মাঝরাতে অনশনরত ছাত্রীদের হেনস্তা করার অভিযোগ ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ও হল সংসদে পুনরায় নির্বাচনের দাবিতে আমরণ অনশনে বসা রোকেয়া হলের ছাত্রীদের মাঝরাতে হেনস্তা করার অভিযোগ উঠেছে ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে। অনশনরত পাঁচ ছাত্রীকে বিভিন্ন ধরণের হুমকি-ধামকি দেওয়া হয় বলে তারা জানিয়েছেন। ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক ও ডাকসুর নব নির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক (জিএস) গোলাম রাব্বানী নেতা-কর্মীদের নিয়ে তাদেরকে হুমকি-ধামকি দেন বলে জানিয়েছেন।
চার দফা দাবিতে অনশন করছেন রোকেয়া হলের পাঁচ ছাত্রী। দাবির মধ্যে রয়েছে, ডাকসু ও হল সংসদে পুনঃর্নির্বাচন, হল প্রভোস্টের পদত্যাগ, মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার ও আন্দোলনকারীদের নিরাপত্তা নিশ্তি করা। অনশনে বসা চারজন ডাকসু ও হল সংসদ নির্বাচনে বিভিন্ন পদের প্রার্থী ছিলেন।
অনশনকারী শ্রবণা শফিক দীপ্তি সাংবাদিকদেরকে বলেন, ‘রাতে গোলাম রাব্বানী নেতা-কর্মীদের নিয়ে এসে ছবি দেখিয়ে নানা ধরণের মন্তব্য করেন। এছাড়া আমাদের চিহ্নিত করে স্থায়ীভাবে বহিষ্কারের হুমকি দেন তিনি।’
আন্দোলনকারী ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, রাত দেড়টার দিকে মোটরসাইকেলে করে শতাধিক নেতা-কর্মীদের সঙ্গে নিয়ে রোকেয়া হলের সামনে আসেন গোলাম রাব্বানী। সেখানে দাড়িয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর গোলাম রাব্বানীর সঙ্গে মোবাইলে কথা বলেন। ওই ছাত্রীরা হলে বাইরে অবস্থান করে অন্য শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা বিঘ্নিত করছেন বলে অভিযোগ করেন তিনি। এসময় তাদেরকে বহিষ্কার করতে বলেন।
অনশনকারী ও অন্যরা এসময় সময় প্রভোস্টের ‘পদত্যাগ’ দাবি করে ‘রোকেয়া হলের আঙিনা, তোমার-আমার ঠিকানা’সহ বিভিন্ন স্লোগান দেন। একপর্যায়ে সেখানে রোকেয়া হলের কেন্দ্রীয়, বিশ্ববিদ্যালয় ও হল শাখার কয়েকজন নেত্রী উপস্থিত হন। তারা অভিযোগ করেন, অনশনকারীদের কারণে হলের শিক্ষার্থীরা ঘুমাতে ও পড়তে পারছে না। এ সময় ঘটনাস্থলে হলের হাউস টিউটর দিলারা জাহিদ, লোপামুদ্রা, সাদিয়া নূর খান এসে ছাত্রলীগে নেতাকর্মীদের চলে যেতে অনুরোধ করেন।
গোলাম রাব্বানীর সাংবাদিকদেরকে বলেন, ‘হলের গেট খোলা রেখে ছাত্রীদের অবস্থানের কথা শুনে অন্য শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এখানে আমি আসি। এসে দেখি, কয়েকজন মদ-গাঁজা খেয়ে এখানে আন্দোলন করছে।’ এই দশ-পনেরো জনের কারণে অন্যদের ক্ষতি হলে সে দায় নেবে কে?’ বলেও প্রশ্ন রাখেন তিনি।
তিনি বলেন, ‘এরাই ভোটের দিন ব্যালট ছিনতাই করে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ভোট দিতে দেয়নি। প্রভোস্ট ম্যামকেও লাঞ্ছিত করেছে। সবারই আন্দোলন, অনশন করার রাইট আছে। কিন্তু রাত দুইটার দিকে হলের গেট খোলা রেখে অন্যের নিরাপত্তা বিঘ্নিত করার রাইট কারও নাই।’ এসময় বোরকা পরে মুখ ঢাকা মেয়েরা এখানে কেন? এমন প্রশ্নও করেন তিনি।
পরে নেতা-কর্মীদের নিয়ে হলের সামনে থেকে চলে যান তিনি। রাতে হলের হাউজ টিউটররা জানান, ছাত্রীদের নিরাপত্তার স্বার্থে তারা সেখানে অবস্থান করছেন।