পদ্মাসেতুর নাট-বল্টু খোলা তরুণ

ছেলে শিবির করে কিসের ভিত্তিতে বলছে পুলিশ, জানতে চান মাহদীর বাবা

মাহদী হাসান
মাহদী হাসান  © ফাইল ছবি

পদ্মা সেতুর নাট-বল্টু খুলে সেটার ভিডিও ধারণ করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অপপ্রচারের অপরাধে গ্রেফতারকৃত মাহদী হাসানকে (২৭) শিবির কর্মী হিসেবে চিহ্নিত করেছে পুলিশ। এদিকে মাহদী হাসানকে পুলিশ শিবির কর্মী দাবি করা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তার বাবা মনির হাসান। তিনি জানতে চান তার ছেলে শিবির করে কিসের ভিত্তিতে পুলিশ এটি দাবি করছে। শুক্রবার (১ জুলাই) ঢাকায় আয়োজিত পুলিশের সংবাদ সম্মেলনে মনির হাসান এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, "আমার ছেলে ছাত্রশিবিরের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত কিনা আমি জানি না। আমি এটাও নিশ্চিত করে বলতে পারছি না। হয়তো সে ছাত্রশিবিরের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। না হলে, কীসের ভিত্তিতে পুলিশ দাবি করছে? সে গত ১০ বছর ধরে ঢাকার কাজী নজরুল ইসলাম কলেজে অধ্যয়নরত।’’

তিনি বলেন, “মাহদী ওই সময়ে ছাত্রশিবিরের কোনো সভা, সমাবেশ বা অন্যান্য রাজনৈতিক কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছিলেন কিনা তা পুলিশ তদন্ত করে দেখতে পারে। তার ছেলে হয়তো কোনো কিছু না বুঝেই এটা করে ফেলেছে।’’

"সে ভাবেননি যে ঘটনাটি এত বড় ইস্যু হয়ে উঠবে। তার একাডেমিক জীবন এখনও শেষ হয়নি। যদি ওর  উপলব্ধি থাকত তাহলে সে এই কাজটি করত না।’’

মাহদী মুন্সীগঞ্জ জেলার টঙ্গীবাড়ী উপজেলার ধীপুর ইউনিয়নের রব-নগরকান্দী গ্রামের মনির কাজীর বড় ছেলে। মনির কাজীর পৈতৃক বাড়ি উপজেলার হাসাইলে-বানারী ইউনিয়নে। গ্রেফতার মাহদী তামিরুল মিল্লাত মাদ্রাসা থেকে দাখিল ও আলিম পাশ করেছেন। তিনি মাদ্রাসায় পড়াশুনা করাকালে ছাত্রশিবিরের রাজনীতির সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন বলে দাবি করছে পুলিশ।

পুলিশের সংবাদ সম্মেলনে মনির আরো বলেন, আমার ছেলের যদি অন্যায় করার চিন্তা থাকত তাহলে সে ভিডিও করত না। তবে সে যেটা করেছে তা অন্যায় করেছে, ভুল করেছে। আমার ছেলে এখন উদ্ভিদবিদ্যা বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র। তার ব্যবহারিক পরীক্ষা ঘনিয়ে আসছে। করোনা প্রাদুর্ভাবের কারণে আমি তাকে পড়াশোনা বাদ দিয়ে বিদেশে যেতে বলেছিলাম। তারপর আমি সেই সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসি। আমার ছেলে বর্তমানে একজন ছাত্র। পুলিশ তাদের প্রেস ব্রিফিংয়ে এটি উল্লেখ করেনি এতে আমি আহত হয়েছি।"

গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় নিরাপত্তা বেষ্টনীর মাধ্যমে মাহদীকে আদালতে তোলা হয়। এর আগে ২৯ জুন বুধবার দিবাগত রাতে তাকে লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জ থেকে গ্রেফতার করা হয়। ৩০ জুন দুপুরের পর গ্রেফতারকৃত মাহদীকে নিয়ে আসা হয় মুন্সীগঞ্জে। এরপর তাকে ঢাকায় এনে মুন্সীগঞ্জ চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করা হয়। সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মানিক চন্দ্র দাসের আদালত মাহদীকে জেলহাজতে আটক রাখার আদেশ দেন।

এর আগে ২৬ জুন সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল ভিডিওতে দেখা যায়- সেতুর রেলিংয়ের সঙ্গে সংযুক্ত নাট-বল্টু খুলে সে প্রদর্শন করছে। ২৬ সেকেন্ডের ভিডিওতে আরও দেখা যায় গ্রেফতার মাহদী সেতুর রেলিং থেকে নাট-বল্টু খুলছে আবার লাগিয়ে দিচ্ছে। তারপর থেকে তিনি পলাতক ছিলেন। পরে মাহদীর অবস্থান শনাক্তের পর রামগঞ্জ থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।

 


সর্বশেষ সংবাদ