‘জিতু আমার ভাইস্তা হয়, আমাকে আন্টি ডাকে’- জিতুর কথিত প্রেমিকা
সাভারের আশুলিয়ায় হাজী ইউনুছ আলী স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষক উৎপল কুমার সরকার হত্যার ঘটনায় অভিযুক্ত স্কুলশিক্ষার্থী আশরাফুল আহসান জিতু (১৯) এরর কথিত প্রেমিকা অবশেষে মুখ খুলেছেন।
এক গণমাধ্যমকে দেয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, জিতু তার ভাতিজা হয়। ও (জিতু) আমাকে আন্টি বলে ডাকে। আমি প্রায় সময় তাকে বই দিয়ে সাহায্য করতাম। এখন আমার নামে বদনাম উঠেছে। এলাকা থেকে বিভিন্ন মানুষ বিভিন্ন কথা বলছে। এগুলোর কোনোটাই সত্যি না। আমরা তাদের থেকে আমাদের এই জমিটা কিনেছি।
তিনি আরও বলেন, আমি তার সঙ্গে কথা বলেছি। এতে কারও সন্দেহ হলে আমাকে ডেকে জিজ্ঞেস করতে পারবো। কিন্তু তারা তা করেনি। আমি ছেলের সাথে কথা বলি এরকম কোনো অভিযোগ আমার বাসায় আসে নাই।
তিনি আরও বলেন, উৎপল স্যার আমাকে অনেক ভালো জানতো। স্যার প্রায়ই জিজ্ঞেস করতো বোনের কি অবস্থা। কিন্তু স্যার কখনো জিতুর ব্যাপারে কিছু বলে নাই। আমাকের সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। আর জিতু তো বলে নাই যে তার সঙ্গে সম্পর্ক আছে। জিতু যদি বলে তার সঙ্গে আমার সম্পর্ক আছে তা হলে আমাকে যে শাস্তি দেয়া হব আমি সেই শাস্তি মেনে নিব।
আশরাফুল আহসান জিতুকে গ্রেপ্তারের পর র্যাব জানিয়েছে, স্কুল ক্যাম্পাসে বান্ধবীকে নিয়ে ঘোরাফেরা করতে ‘নিষেধ করেছিলেন’ শিক্ষক উৎপল সরকার; সেই ক্ষোভ আর ‘হিরোইজম দেখানোর চেষ্টায়’ জিতু তাকে স্টাম্প দিয়ে বেধড়ক পিটিয়েছিলেন। এ সম্পর্কে জিতুর কথিত প্রেমিকা বলেন, হত্যা কাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে শনিবার (২৫ জুন) আর আমি ২১ জুন মঙ্গলবার থেকে আমি স্কুলে যাই না। ক্লাসের শিক্ষককে বিষয়টি মোবাইর ফোনের মাধ্যমে জানানো হয়েছে।
জিতু ঢাকার সাভারের আশুলিয়ার হাজী ইউনুছ আলী স্কুল অ্যান্ড কলেজের দশম শ্রেণির ছাত্র। ওই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেরই শিক্ষক উৎপল সরকার। তিনি কলেজের শৃঙ্খলা কমিটির সভাপতির দায়িত্বে ছিলেন।
গত এক সপ্তাহ বন্ধ থাকার পর শনিবার (২ জুলাই) হাজী ইউনুছ আলী কলেজে আবার ক্লাস শুরু হয়েছে। প্রতিষ্ঠানটিতে মাধ্যমিক পর্যায়ের একজন ছাত্রের আক্রমণে শিক্ষক নিহত হওয়ার ঘটনায় সারাদেশে তোলপাড় হয়।
ওই ঘটনার পর প্রতিষ্ঠানটি বন্ধ করে দেয়া হলেও গত এক সপ্তাহে ওই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে কেন্দ্র করে রীতিমতো উত্তাল ছিল আশুলিয়ার চিত্রশাইল এলাকা।
শিক্ষক হত্যার ঘটনায় জড়িত থাকার পাশাপাশি ‘প্রতিষ্ঠানের শৃঙ্খলাভঙ্গ’র দায়ে কলেজ শাখার এক ছাত্রীকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করেছে কলেজ কর্তৃপক্ষ।
শিক্ষক হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে বহিষ্কার হওয়া কলেজ ছাত্রী কীভাবে জড়িত, তা কলেজ কর্তৃপক্ষ বিস্তারিত না জানালেও গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবরগুলোতে উঠে এসেছে যে ওই ছাত্রী অভিযুক্ত ছাত্রের বান্ধবী। স্থানীয় পত্রিকার খবরে আরও বলা হয়েছে, ওই ছাত্রীটিকে নিহত শিক্ষক তিরস্কার করেছিল বলে অভিযুক্ত ছাত্র তার ওপর আক্রমণ করেছিল।