহ কয়েকজন পরে যোগ দেন।
আল মামুন তাহা বলেন, ‘আমাদের মধ্যে একজনের অবস্থা খুবই খারাপ। একজন ইতিমধ্যে হাসপাতালে আছে। দুজন শিক্ষক আসছিলেন। তারা আমাদের সাথে সহানুভুতি দেখিয়ে গেছেন। ছাত্রলীগ আমাদেরকে কোন হুমকি না দিলেও প্রতি রাতে তারা মোটরসাইকেলে শোডাউন দিচ্ছে।’
রাফিয়া তামান্না বলেন, ‘আমাদের শরীরের অবস্থা ভালো না। আমরা মনের জোরে বেঁচে আছি। একজনের শরীর খুবই খারাপ। আমাদের সাথে দেখা করতে প্রশাসন থেকে কেউ আসেনি। তবে দুজন শিক্ষক এসেছিলেন, তারা আমাদের বলেছেন, তোমরা তো জানোই ভিসি কেমন। তোমরা যদি অনশন চালিয়ে যাও তাহলে ক্ষতি তোমাদের এই হবে। ভিসি তার সিদ্ধান্তে অটল থাকবেন।’