ডাকসু: অস্বচ্ছ ব্যালট বাক্সে স্বচ্ছ নিবাচন!

সিনেট ভবনের তৃতীয় তলায় ডাকসু নির্বাচনের প্রধান রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ের সামনে স্টিল শিটের তৈরি এই ব্যালট বাক্সগুলো
সিনেট ভবনের তৃতীয় তলায় ডাকসু নির্বাচনের প্রধান রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ের সামনে স্টিল শিটের তৈরি এই ব্যালট বাক্সগুলো

একদিন পর অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ও হল সংসদের নিবাচনের ভোট গ্রহণ।প্রায় ৪৩ হাজার শিক্ষার্থী এবার ভোট দেবেন। দেশের সকল নির্বাচনে স্বচ্ছ প্লাস্টিকের ব্যালট বাক্স ব্যবহার করা হলেও ডাকসু ও হল সংসদ মতো গুরুত্বপূর্ণ নির্বাচনে তার ব্যতিক্রম হতে চলেছে। তাই ভোট গ্রহণের ব্যালট বাক্স অস্বচ্ছ হওয়ার ইতোমধ্যে নতুন করে সমালোচনা শুরু হয়েছে।

এদিকে, স্বচ্ছ নির্বাচন নিয়ে যখন ঢাবির বেশিরভাগ ক্রিয়াশীল ছাত্র সংগঠন আশঙ্কা প্রকাশ করছে, তখন বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন অস্বচ্ছ ব্যালট বাক্সে নির্বাচন করার প্রায় সব আয়োজন চূড়ান্ত করে ফেলা হয়েছে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্যার এ এফ রহমান হলের প্রাধ্যক্ষ সাইফুল ইসলাম এ বিষয়ে কোন ধরণের দুশ্চিন্তা না করার জন্য সকলের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল ধরণের নির্বাচন অস্বচ্ছ ব্যালট বাক্সের মাধ্যমে অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। সুতরাং নির্বাচনে কোন ধরণের অনিয়ম হওয়ার আশঙ্কা নাই।তিনি বলেন, ‘এটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। এখানে কোন ধরণের ক্রুটিপূর্ণ নির্বাচন সম্ভব হবে না।’

ডাকসু নির্বাচন সংশ্লিষ্ট একজন শীর্ষ কর্মকর্তা বলেন, ‘দীর্ঘদিন যাবত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে নির্বাচনে স্টিলের বাক্সগুলোই ব্যবহৃত হচ্ছে। এটা নতুন কিছু নয়। ঢাবি শিক্ষক সমিতি নির্বাচন ও রেজিস্টার্ড গ্র্যাজুয়েট নির্বাচনে এই বাক্সগুলো ব্যবহার করা হয়েছে। তবে এবার ভোটার সংখ্যা বেশি হওয়ায় নতুন কিছু বাক্স তৈরি করা হয়েছে।’

বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ থেকে সাধারণ সম্পাদক (জিএস) প্রার্থী মুহাম্মদ রাশেদ খাঁন বলেন, অস্বচ্ছ ব্যালট বাক্স ব্যবহারের ব্যাপারে তারা আগে থেকে কিছুই জানতেন না। তিনি অভিযোগ করেন, ‘ক্ষমতাসীন দলের ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগকে সুবিধা করে দিতেই অস্বচ্ছ ব্যালট বাক্স ব্যবহার করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। বিষয়টি নিয়ে আগামীকাল আনুষ্ঠানিকভাবে আমরা প্রতিবাদ জানাব।’

ঢাবিতে বামপন্থী ছাত্র সংগঠনগুলোর সমন্বয়ে গঠিত প্রগতিশীল ছাত্র জোট ও সাম্রাজ্যবাদবিরোধী ছাত্র ঐক্য মনোনীত সহ-সভাপতি (ভিপি) প্রার্থী লিটন নন্দী। তিনি বলেন, ‘শুধু ব্যালট বাক্স না পুরো নির্বাচন নিয়ে অস্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় অগ্রসর হচ্ছে প্রশাসন। নির্বাচনের দিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সংবাদ সংগ্রহে আসা সাংবাদিকদের সংখ্যা সীমিত করে দেওয়া এরই একটি অংশ।’ এই অবস্থায় নির্বাচনে অনিয়ম ও ভোট কারচুপির আশঙ্কা করছেন এই ছাত্র নেতা।

তবে ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ও ডাকসু নির্বাচনে সাধারণ সম্পাদক (জিএস) পদ প্রার্থী গোলাম রাব্বানী ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এবং ডাকসু নির্বাচনে সহ-সাধারণ সম্পাদক (এজিএস) পদপার্থী সাদ্দাম হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করলেও তাদের কোন মন্তব্য পাওয়া যায়নি


সর্বশেষ সংবাদ