রাত আড়াইটায় বাসা থেকে বের হন মামুন, সকালে জানান ‘আত্মহত্যা’
নাটোরে কলেজছাত্র মামুনকে বিয়ে করা খুবজীপুর এম হক ডিগ্রি কলেজের সহকারী অধ্যাপক মোছা. খাইরুন নাহারের মরদেহ উদ্ধারের পর এ ঘটনায় নানা বিষয় সামনে আসছে। রোববার (১৪ আগস্ট) তার লাশ উদ্ধারের পর স্বামী মামুনকে আটক করেছে পুলিশ। তিনি জানিয়েছেন, ঘরে ঝুলন্ত অবস্থায় ছিল খায়রুন নাহারের ঝুলন্ত মরদেহ।
এটিকে পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড বলে দাবি করেছেন খাইরুন নাহারের চাচাতো ভাই সাবের হোসেন। রোববার সকালে ঘটনাস্থলে সাবের হোসেন বলেন, সকালে একটা কল আসে, আমার বোন নাকি আত্মহত্যা করেছে। খবর শুনেই ছুটে আসি। এসে দেখি মরদেহ মেঝেতে পড়ে আছে। গলায় বেশ কিছু দাগ রয়েছে। এতে মনে হচ্ছে আত্মহত্যা নয়, পরিকল্পিত খুন। আমরা এর বিচার দাবি করছি।
বাসার দারোয়ান নিজাম উদ্দিন গণমাধ্যমকে বলেন, ‘রাত ১১টার দিকে বাসায় ঢোকেন মামুন। আড়াইটার দিকে বের হন। কেন বের হচ্ছেন জানতে চাইলে মামুন বলেন, ওষুধ কিনতে যাচ্ছেন। সকাল ৬টায় আবার ফিরে এসে তিনি আমাকে ডাকেন। চার তলায় গিয়ে দেখি লাশ নামানো।’
নাটোর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাসিম আহমেদ এ বিষয়ে গণমাধ্যমকে বলেন, জিজ্ঞাসাবাদে মামুন জানিয়েছেন, ভোর ৪টার দিকে ঘর থেকে বের হয়ে তিনি বাথরুমে যান। কিছুক্ষণ পর ফিরে দেখেন, সিলিংয়ে গলায় ওড়না পেঁচানো অবস্থায় ঝুলছেন খায়রুন। হাতের কাছে ধারালো কিছু না পেয়ে দিয়াশলাইয়ের কাঠি জ্বালিয়ে ওড়না পুড়িয়ে নিচে নামান তাকে।
ওসি জানান, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে আত্মহত্যা করেছেন তিনি। লাশ উদ্ধার করে মর্গে পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পেলে মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে।
আরো পড়ুন: সেই শিক্ষিকার লাশ উদ্ধারের পর কলেজছাত্র মামুন আটক
নাটোরের পুলিশ সুপার লিটন কুমার সাহা বলেন, ‘ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। শিক্ষিকা ও ছাত্রের প্রেম কাহিনী ছড়িয়ে পরলে তাঁরা বিষয়টিকে পজিটিভ নিয়েছিলেন। কিন্তু সামাজিক, পারিবারিক ও কর্মক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা তাদের মধ্যে মানসিক চাপ সৃষ্টি করে।’
নাটোর শহরের বলারীপাড়ার ভাড়া বাসা থেকে লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। বলারীপাড়ার হাজি নান্নু মোল্লা ম্যানশনের চারতলায় ভাড়া থাকতেন তারা। খায়রুন নাহার গুরুদাসপুর উপজেলার উপজেলার চাঁচকৈড় পৌর এলাকার মো. খয়ের উদ্দিনের মেয়ে। মামুন হোসেনও একই উপজেলার পাটপাড়া গ্রামের মোহাম্মদ আলীর ছেলে।
ভবনের বাসিন্দা ও এলাকাবাসী জানান, ভোরে মামুন ভবনের অন্য বাসিন্দাদের জানান, তার স্ত্রী খায়রুন নাহার গলায় ওড়না পেঁচিয়ে ফ্যানের সঙ্গে ঝুলে আত্মহত্যা করেছেন। লোকজন বাসায় গিয়ে লাশ মেঝেতে শোয়া অবস্থায় দেখতে পেলে সন্দেহ হয়। তারা মামুনকে আটকে পুলিশে খবর দেন।