হুইল চেয়ারে প্রথম ক্লাস করলেন হৃদয় সরকার

হৃদয় সরকার
হৃদয় সরকার

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) মায়ের কোলে চড়ে পরীক্ষা হলে গিয়ে ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষে ‘খ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা দিতে এসে আলোচিত হয়েছিলেন হৃদয় সরকার। রবিবার হুইল চেয়ারে বসে বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের প্রথম ক্লাস করলেন তিনি। ক্লাস শেষে সহপাঠীদের সঙ্গে আড্ডা দিতে এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের হাকিম চত্ত্বর, ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রসহ (টিএসসি) বিভিন্ন স্থানে হৃদয় সরকারকে হুইল চেয়ারে চড়ে ঘুরতে দেখা যায়।

এর আগে মায়ের কোলে চড়ে পরীক্ষা হলে যাওয়ার দৃশ্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হলে তাকে নিয়ে বেশ কয়েকটি গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়। ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলেও মেধাক্রমের কারণে তার ভর্তি নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়। পরে বিভিন্ন গণমাধ্যমে পুনরায় আলোচিত হলে প্রতিবন্ধি কোটার নিয়ম পরিবর্তন করলে তার পছন্দের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগে ভর্তির সুযোগ হয়।

মায়ের কোলে চড়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা দিতে এসেছিলেন হৃদয় সরকার- ফাইল ছবি
প্রথম ক্লাসের অনুভূতি জানিয়ে হৃদয় সরকার বলেন, আজকে আমার বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম ক্লাস ছিল। আমার বন্ধুরা আমাকে খুব ভালভাবে গ্রহণ করেছে। ক্লাস শেষে বন্ধুদের সাথে টিএসসি, হাকিম চত্বর এলাকা ঘুরেছি। তারা আমাকে অনেক সহায়তা করেছে।

তিনি বলেন, এত আনন্দ লাগছে যে, ভাষায় প্রকাশ করার মতো না। বলতে পারি, আমাকে নিয়ে আমার মায়ের সকল পরিশ্রম অবশেষে স্বার্থক হয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম বন্ধুর নাম জানতে চাইলে হৃদয় বলেন, আমি কোনো বন্ধুর নাম বলতে চাই না। কারণ কয়েক জনের নাম বললে অন্যরা মনে কষ্ট পাবে। সবাই আমার বন্ধু।

তবে হৃদয় সরকারের এতো আনন্দের আড়ালে লুকিয়ে আছে অনেক চ্যালেঞ্জ ও প্রতিবন্ধকতার গল্প। ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েও প্রথমে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মের কাছে হেরে যেতে বসেছিলেন তিনি। তখন বিশ্ববিদ্যালয়ে শুধু দৃষ্টি, শ্রবণ এবং বাক প্রতিবন্ধিদের কোটায় ভর্তির বিধান ছিলো। পরে যখন বিভিন্ন গণমাধ্যমে হৃদয় সরকারের বিষয়টি আলোচনায় আসে, তখন বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মের মধ্যে অন্য প্রতিবন্ধিদের ভর্তির বিষয়টিও আনা হয়।

এই সুযোগে হৃদয় সরকার বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে পেরেছেন- তাও আবার পছন্দের শীর্ষে থাকা আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগে। আর তার এই সফলতা তথা সমগ্র শিক্ষা জীবনের অগ্রগতিতে তার মা সীমা রাণী সরকারের ভূমিকা ছিল সবচেয়ে বেশি।

গীমা রাণী সরকার বলেন, আমার সারা জীবনের পরিশ্রম স্বার্থক হয়েছে। আমার ছেলের স্বপ্ন ছিলো সে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়বে। আজকে তার স্বপ্ন বাস্তবে পরিণত হলো। এতে আমি খুব খুশি। এসময় তার ছেলের জন্য সকলের কাছে দোয়া কামনা করেন তিনি।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence