‘মাথায় খুলি নেই, চাপ দেবেন না’

আহত শিক্ষার্থী
আহত শিক্ষার্থী  © সংগৃহীত

‘মাথায় হাড় নেই, চাপ দেবেন না’ মার্কার দিয়ে ব্যান্ডেজে লিখে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের বেডে শুয়ে রাখা হয়েছে নান্দাইলের আশরাফুল (১৮) নামে এক শিক্ষার্থীকে। তাঁর মাথায় দেওয়া হয়েছে ৪৪টি সেলাই। প্রতিপক্ষের হামলার শিকারে গুরুতর আহত হয়ে গত তিন দিন ধরে ঢামেক হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন তিনি। শুধু আশরাফুল নয়, হামলার ঘটনায় গুরুতর আহত হয়েছেন তার পরিবারের আরও ১০ জন। 

জানা যায়, আহত আশরাফুল স্থানীয় একটি কলেজের একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী। গত শনিবার দুপুর ২টার দিকে উপজেলার গাংগাইল ইউনিয়নের অরেণ্যপাশা গ্রামে জলাশয়ে মাছ ধরাকে কেন্দ্র করে মঞ্জিল মিয়ার ছেলে আহাদের সঙ্গে চাচা নবী হোসেনের ছেলে জুনায়েদের কথা-কাটাকাটি হয়। এরই জেরে মারামারির ঘটনা ঘটে। এতে নবী হোসেনের আরেক ছেলে সুজনের দায়ের কোপে আশরাফুলের মাথা ও শরীর কেটে যায়। একই সঙ্গে শাবলের আঘাতে তার দাঁতও পড়ে যায়। পরে আশরাফুলকে উদ্ধার করতে এসে হামলার শিকার হন তার মা রুমেলা খাতুন, বাবা মঞ্জিল মিয়া, ভাই আহাদ মিয়া, চাচা শহিদউল্লাহ্সহ প্রায় ১০ জন। 

পরে গুরুতর আহত অবস্থায় আশরাফুলকে উদ্ধার করে প্রথমে নান্দাইল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নিয়ে যাওয়া হয়। এ সময় হাসপাতাল থেকে তাঁকে দ্রুত ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ (মমেক) হাসপাতালে পাঠানো হয়। কিন্তু অবস্থার আরও অবনতি হলে ঢামেক হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। দায়ের কোপে আশরাফুলের মাথার খুলি উপড়ে গেছে। ফলে মাথায় শুধু ব্যান্ডেজ করে রাখা হয়েছে। আর মাথার খুলিটি সাভারের একটি ল্যাবরেটরিতে রেখে দেওয়া হয়। 

এ ঘটনায় আশরাফুলের বাবা মঞ্জিল মিয়া বলেন, ‘আমার ছেলেটিকে নির্মমভাবে কুপিয়েছে। মাথার খুলিটা পর্যন্ত উপড়ে ফেলে দিছে। আমি খুব অসহায় হয়ে পড়েছি। চিকিৎসকেরা জানিয়েছে ৩ মাস পর অপারেশনের মাধ্যমে খুলি প্রতিস্থাপন করা হবে। আমার ছেলে ও পরিবারের অন্যদের নিয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা দিতে ব্যস্ত থাকায় থানায় কোনো অভিযোগ করতে পারি নাই। তবে মামলা করার প্রস্তুতি নিচ্ছি।’ 

ঘটনা সম্পর্কে জানতে অভিযুক্তদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়। তবে তারা ঘটনার পর থেকে পলাতক থাকায় বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি। এ সময় নবী মিয়ার মোবাইলে একাধিকবার কল দিলেও তা বন্ধ পাওয়া যায়। 

এ বিষয়ে গাংগাইল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট আসাদুজ্জামান নয়ন বলেন, ঘটনা সম্পর্কে আমি আগে জানতাম না, পরে শুনেছি। ঘটনাটি খুবই মর্মাহত। সামান্য বিষয় নিয়ে এত বড় ঝগড়া সত্যিই দুঃখজনক ব্যাপার। 

নান্দাইল মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মিজানুর রহমান আকন্দ বলেন, এ ঘটনা সম্পর্কে আমি অবগত নই। কেউ আমাদের কিছু জানায়নি। তবে অভিযোগ দিলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। 


সর্বশেষ সংবাদ