ডাকসু যেভাবে রাজনীতির ‘পাওয়ার হাউজ’ হয়ে উঠলো
বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে সকল আন্দোলন-সংগ্রামে প্রথম সারিতে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। আর এই নেতৃত্ব তৈরিতে ‘পাওয়ার হাউজ’ হিসেবে ভূমিকা পালন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদ; যা ডাকসু নামেই বেশি পরিচিত। ডাকসু শুধু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসের সাথেই জড়িত তা নয়, এটি জড়িয়ে আছে বাংলাদেশের সৃষ্টি ও রাজনৈতিক পরিবর্তনের ইতিহাসের সাথে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদকে বাংলাদেশের অনুসংসদ বলা হয়। যার শুরুটা হয়েছিল ডাসু নামে; যেখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জনপ্রতি এক টাকা দিয়ে সদস্য হত। ডাসু মূলত অরাজনৈতিক উদ্দেশ্য নিয়ে গঠিত হয়েছিল। বির্তক সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মতো কর্মসূচিগুলো পালন করাই ছিল এর কাজ। কালের আবর্তে ডাসু হয়ে যায় ডাকসু। বৃদ্ধি পায় এর কর্মকাণ্ডের পরিধিও। সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের পাশাপাশি শাসকগোষ্ঠীর অত্যাচার, নির্যাতন আর দুঃশাসনের বিরুদ্ধে ডাকসু থেকে আন্দোলনের ডাক আসতে থাকে। গড়ে ওঠে প্রতিবাদের পাহাড়। ৫২’র ভাষা আন্দোলন, ৫৪’র যুক্তফ্রন্ট নির্বাচন, ৬২’র স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলন, ৭১’র মুক্তিযুদ্ধ আন্দোলনসহ সকল গণতান্ত্রিক আন্দোলনে ডাকসুর নেতৃবৃন্দের অবদান রয়েছে।
সর্বশেষ স্বৈরাচার এরশাদের সরকার থাকাকালেও ডাকসু নির্বাচন হয়েছে। কিন্তু স্বৈরাচারের পতনের পর গণতন্ত্রে বিশ্বাসী বহুদলীয় শাসন প্রতিষ্ঠার পর থেকেই বন্ধ হয়ে যায় স্বাধীনতার পক্ষে, গণতন্ত্রের পক্ষে কথা বলা ডাকসু। দীর্ঘ ২৮ বছর বন্ধ থাকার পর চলতি বছর ডাকসু নির্বাচনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। দীর্ঘ সময় ধরে জরা-জীর্ণতায় ক্লিষ্ট ডাকসুর হাল ধরছেন কে— তা নিয়েও চলছে জল্পনা-কল্পনা। ডাসু থেকে ডাকসু। জেনে নেয়া যাক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদের ইতিবৃত্ত।
যেভাবে শুরু
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র সংসদের শুরু হয় প্রথম বাঙালি উপাচার্য স্যার এ. এফ. রহমানের হাত ধরে। তার উদ্যোগেই প্রত্যেক হলে ছাত্র সংসদ গঠনের ব্যবস্থা করা হয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম মুসলিম উপাচার্য স্যার এ.এফ. রহমান অক্সফোর্ডে ছাত্র থাকাকালে সেখানে স্টুডেন্ট ইউনিয়ন দেখে অনুপ্রাণিত হয়েছিলেন। তার উদ্যোগে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার শুরু থেকেই ছাত্র সংসদ গঠিত হয়। প্রথমে হল ছাত্র সংসদ গড়ে তোলা হয়।
হল ছাত্র সংসদের সাফল্যের পর ১৯২২-২৩ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদ বা ‘ডাসু’ গঠিত হয়। সে সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিটি ছাত্র এক টাকা চাঁদা দিয়ে এর সদস্য হতেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের ঢাকা হল, সলিমুল্লাহ মুসলিম হল এবং জগন্নাথ হলের প্রতিটি হল থেকে একজন করে শিক্ষক ও ছাত্র প্রতিনিধি এবং উপাচার্য মনোনীত একজন শিক্ষক নিয়ে এ সংসদ গঠনের ব্যবস্থা করা হয়। ডাসুর প্রথম সভাপতি ছিলেন উপাচার্য ডব্লিউ. এ. জোনকিন্স। প্রথম সহ-সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক হিসেবে মনোনীত হন মমতাজ উদ্দিন আহমেদ ও যোগেন্দ্রনাথ সেনগুপ্ত।
