০৭ মার্চ ২০১৯, ০২:০৫

লড়াই জমবে শোভন-নুর-নন্দী ও মোস্তাফিজে

আলোচনায় চার প্রার্থী

আর মাত্র ৩ দিন। এরপরই বহুল কাঙ্ক্ষিত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচন। নির্বাচনকে সামনে গোটা ক্যাম্পাস এখন সরগরম। বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে নিজেদের পরিকল্পনা তুলে ধরছেন সবাই। ভোট চাইছেন ক্যাম্পাস ও হলসহ সর্বত্র। তথ্যমতে, নির্বাচনের কেন্দ্রীয় সংসদে সহ-সভাপতি (ভিপি) পদে মোট ২১ প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে। ৪৩ হাজার শিক্ষার্থীর প্রতিনিধি হতে সবাই চেষ্টা করলেও প্রতিযোগিতা মূলত রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন, লিটন নন্দী, নুরুল হক নুর ও মোস্তাফিজুর রহমানের মধ্য হবে। নির্বাচন সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো থেকে এমন তথ্যই পাওয়া গেছে।

সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, বর্তমান ক্যাম্পাসে এক আধিপত্য রয়েছে ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দলের ভাতৃপ্রতিম সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের। বাংলাদেশ অওয়ামী লীগের ছাত্র সংগঠন হওয়ায় সরকারের উন্নয়নকে সামনে রেখে ভোট চাইছেন তারা। তারা বলছেন, বর্তমান কমিটির নেতারা ছাত্রবান্ধব। তাই ভোটের ক্ষেত্রে অনেক দিক থেকেই তারা এগিয়ে রয়েছেন।

ছাত্রলীগের পরেই আলোচনায় আছেন কোটা সংস্কার আন্দোলনের প্লাটফর্ম ‘বাংলাদেশ সাধারণ শিক্ষার্থী অধিকার পরিষদের ভিপি পদপ্রার্থী নুরুল হক নুর। অন্যান্য ছাত্র সংগঠনগুলোর তুলনায় তাদের প্যানেলের বয়স খুবই নগন্য কিন্তু ক্যাম্পাস ও সারা দেশে গত বছরে কোটা সংস্কারকে নিয়ে যে বিশাল অান্দোলন হয়েছে সেই অান্দোলনের নেতৃত্বে থাকায় তারা ব্যাপক পরিচিতি লাভ করেছে। তবে মূল ছাত্র সংগঠনগুলোর সঙ্গে জোট গড়তে না পারায় ও হলগুলোতে সমর্থকদের প্রার্থী করতে না পারায় জনসমর্থন থাকলেও অপেক্ষাকৃত দুর্বল প্রার্থী তিনি।

জনপ্রিয়তার অন্যতম শীর্ষের আছেন ক্যাম্পাসের অন্যতম পরিচিত মুখ ছাত্র ইউনিয়ন নেতা লিটন নন্দী। প্রগতিশীল ছাত্র সংগঠন ও সাম্রাজ্যবাদী ছাত্র ঐক্যের প্যানেলে সহ সভাপতি মনোনিত হওয়ায় বাম ছাত্র সংগঠনের ব্যাপক জনশক্তি ও জনপ্রিয়তা লাভ করছে। তাছাড়া তিনি অান্দোলনে ব্যাপক অগ্রনী ভুমিকা পালন করেছেন।

আলোচনায় আছেন ছাত্রদলের ভিপি প্রার্থী মোস্তাফিজুর রহমানও। বিগত দশ বছর ক্যাম্পাসে নেই সংগঠনটি। যে কারণে তাদের জনপ্রিয়তা কমছে। তবে জাতীয় ইস্যুর কারণে অনেকের চেয়ে এগিয়ে রয়েছে তার প্যানেল । ২০১৫ সালের পহেলা বৈশাখে নিপীড়কদের হাত থেকে নারীদের রক্ষা করতে গিয়ে হাত ভাঙে তার। আন্দোলন করতে গিয়ে জেলেও গেছেন তিনি। ভোটে বাম ছাত্র সংগঠনগুলো নিয়ে জোট গড়ে অনেকটাই ভালো অবস্থায় আছেন তিনি।

সাবেক ছাত্রনেতা এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের সংখ্যাতিরিক্ত অধ্যাপক আবুল কাসেম ফজলুল হক বলেন, ব্যক্তিগত ইমেজ বা কারিশমায় এ নির্বাচনে জয় ছিনিয়ে আনা কঠিন। কেননা এ জন্য কেউ পর্যাপ্ত সময় পায়নি। তবে ব্যক্তিগতভাবে কারো যদি সেই সাংগঠনিক ও বিশ্লেষনী ক্ষমতা থাকে এবং পরিচ্ছন্ন ব্যক্তিত্ব হিসেবে পরিচিতি পান; তবে তিনি বা তারা জয় পেতে পারেন।

এছাড়াও বিদ্যমান পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, আগামী ১১ মার্চ অনুষ্ঠেয় ডাকসু ও হল সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হলে কোন একটি পক্ষ বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাবে না। ভিপি পদে ছাত্রলীগ কিংবা কোটা সংস্কারকারীদের প্রার্থীদের একজন, জিএস পদে ছাত্রলীগ অথবা ছাত্রদল বা স্বতন্ত্র প্রার্থীদের একজন এবং এজিএস পদে ছাত্রলীগ বা ছাত্রদলের প্রার্থীদের মধ্যে একজন নির্বাচিত হতে পারেন।