১৪ জুন ২০২২, ০৮:১৩

বিদ্যালয়ের বারান্দায় সবার সামনে ছাত্রকে ছুরিকাঘাত, কেটে পড়ল মাংস

হামলার সময় জানালার গ্লাস ভাংচুর করে জিলা স্কুলের শিক্ষার্থীরা  © সংগৃহীত

কুষ্টিয়ায় প্রকাশ্যে এক ছাত্রকে ছুরিকাঘাত করে রক্তাক্ত করেছে আরেক প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা। বিদ্যালয়ের বারান্দায় শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের সামনেই এ ঘটনা ঘটে। সোমবার দুপুরের ওই ঘটনায় ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর শরীরের রানের মাংস কেটে পড়ে গেছে।

আহত আবির হাসান কলকাকলী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণীর শিক্ষার্থী। তাকে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের ভর্তি করা হয়েছে। তার বাসা মজমপুর ঝাউতলা এলাকায়।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, কলকাকলি স্কুলের ছেলে-মেয়েরা পরীক্ষা শেষে বাড়ি ফিরছিল। আবিরও পরীক্ষা শেষ করে বাড়ির দিকে রওনা হয়। এ সময় জিলা স্কুলের কয়েকজন শিক্ষার্থী লাঠি ও দেশীয় অস্ত্র নিয়ে স্কুলে ঢুকে পড়ে। তাদের দেখে দৌড় দিয়ে আবির স্কুলের বারান্দায় আশ্রয় নেয়। তবে সেখানেই তাকে ক্ষুর দিয়ে আঘাত করা হয়।

এতে ডান পায়ের রানে গভীর ক্ষতের সৃষ্টি হয়ে মাংস কেটে পড়ে যায়। প্রধান শিক্ষকসহ অন্যরা বাধা দিলে তাদের ওপর চড়াও হয় শিক্ষার্থীরা। পরে তারা দ্রুত চলে যায়।

প্রধান শিক্ষক জেবুননেসা সবুজ বলেন, জিলা স্কুলের সাবেক শিক্ষার্থী সংগ্রামের নেতৃত্বে ছেলেরা হামলা করে। ছেলেটিকে তারা ক্ষুর মেরে গুরুতর আহত করেছে। দুটি ভবনের সব জানাল ভেঙে দিয়েছে। তাদের সাথে জিলা স্কুলের অনেকেই অংশ নেয়।

হাসপাতালে আবির জানায়, সে একজনকে চেনে, জিলা স্কুলে পড়ে। বাকিদের চেনে না। তার সাথে কারো কোনো ঝামেলা হয়নি বলেও দাবি করে। জরুরি বিভাগের চিকিৎসক মেহেদী হাসান বলেন, ক্ষুর ধারালো হওয়ায় গভীর ক্ষত হয়ে রক্তক্ষরণ হয়েছে। তার প্রচুর রক্তের প্রয়োজন।

আবিরের বাবা মোহাম্মদ শাহাজাদা বলেন, মজমপুরের সংগ্রাম বিএসবি কিশোর গ্যাংয়ের সদস্য। আমার ছেলেতো নিরীহ, তাকে কেন মারলো? আমি এর বিচার চাই।

আরো পড়ুন: উত্ত্যক্তের প্রতিবাদ করায় গোবর ছোড়া হলো ৪ শিক্ষককের গায়ে

স্থানীয়রা ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, তিন দিন আগে কলকাকলি স্কুলের শিক্ষার্থী প্রদীপকে মারধর করে জিলা স্কুলের শিক্ষার্থীরা। পুলিশ লাইনের এক শিক্ষার্থীকে মারধর করে কলকাকলির কয়েকজন শিক্ষার্থী। পুলিশ লাইনের সেই ছাত্রের কয়েকজন বন্ধু জিলা স্কুলে পড়ে। সে কারণেই তারা হামলা করে। প্রেম সংক্রান্ত বিষয়ে তাদের ঝামেলা চলছে। জিলা স্কুলের শিক্ষার্থীরা প্রাচীর বেঁয়ে উঠে কলকাকলির মেয়েদের প্রায়ই উক্ত্যক্ত করে।

কুষ্টিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মাদ সাব্বিরুল আলম বলেন, কারা কারা জড়িত তাদের নাম পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় মামলা হলে সবার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

জিলা স্কুলের প্রধান শিক্ষক এফতে খাইরুল ইসলাম বলেন, সকালে ছেলেরা উত্তেজিত হলে তাদের ঠাণ্ডা করার চেষ্টা করি। তারা কথা না শুনেই পুলিশের সামনে এক ছাত্রকে ক্ষুর মেরেছে, ভাংচুর চালিয়েছে। এটা লজ্জাজনক। এক ছাত্রের কাছ থেকে ড্যাগার উদ্ধার হয়েছে। জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।