গঠনতন্ত্র প্রণয়ন ও পরিবর্তন
১৯২৫ সালের ৩০ অক্টোবর সংসদের সাধারণ সভায় খসড়া গঠনতন্ত্র অনুমোদন করা হয়। পরবর্তীতে বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্বাহী পরিষদ অনুমোদন করলে গঠনতন্ত্রটি কার্যকর হয়। এতে ছাত্র প্রতিনিধি ও মনোনীত শিক্ষক প্রতিনিধি সমন্বয়ে গঠিত পরিষদ কর্তৃক কর্মকর্তা নির্বাচনের ব্যবস্থা রাখা হয়। তবে সে সময় সহ-সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক ছাত্র প্রতিনিধির মধ্যে থেকেই নির্বাচন করা হত। এ সময়ে ছাত্র সংসদের কার্যক্রম শুধু সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডের মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল। তখন এ ছাত্র সংসদ সাধারণ মিলনায়তন পরিচালনা, বির্তক সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করতো।
১৯৩৯ সালে গঠনতন্ত্র সংশোধন করা হয়। এতে বলা হয়, মুসলমান হল থেকে সহ-সভাপতি হলে হিন্দু হল থেকে সাধারণ সম্পাদক কিংবা হিন্দু হল থেকে সহ-সভাপতি হলে মুসলমান হল থেকে সাধারণ সম্পাদক হবে। সাম্প্রদায়িক প্রভাবের কারণে এই সংশোধন করা হয়। আর গঠনতন্ত্রে এই সংশোধনের মধ্য দিয়ে সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষের উপশম হয়।
১৯৪৪-৪৫ সালে বিশ্ব নির্বাহী পরিষদ আরেকটি সংশোধন অনুমোদন করে। চারটি হলের প্রতিটি থেকে চারজন করে ষোল জন এবং মেয়েদের মধ্য থেকে একজন ছাত্রী প্রতিনিধি ছাত্র-ছাত্রীরা সংসদের জন্য নির্বাচন করতে পারত। এ ১৭ জনের পরিষদ থেকে একজন ভিপি ও একজন জিএস নির্বাচিত হত। ১৯৫৩ সালে পুনরায় গঠনতন্ত্রে সংশোধন করা হয়।
১৯৯১ সালের ১৭ জুন সিন্ডিকেটের সভায় একটি সংশোধনী আনা হয়। এতে বলা হয়, বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক, স্নাতকোত্তর বা প্রিলিমিনারি, ইন্ডাস্ট্রিয়াল আর্টসের ডিগ্রি পাস কোর্স, বিএফএ, বিবিএ, ডিপ্লোমা, পরিসংখ্যান ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের সিনিয়র সার্টিফিকেট কোর্সের শিক্ষার্থীরা ভোটার হতে পারবেন। কিন্তু এদের মধ্যে যারা কোনো কোর্সে শিক্ষাবিরতি দিয়ে পুনঃভর্তি হয়েছেন বা ফি দেওয়ার সময় অতিবাহিত হয়ে গেছে; তারা সে সুযোগ পাবেন না। ১৯৯৮ সালে সর্বশেষ ডাকসু গঠনতন্ত্রের সংশোধন করা হয়েছিল।
ডাসু থেকে ডাকসু
১৯৫৩ সালে ছাত্র সংসদের গঠনতন্ত্র সংশোধন করে এর নাম ডাসু পরিবর্তন তরে রাখা হয় ডাকসু। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচাযর্কে সভাপতি এবং ১৬ জন ছাত্র প্রতিনিধি থেকে ১০ জন কর্মকর্তা নির্বাচনের ব্যবস্থা রাখা হয়। কোষাধ্যক্ষ থাকতেন একজন শিক্ষক। ১৯৭০ সালে ডাকসুতে পরোক্ষ নির্বাচনের বদলে প্রত্যক্ষ নির্বাচন পদ্ধতি চালু হয়। এতে প্রথম সহ-সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন এসএ রারী এটি ও জুলমত আলী খান।
