২১ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ১৩:১৭

চকের আগুনে পুড়ে ছাই ঢাবি ছাত্র কাওসার

নিহত কাওসার আহমেদ

চকবাজারের অগ্নিকান্ডে কাওসার আহমেদ নামে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) এক ছাত্র নিহত হয়েছেন। নিহত কাওসার আহমেদ সূর্যসেন হলের ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের ২০১৩-২০১৪ বর্ষের ছাত্র। নিহতের বাড়ি কুমিল্লায় বলে জানা গেছে। কাওসারের মৃত্যুতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শোক নেমে এসেছে। তাঁর সহপাঠী ও বন্ধুবান্ধবদের মাধ্যমে জানা যায়, তিনি পবিত্র কোরআনে হাফেজ ছিলেন।

নিহত ঢাবি শিক্ষার্থী হাফেজ মো. কাওসার আহমেদের রয়েছে দুটি ফুটফুটে যমজ ছেলে-মেয়ে। ঘটনার খবর শুনেই মর্গে ছুটে আসেন কাওসারের দুই ভাই, মা ও স্ত্রী মুক্তা। তাদের কোলে রয়েছে ছোট্ট ফুটফুটে দুই শিশু। তারা কাওসারের যমজ ছেলে-মেয়ে। স্বজনরা ওদের মুখের দিকে তাকাতে পারছেন না। অবিরাম চোখ বেয়ে ঝরছে পানি। তাদের কান্না দেখে অবুঝ শিশু দুটিও কান্না করছেন অনবরত।

কাওসারের জমজ দুই শিশু

 

পেশায় দাঁতের চিকিৎসক ইলিয়াস বলেন, ‘আমি, ইয়ামীন, ফয়সাল, কাওসার, আমরা চার ভাই। কাওসার মাদ্রাসায় পড়াশোনা করেন। পরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন।’ পার্টনারশিপে ক্লিনিকের ব্যবসা শুরু করেন কাওসার। বাবার নাম খলিলুর রহমান। কুমিল্লায় বাড়ি। সবাই থাকতেন চকবাজারে।

ইলিয়াস বলেন, আগুনের সময় ক্লিনিকের ভবনের গেট বন্ধ ছিল। খোলা থাকলে হয়তো ভাইকে পেতেন। ওই ক্লিনিকে কাওসারের সঙ্গে ছিলেন তিন দাঁতের চিকিৎসক ও এক রোগী। এর মধ্যে ইমতিয়াজ ও আশরাফুল নামের দুই চিকিৎসক অন্য চিকিৎসকের অধীনে প্রশিক্ষণ নিচ্ছিলেন।

কাওসারের স্বজনদের মতো হাজারো মানুষের বিলাপে ও কান্নায় ভারী হয়ে গেছে ঢাকা মেডিকেল কলেজের মর্গ। স্বজন হারানোর বেদনা যেমন রয়েছে, তেমনি লাশগুলো দ্রুত চাইছেন তাঁরা।

কাওসারের পরিবারের সাথে কথা বলে জানা যায়, কাওসার নিজের পড়াশোনার খরচ নিজেই চালাতো। চার ভাইয়ের মধ্যে কাওসার ছিল সব থেকে বেশি মেধাবী। তাঁর স্বপ্ন ছিল বড় ব্যাংকার হবে।  চতুর্থ বর্ষের শেষ সেমিস্টারে ব্যাংকের জন্য ইন্টার্নিও শেষ করেছিল সে।

ফেসবুকে শাফায়াত হোসাইন নামে তাঁর এক বন্ধু লিখেছেন, মেনে নিতে খুব কষ্ট হচ্ছে। একই এলাকার, একই ডিপার্টমেন্টের। কিছুতেই মেনে নিতে পারছি না। সহপাঠীরা আরো জানান, গতকালকেও তিনি পাঞ্জাবী পরে পরীক্ষা দিতে এসেছিলেন।

প্রসঙ্গত, রাজধানীর চকবাজারের চুড়িহাট্টা শাহী মসজিদের পেছনের ভবনগুলোতে লাগা ভয়াবহ আগুনে দগ্ধ এখন পর্যন্ত অন্তত ৭০ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এর মধ্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া মরদেহের মধ্যে ৪৮ পুরুষ ৫ জন নারী ও ২ জন শিশু রয়েছে।