‘তুই রফিকের লাগি গলায় দড়ি দিলাম’
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার ফয়সাল আহমেদ সৌরভ (৩০) নামের এক যুবক। বৃহস্পতিবার (১৯ আগস্ট) রাত আনুমানিক ৮টার দিকে তিনি আত্মহত্যা করেছেন। নিহত ফয়সাল আহমেদ উপজেলার বালিজুরী ইউনিয়নের পাতারী গ্রামের আজিজুর রহমান মকদ্দসের বড় ছেলে।
রাত সাড়ে সাতটার দিকে ফয়সাল আহমেদ সৌরভ তার আইডি থেকে ফেসবুক স্ট্যাটাসে লিখেন, “আমি গলায় দড়ি দিলাম তুই রফিকের লাগি। তুই আমারে কাবু করিয়া লাশ বানাইলে, তুই ভালো থাক বেঈমান। সফিকের কাছ থেকে এক লাখ টাকা এনেছিলাম সুদে। তিন লাখ টাকা সুদ দিয়েছি।
এখনো সাড়ে তিন লাখ পায়। এই রফিক আর সফিকের লাগি আত্মহত্যা করলাম। ভালো থাক আমার পরিবার। মা ‘ফাইজা’ আমায় ক্ষমা করো। মা-বাবা-ভাই-বোন আমায় ক্ষমা করিও। বউ তোমাকে বলার কিছু নেই---? ইতি, এক কাপুরুষ।”
এই স্ট্যাটাস দেখে স্বজন ও গ্রামবাসী খোঁজাখুঁজি করে রাত ৮ টার দিকে নিজ গ্রাম পাতারী ও পাশ্ববর্তী শান্তিপুর গ্রামের মধ্যে গাছে ঝুলন্ত অবস্থায় ফয়সালকে দেখতে পায়। তাকে উদ্ধার করে পাশ্ববর্তী বিশম্ভরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
আরও পড়ুন: স্টেডিয়ামের ২৫ ফুট উঁচু থেকে ফেলে দেওয়া হলো নারী খেলোয়াড়কে
পারিবারিক সুত্রে জানা যায়, ফয়সাল আহমেদ এক সময় নিজের নৌকায় মালামাল পরিবহন করতো। কয়েক বছর আগে নৌকা বিক্রি করে অন্যের নৌকায় চালক হিসাবে ব্যবসায়ীদের পাথর ও বালু পরিবহন করে এখন। তিনি বেশ কিছু দিন আগে উপজেলার বাদাঘাট ইউনিয়নের নূরপুর গ্রামের রফিক মিয়া ও বালিজুরী ইউনিয়নের আনোয়ারপুর বাজারের শফিক মিয়ার কাছ থেকে সুদে টাকা নিয়ে ছিলেন।
দীর্ঘদিন ধরে উচ্চহারে সুদ দিলেও তাদের আসল টাকা শোধ হয়নি। উল্টো সাড়ে তিন লাখ টাকা দাবি করে সুদখোররা বৃহস্পতিবার তার চুনাপাথর ভর্তি নৌকা উপজেলার উত্তর শ্রীপুর ইউনিয়নের কামালপুর গ্রামে আটকে দেয়। এতে করে দিশেহারা হয়ে পড়েন ফয়সাল আহমেদ। ফয়সাল আহমেদ তিন মাস বয়সী ‘ফাইজা’ নামে এক মেয়ের পিতা।
নিহতের নিকটাত্মীয় ও সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আলী নেওয়াজ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তাহিরপুর থানার এসআই গোলাম হাক্কানি বলেন, ঘটনা শুনেছি। বিশম্ভরপুর এলাকায় মৃত্যুর কারণে সুরতহাল করবে ওই থানা। পরে অভিযোগ প্রাপ্তি সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।