হাড়বিহীন মাথা নিয়ে ছাত্র ভর্তি ঢামেকে, মগজ সাভারে
মুমূর্ষু অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন ময়মনসিংহের নান্দাইলের আরশাদুল। তাঁর মাথার মগজ রয়েছে সাভারের ইনস্টিটিউট অব টিস্যু ব্যাংকিংয়ে। সুস্থ হওয়ার তিন মাস পর ওই অংশ সংযোজন করা হবে। আরশাদুলের মাথার ব্যান্ডেজে চিকিৎসক লিখে রেখেছেন, ‘মাথায় হাড় নাই, চাপ দিবেন না'।
এইচএসসি পরীক্ষার্থী আরশাদুল (২০) উপজেলার অরণ্যপাশা গ্রামের মঞ্জিল মিয়ার ছেলে। পড়ালেখার ফাঁকে তিনিও মনিহারি ব্যবসা করেন।আরশাদুলের ঘটনা গত বছরের অক্টোবরে চমেক ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের মারামারিতে গুরুতর আহত মাহাদি জে আকিবের কাহিনীর কথাই মনে করিয়ে দেয়। তার মাথায়ও লেখা ছিল- 'হাড় নেই, চাপ দিবেন না'।
স্বজন ও এলাকাবাসী জানিয়েছে, গত শনিবার আরশাদুলের ছোট ভাই আবদুল আহাদ প্রতিবেশী সোহেলদের জমির নালায় মাছ ধরার জন্য ফাঁদ পেতে রাখে। নবী হোসেনের ছেলে জুনাইদ তা তুলে নিয়ে যায়। এ নিয়ে ঝগড়া হলেও বিষয়টি মিটমাট হয়ে যায়। কিছুক্ষণ পর আরশাদুল নবী হোসেনের বাড়ির সামনে দিয়ে দোকানের উদ্দেশে রওনা দেন।
এ সময় হোসেন এবং তাঁর ছেলে সুজন মিয়া, রুবেল মিয়া ও রিপন মিয়া আরশাদুলকে কুপিয়ে ও লোহার রড দিয়ে পিটিয়ে গুরুতর জখম করে। এতে তাঁর মাথা থেকে মগজ বেরিয়ে যায়। মুমূর্ষু অবস্থায় আরশাদুল ও মাসুদকে প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও পরে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। রাতেই আরশাদুলকে ঢামেক হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করা হয়। ওই হাসপাতালেই চিকিৎসাধীন তিনি।
আরো বলুন: ক্লাসের পর বিকেলে বুকে ব্যাথা, সন্ধ্যায় মারা গেলেন জবি ছাত্র
প্রত্যক্ষদর্শী আরশাদুলের দাদি জুলেখা বেগম বলেন, তাঁর চোখের সামনে নবী হোসেন ও তার ছেলেরা হামলা চালিয়েছে। প্রতিবেশী মোবারক ও উজ্জল মিয়া জানান, আরশাদুল শান্ত প্রকৃতির ছেলে। কোনোদিন কারোর সঙ্গে ঝগড়া করেননি।
ঢামেকে আরশাদুলের বাবা মঞ্জিল মিয়া বুধবার বলেন, 'প্রতিপক্ষের বাড়ির সামনে দিয়ে চলাচল করি। এ নিয়ে তারা আমাদের গালিগালাজ করে আসছে। কয়েকবার মারধরও করেছে। আমার ছেলেটারেও শেষ করতে চেয়েছে। আল্লাহ জানেন, ছেলেটা বাঁচবে কিনা।’
নান্দাইল মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মিজানুর রহমান আকন্দ বলেন, ঘটনাটি জানতে পেরে বাড়িতে গিয়ে কাউকে পাওয়া যায়নি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।