এরপর ভিপি ও জিএস নির্বাচিতদের মধ্যে যথাক্রমে রয়েছেন নিরোদ বিহারী নাগ ও আব্দুর রব চৌধুরী, একরামুল হক ও শাহ আলী হোসেন, বদরুল আলম ও মো. ফজলী হোসেন, আবুল হোসেন ও এটিএম মেহেদী, আমিনুল ইসলাম তুলা ও আশরাফ উদ্দিন মকবুল, বেগম জাহানারা আখতার ও অমূল্য কুমার, এস এম রফিকুল হক ও এনায়েতুর রহমান, শ্যামা প্রসাদ ঘোষ ও কে এম ওবায়েদুর রহমান, রাশেদ খান মেনন ও মতিয়া চৌধুরী, বোরহান উদ্দিন ও আসাফুদ্দৌলা, ফেরদৌস আহমেদ কোরেশী ও শফি আহমেদ, মাহফুজা খানম ও মোরশেদ আলী, তোফায়েল আহমেদ ও নাজিম কামরান চৌধুরী, আসম আব্দুর রব ও আব্দুল কুদ্দুস মাখন।
স্বাধীনতা পরবর্তী বাংলাদেশে ডাকসু
১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে ডাকসু এক গৌরবোজ্বল ভূমিকা পালন করে। ডাকসুর নেতাদের সাহসী ও বলিষ্ঠ উদ্যোগে ১৯৭১ সালের ২ মার্চ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ঐতিহাসিক বটতলায় প্রথম স্বাধীন বাংলার পতাকা উত্তোলন করা হয়। বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর মোট ৭ বার ডাকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। ১৯৭২ সালে ডাকসুর ভিপি হিসেবে নির্বাচিত হন বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন থেকে মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম এবং জিএস নির্বাচিত হন মাহবুব জামান। ১৯৭৯, ১৯৮০ ও ১৯৮২ সালে ডাকসু নির্বাচন হয়েছিল। প্রথম দুই নির্বাচনে যথাক্রমে জাসদ-ছাত্রলীগের এবং বাসদ-ছাত্রলীগের প্রার্থী হয়ে সহ-সভাপতি (ভিপি) ও সাধারণ সম্পাদক (জিএস) পদে জিতেছিলেন মাহমুদুর রহমান মান্না ও আখতারুজ্জামান।
১৯৮২ সালের নির্বাচনে জয়ী হয়ে ১৯৮৯ পর্যন্ত ভিপি ও জিএস পদে যথাক্রমে দায়িত্ব পালন করেন আখতারুজ্জামান ও জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু। ১৯৮৯-৯০ সেশনে ছাত্রলীগ থেকে ভিপি’র দায়িত্ব পালন করেন সুলতান মোহাম্মদ মনসুর আহমেদ। অন্যদিকে সাধারণ সম্পাদক পদ পান মুশতাক আহমেদ। সর্বশেষ ১৯৯০-৯১ সেশনের জন্য ভিপি ও জিএস পদে যথাক্রমে নির্বাচিত হন ছাত্রদলের আমানউল্লাহ আমান ও খায়রুল কবির খোকন।
তিন দশক ধরে নির্বাচন হয়নি যে কারণে
১৯৯০ সালের ৬ জুন ডাকসু নির্বাচনের পর ১৯৯১ সালের ১২ জুন বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীণ উপাচার্য অধ্যাপক মনিরুজ্জামান মিঞা ডাকসু নির্বাচনের তফসিল ঘোষনা করেছিলেন। ওই সময় কিছু সংখ্যক ছাত্রনেতা তাদের ছাত্রত্ব বজায় রাখার জন্য বিশেষ ভর্তির দাবি জানান। এ নিয়ে উদ্ভূত সহিংসতায় ডাকসু নির্বাচন ভন্ডুল হয়ে যায়। এরপর ১৯৯৪ সালে ভিসি অধ্যাপক ড. এমাজউদ্দিন আহমদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষনা করেছিলেন। কিন্তু ডাকসু নির্বাচনের পরিবেশ না থাকার অভিযোগ আনে ছাত্রলীগ। ফলে ডাকসু নির্বাচন স্থগিত হয় । ১৯৯৫ সালে আবার নির্বাচনের তফসিল ঘোষিত হলেও নির্বাচন হয় নি। তারপর ১৯৯৬ সালের অক্টোবরে অধ্যাপক এ কে আজাদ চৌধুরী ভিসির দায়িত্ব নেয়ার পর অন্তত ছয়বার ডাকসু নির্বাচনের নির্দিষ্ট সময়সীমা গণমাধ্যমকে জানানো হয়েছিল। কিন্তু ওপর মহলের এবং বিরোধী ছাত্রসংগঠন ছাত্রদলের বাধায় তিনি ডাকসু নির্বাচনের তফসিল ঘোষনা করতে ব্যর্থ হন।
