০৪ মার্চ ২০১৯, ১৯:৫৯

ঢাবিতে দুই দর্শনার্থীকে জিম্মি করে ছাত্রলীগের চাঁদাবাজি

  © লোগো

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বেড়াতে আসা দুই শিক্ষার্থীকে জিম্মি করে টাকা আদায় ও তাদের মোবাইল ফোন ছিনতাইয়ের অভিযোগ উঠেছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগকর্মী এই ঘটনার সাথে জড়িত উল্লেখ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর বরাবর একটি লিখিত অভিযোগও দিয়েছেন ভুক্তভোগীরা। বিষয়টি নিয়ে শাহবাগ থানায় একটি জিডি করার প্রস্তুতি চলছে।

ভুক্তভোগীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ঢাকা কলেজের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী সোহাগ সরকার তার বান্ধবী মায়িদা সুলতানাকে নিয়ে রবিবার বেলা ১২টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বেড়াতে আসেন। এরপর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে হাটাহাটি করার সময় হঠাৎ একটি মোটরসাইকেল তাদের পিছন থেকে এসে কারণ ছাড়াই ব্রেক করে পড়ে যায়। এ সময় বাইকে থাকা জুবায়ের আহমেদ নামে এক ঢাবি শিক্ষার্থী সামান্য ব্যাথা পায় এবং দাবি করে তাদের বাইক সামান্য ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

এরপর সোহাগ জুবায়েরকে উঠাতে গেলে সে তাকে ঘুষি মারে এবং তার কাছে টাকা দাবি করে। কিন্তু ভুক্তভোগী টাকা দিতে অস্বীকার করলে বিভিন্ন হল থেকে আরও ১০-১২ জন এসে জুবায়েরের সঙ্গে যোগ দিয়ে তাকে মারধর শুরু করে। তারা সোহাগ সরকারের কাছ থেকে তার আপন বড় ভাইয়ের নম্বর নিয়ে ০১৭৪১০৮৫*** ও ০১৮৬৬৪০৭*** নম্বর থেকে কল করে ১০ হাজার টাকা দাবি করে। টাকা দাবি করা প্রথম ফোন নম্বরটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজ বিজ্ঞান বিভাগের ২০১৭-১৮ সেশনের শিক্ষার্থী ও স্যার এফ রহমান হল শাখা ছাত্রলীগের কর্মী জুবায়ের আহমেদের বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে। সে হল শাখা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সালাদ্দিন সাজুর অনুসারী। আর সাজু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেনের অনুসারী। এরপর জুবায়ের সোহাগ সরকারের কাছে থাকা এক হাজার টাকা ও তার মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেয়।

সোহাগ সরকারের বড় ভাই সহকারী প্রক্টর মঈন উদ্দিনের সঙ্গে যোগাযোগ করে প্রক্টরিয়াল টিম পাঠান। কিন্তু জুবায়ের আহমেদ ভুক্তভোগীদের উদ্যান থেকে সরিয়ে ঢাবি মেডিকেল সেন্টার ও মুহসীন হলের গেস্টরুমে পাঁচ ঘন্টা জিম্মি করে রাখেন। পরে সোহাগের বড় ভাই ১০ হাজার টাকা পাঠালে ওইদিন সন্ধ্যা ৬টার দিকে সোহাগ ও তার বান্ধবীকে ছেড়ে দেয় জুবায়ের।

ঘটনার বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত জুবায়ের আহমেদকে ফোন দেওয়া হলে তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।

এ বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক গোলাম রব্বানী বলেন, অভিযোগকারীরা এই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী নয়। তারা লিখিত অভিযোগ দিয়েছে। আমি তাদেরকে থানায় একটি জিডি করতে বলেছি। থানা থেকে অভিযুক্তদের নাম আসলে আমরা ব্যবস্থা নিব। এ বিষয়ে কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না বলেও জানান ওই ঢাবি প্রক্টর।