এসএসসি পরীক্ষার ১২ দিন আগে এক পরীক্ষার্থীকে ৩ মাসের কারাদণ্ড
কুড়িগ্রাম পৌর শহরের কলেজপাড়ায় একটি বাড়িতে অভিযান চালিয়ে মাদক সেবনের অপরাধে এক এসএসসি পরীক্ষার্থীসহ তিনজনকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।
মঙ্গলবার (৭ জুন) বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে শহরের কলেজপাড়া (গাছবাড়ি) এলাকায় বায়েজিদ ছাত্রাবাসের মালিকের বাড়িতে মাদ্রকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর ও জেলা প্রশাসন অভিযান চালান। জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নিশাত তামান্না ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে এ রায় দেন।
দণ্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা হলেন সদরের সবুজপাড়া এলাকার আবু হায়াত খানের ছেলে রায়হান খান আনন্দ (২২), সদরের হরিকেশ এলাকার নুরুন্নবী ইসলামের ছেলে রাকিবুল ইসলাম রাকিব (২১)। তাদের প্রত্যেককে এক বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড এবং ১০ হাজার টাকা করে সাজা দেন আদালত।
এর মধ্যে রায়হান খান আনন্দ তৎক্ষণাৎ ১০ হাজার টাকা জরিমানা পরিশোধ করেন বলে জানা গেছে। এসএসসি পরীক্ষার্থীর বয়স ১৮ বছর দেখিয়ে তাকে তিন মাসের কারাদণ্ড ও ১০ হাজার টাকা জরিমানা করেন এবং অনাদায়ে আরও সাত দিনের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেন। আগামী ১৯ জুন এসএসসি (ভোকেশনাল) পরীক্ষায় অংশ নেবে সে।
ভ্রাম্যমাণ আদালত সূত্র জানায়, মঙ্গলবার বিকেলে জেলা শহরের কলেজপাড়া (গাছবাড়ি) এলাকায় বায়েজিদ ছাত্রাবাসের মালিকের বাড়িতে অভিযান চালায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর ও জেলা প্রশাসনের ভ্রাম্যমাণ আদালত। এ সময় ওই বাড়ির মালিকের এসএসসি পরীক্ষার্থী ছেলেকে তার কক্ষে রায়হান আনন্দ ও রাকিবুল ইসলামসহ হেরোইন সেবনরত অবস্থায় আটক করে প্রশাসন। পরে তাদের মাদ্রকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের ৩৬ (৫) ধারায় বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেওয়া হয়। এর মধ্যে ওবাড়ির মালিকের ছেলে এসএসসি পরীক্ষার্থী হওয়ায় তাকে তিন মাসের সাজা দেওয়া হয়।
মঙ্গলবার সন্ধ্যার পর এসএসসি পরীক্ষার্থীর বাড়িতে গেলে তার মা দাবি করে বলেন, তার ছেলের বয়স ১৭ বছরের কিছু বেশি। তবে তার ছেলেসহ অপর দুই যুবক ঘরের ভেতর কিছু একটা সেবন করছিল বলে স্বীকার করেন তিনি। কিশোরের মা তার ছেলের জন্ম নিবন্ধন সনদ বের করে দিলে তাতে দেখা যায়, রাতুলের জন্ম তারিখ ৫ মে ২০০৫। সেই হিসাবে তার বয়স ১৭ বছর।
ভ্রাম্যমাণ আদালতের বিচারক ও জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নিশাত তামান্না বলেন, অভিযানে তিনজনকেই মাদক সেবনরত অবস্থায় পাওয়া গেছে। এর মধ্যে একজন এসএসসি পরীক্ষার্থী, সেটা জানার পর আমরা তার বয়স জানতে চাই। তারা কোনো কাগজ দেখাননি। তখন তার মা জানান যে তার বয়স আঠারো হয়েছে। আমরা তার বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা দিতে দিয়েছি।
তিনি আরও বলেন, পরীক্ষার্থীর মাসহ অনেকে বলেছেন যে তার বয়স ১৮ হয়েছে। সে জন্য তাকে ভ্রাম্যমাণ আদালতে সাজা দেওয়া হয়েছে। তাদের বয়স প্রমাণের কাগজ থাকলে তারা আপিল করতে পারবেন।’ এ বিষয়ে তিনি জেলা প্রশাসকের সঙ্গে কথা বলার পরামর্শ দেন।