ছাত্রদলের পদপ্রার্থী হলেন ছাত্রলীগ সভাপতি, সেক্রেটারি বিবাহিত
বিতর্ক পিছু ছাড়ছে না ব্রাহ্মণবাড়িয়া বিজয়নগর উপজেলা ছাত্রলীগের। কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের নেতাদের থানা থেকে রক্ষা করতে গিয়ে ৩০ মে উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি এম এইচ মাহবুব হোসাইনকে বহিষ্কার করা হয়। ভারপ্রাপ্ত সভাপতির দায়িত্ব দেওয়া হয় এমদাদ সাগরকে। এরপরই ভাইরাল হয় ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এমদাদ সাগরের পর্নো ভিডিও। তোলপাড় শুরু হয় জেলাজুড়ে।
এবার ইউনিয়ন ছাত্রদলের সভাপতি প্রার্থীকে নবগঠিত ছাত্রলীগের সভাপতি করে নতুন বিতর্কের জন্ম দিলো উপজেলা ছাত্রলীগ। এছাড়া সাধারণ সম্পাদক করা হয়েছে এক বিবাহিত সাবেক ছাত্রনেতাকে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ১১ জুন রাতে মনির হোসেনকে সভাপতি ও সেলিম মিয়াকে সাধারণ সম্পাদক করে বিজয়নগর উপজেলার চরইসলামপুর ইউনিয়ন ছাত্রলীগের ১৫ সদস্যের কমিটি ঘোষণা করা হয়। উপজেলা ছাত্রলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এমদাদ সাগর ও সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম রাজভী স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানান।
এছাড়া আগামী ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ কমিটি উপজেলা ছাত্রলীগের কাছে জমা দিতে নতুন কমিটিকে নির্দেশ দেওয়া হয়।
ইউনিয়ন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা জানান, নবগঠিত চর ইসলামপুর ইউনিয়ন ছাত্রলীগের কমিটিতে সভাপতির পদ পাওয়া মনির হোসেন ২০১২ সাল থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত একই ইউনিয়ন ছাত্রদলের সভাপতি প্রার্থী ছিলেন। কিন্তু কাঙ্ক্ষিত পদ না পেয়ে ক্ষুব্ধ হয়ে মনির ছাত্রদলের রাজনীতি থেকে সরে দাঁড়ান। এক পর্যায়ে মনির ইউনিয়ন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের সঙ্গে সখ্যতা গড়ে তুলেন এবং ছাত্রলীগের বিভিন্ন রাজনৈতিক কর্মসূচিতে যোগ দেন।
১১ জুন কোনো ধরনের সম্মেলন ছাড়াই উপজেলা ছাত্রলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এমদাদ সাগর ও সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম রাজভী চরইসলামপুর ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি হিসেবে মনিরকে ও সাধারণ সম্পাদক হিসেবে সেলিম মিয়ার নাম ঘোষণা দেন। সাধারণ সম্পাদক পদ পাওয়া সেলিম মিয়াও বিবাহিত।
চরইসলামপুর ইউপি ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি সাব্বির আহমেদ বলেন, ‘২০১১-২০১২ সাল আমাকে ইউনিয়ন ছাত্রদলের সভাপতি করে কমিটি ঘোষণা করা হয়। সেসময় মনির আমার সঙ্গে সভাপতি পদে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী ছিলেন। পরবর্তীতে পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে তাকে আমরা চেষ্টা করেও কোনো পদে রাখতে পারিনি। সে অভিমান করে ছাত্রদল থেকে দূরে সরে যায়।’
এদিকে সাধারণ সম্পাদক পদ পাওয়া সেলিম মিয়া সম্পর্কে চরইসলামপুর ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য মিয়া চাঁন বলেন, ‘প্রায় এক বছর আগে পত্তন ইউনিয়নের মনিপুর গ্রামে সেলিম মিয়া বিয়ে করেছেন। তার বিয়েতে আমারও দাওয়াত ছিল। কিন্তু ব্যস্ততা থাকায় হিসেবে যেতে পারিনি।’
উপজেলা ছাত্রলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এমদাদ সাগর বলেন, ‘উপজেলা আওয়ামী লীগের শীর্ষ এক নেতা সভাপতি হিসেবে মুনিরের নাম দিয়েছেন। সে অনুযায়ী আমরা কমিটি দিয়েছি। সাধারণ সম্পাদক সেলিম মিয়ার বিয়ের বিষয়টি আমাদের জানা ছিল না। আমরা বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করে তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেবো।’
এ বিষয়ে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি রবিউল হোসেন রুবেল বলেন, ‘কমিটি নিয়ে অভিযোগ ওঠায় এরইমধ্যে বিষয়টি আমাদের নজরে এসেছে। আমরা গুরুত্ব সহকারে বিষয়টি দেখছি। এ নিয়ে সাংগঠনিকভাবে আলোচনার পর যথাযথ ব্যবস্থা নেবো।’