দৃষ্টি প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের বিতর্ক প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন ঢাবি
দেশে প্রথমবারের মতো দৃষ্টি প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে আয়োজিত জাতীয় বিতর্ক প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন হয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। এ ছাড়া রানার আপ হয় ইডেন মহিলা কলেজ এবং তৃতীয় স্থান অধিকার করেছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়।
রাজধানীর চলচিত্র উন্নয়ন কর্পোরেশন (এফডিসি)-তে অনুষ্ঠিত এই প্রতিযোগিতার আয়োজন করে ‘ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি’ নামের একটি সংগঠন।
প্রতিযোগিতা শেষে চ্যাম্পিয়ন, রানার আপ ও তৃতীয় স্থান অধিকারী দলকে যথাক্রমে নগদ ২ লক্ষ, ১ লক্ষ ও ৫০ হাজার টাকাসহ ক্রেস্ট, সার্টিফিকেট ও ট্রফি প্রদান করা হয়। গ্র্যান্ড ফাইনালে বিচারক ছিলেন অধ্যাপক আবু মোহাম্মদ রইস, ড. এস এম মোর্শেদ, ড. তাজুল ইসলাম চৌধুরী তুহিন, নাজমা আরা বেগম পপি ও সাইফুল ইসলাম খান।
অনুষ্ঠানে প্রতিবন্ধী জনগোষ্ঠীর জন্য প্রতি বছর মোট বাজেটের ৪-৫% বরাদ্দ, সরকারি চাকুরীতে প্রতিবন্ধীদের জন্য কমপক্ষে ৩% কোটাসংরক্ষণ, জাতীয় সংসদে প্রতিবন্ধীদের প্রতিনিধি হিসেবে ২-৩টি সংরক্ষিত আসন বরাদ্দ, দুঃস্থ প্রতিবন্ধীদের ভাতা বৃদ্ধি, স্বাস্থ্য-শিক্ষা, চিত্তবিনোদন, সর্বস্তরে প্রবেশগম্যতা নিশ্চিত করাসহ ১০ দফা দাবি তুলে ধরে আয়োজক সংগঠনটি।
প্রতিযোগিতায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য প্রধান করেন দুর্নীতি দমন কমিশনের কমিশনার ড. মো. মোজাম্মেল হক খান। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য প্রদান করেন বিশিষ্ট সঙ্গীত শিল্পী মমতাজ বেগম এমপি। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান জনাব হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে দুর্নীতি দমন কমিশনের কমিশনার ড. মো. মোজাম্মেল হক খান বলেন, দেশের ১৬ মিলিয়ন প্রতিবন্ধী মানুষকে অবশ্যই উন্নয়নের মূল ধারায় যুক্ত করতে হবে। এই জনগোষ্ঠীর উন্নয়নের কৌশলগুলো চিহ্নিত করে তাদের ইচ্ছে ও কর্মশক্তিকে বাড়াতে হবে। এতে করে তারা আরো কাজ করতে উৎসাহী হবে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সংগীত শিল্পী মমতাজ বেগম এমপি বলেন, বর্তমান সরকার প্রতিবন্ধীদের উন্নয়নে অনেক পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। এসব পদক্ষেপ আগে গ্রহণ করা হলে এখন সমস্যায় পড়তে হতো না, ৪৭ বছরে আমরা অনেক এগিয়ে যেতাম।
ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ বলেন, পিছিয়ে পড়া প্রতিবন্ধী জনগোষ্ঠীর সাংবিধানিক অধিকার বাস্তবায়নসহ তাদের মূল ধারায় সম্পৃক্ত করতে সরকারের প্রচেষ্টা থাকলেও তা পর্যাপ্ত নয়। ২০০৮ সালের সরকার মহানগর ইমারত বিধিমালায় প্রতিবন্ধীদের জন্য আলাদা পার্কিং, টয়লেট, র্যাম্প তৈরির কথা উল্লেখ করলেও এখনও তা বাস্তবায়ন হচ্ছে না। ২০১৩ সালের প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের অধিকার ও সুরক্ষা আইনে ভাতা প্রদান, শিক্ষা গ্রহণ ও চিকিৎসা সেবাসহ নানা অধিকারের কথা বলা থাকলেও তারও দৃশ্যমান অগ্রগতি নেই।
উল্লেখ্য দৃষ্টি প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে প্রথমবারের মত এই প্রতিযোগিতায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, চট্রগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, বেগম বদরুন্নেসা মহিলা কলেজ, ইডেন মহিলা কলেজসহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বিতার্কিকরা অংশগ্রহণ করেছে।