১৯৯৭ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান হলে অভ্যন্তরীন কোন্দলে ছাত্রদলের নেতা আরিফ হোসেন তাজ খুন হন। এ ঘটনা তদন্তের জন্য গঠিত তদন্ত কমিটি তাদের সুপারিশে ডাকসু ভেঙে দিয়ে ছয় মাসের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠানের কথা বলে। ১৯৯৭ এর ২৭ মে সিন্ডিকেটের সভায় ডাকসু ভেঙে দেয়া হলেও নির্বাচন আর দেয়া হয়নি। ডাকসুর জন্য গঠিত নতুন (সংশোধিত) গঠনতন্ত্রে ডাকসু ভাঙার চার সাসের মধ্যে আবার নির্বাচন দেয়ার কথা বলা হয়েছে। সে অনুযায়ী ১৯৯৮ সালের ২৭ সেপ্টেম্বরের আগেই ডাকসু নির্বাচন হওয়ার কথা। কিন্তু এ পর্যন্ত তা হয়নি। তারপর ২০০৫ সালের মে মাস ভিসি হিসেবে দায়িত্ব নেন অধ্যাপক ড এস এম এ ফয়েজ। ওই বছর ডিসেম্বরেই ডাকসু নির্বাচন দেয়ার কথা বলেন তিনি। কিন্তু তৎকালীন বিরোধী ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগের বিরোধিতার কারণে সে নির্বাচন হয়নি।
১৯৯১ সালে বিএনপি সরকার ক্ষমতায় গেলে ছাত্রলীগ ডাকসু নির্বাচনের বিরোধিতা করে। এরপর ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় গেলে ছাত্রদলও ডাকসু নির্বাচনের বিরোধিতা করে। এভাবে কর্তৃপক্ষ ও ছাত্রসংগঠনগুলোর পরস্পর বিরোধী অবস্থানের ফলে ডাকসু নির্বাচনের সুফল থেকে বঞ্চিত সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
নির্বাচন না হলেও চাঁদা দেয় শিক্ষার্থীরা
নির্বাচন না হলেও প্রতি বছর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাজেটে ডাকসু নির্বাচনের জন্য অর্থ বরাদ্দ রাখা হয়। প্রতি বছর ভর্তির সময় ছাত্রছাত্রীদের কাছ থেকেও ডাকসুর জন্য চাঁদা নেয়া হয়। বিশ্ববিদ্যালয় প্রতি বছর ডাকসুর জন্য যে বাজেট দেয় তার পরিমান হচ্ছে- ২০০৪-০৫ অর্থবছরে ৭০ হাজার টাকা, ২০০৫-০৬ অর্থবছরে ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা, ২০০৬-০৭ অর্থবছরে ৬ লাখ টাকা,২০০৭-০৮ অর্থবছরে ১০ লাখ টাকা, ২০০৮-০৯ অর্থবছরে ১০ লাখ টাকা সংশোধিত ৬ লাখ ৬৪ হাজার টাকা, ২০০৯-১০ অর্থ বছরে সংশোধিত ৬ লাখ ৮৬ হাজার টাকা, ২০১০-১১ অর্থবছরে সংশোধিত ৭ লাখ ৬৭ হাজার টাকা, ২০১১-১২ অর্থবছরে প্রায় ৮ লাখ টাকা।
ডাকসু ভবন
ডাকসু প্রতিষ্ঠার শুরুতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল সংলগ্ন পুরাতন কলা ভবনে ডাকসু অফিসের কার্যক্রম চালানো হত। ১৯৬২ সালে নীলক্ষেত সংলগ্ন কলাভবনের শিক্ষা কার্যক্রম শুরু হলে ডাকসু অফিস কলা ভবনের পূর্বদিকের নিচতলায় স্থানান্তর করা হয়। ১৯৮০ সালে কলাভবনের পূর্ব-দক্ষিণের কোনে ডাকসুর অফিস কার্যক্রম শুরু হয়। ১৯৮২ সালে আলাদা ডাকসু ভবন নির্মাণ করা হয়। তখন থেকে বর্তমান মধুর ক্যান্টিনের সামনে ডাকসুর নিজস্ব ভবনে ডাকসুর দাপ্তরিক কার্যক্রম শুরু হয়।
মহন্দ্রক্ষণ আসতে মাত্র দু’দিন
উচ্চ আদালতের আদেশের প্রেক্ষিতে দীর্ঘ ২৮ বছর অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ডাকসু নির্বাচন। তথ্যমতে, ডাকসু ও ও হল সংসদ নির্বাচনে মোট ভোটার সংখ্যা ৪২ হাজার ৯২৩টি। আগামী ১১ মার্চ সকাল ৮টা হতে থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত ডাকসু ও হল সংসদ নির্বাচনের একটানা ভোট গ্রহণ হবে। ১৮টি হলে সংশ্লিষ্ট শিক্ষার্থীরা তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন। অন্যদিকে ডাকসুর ২৫টি পদে ১২টি প্যানেল থেকে ও স্বতন্ত্র মিলিয়ে মোট ২২৯ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এর মধ্যে ভিপি (সহ-সভাপতি) প্রার্থী ২১ জন এবং জিএস (সাধারণ সম্পাদক) প্রার্থী ১৪ জন। এর সঙ্গে ১৮টি হল সংসদে ১৩টি পদে মোট ২৩৪টি পদে প্রার্থী ৫০৯ জন।
সময় মাত্র দুই দিন। এখন দেখার বিষয় ডাকসু নির্বাচনের মূল আনুষ্ঠানিকতাটি কীভবে সম্পন্ন হয়?