আপত্তিকর ভিডিও ভাইরাল হওয়ায় তরুণীর আত্মহত্যা, গ্রেপ্তার ২
নারায়ণগঞ্জের বন্দরে ব্যক্তিগত মুহূর্তের ছবি ও ভিডিও ছড়িয়ে পড়ায় রুপা আক্তার নামে ২১ বছর বয়সী এক তরুণী আত্মহত্যা করেছে। এই ঘটনায় দুইজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
সোমবার বেলা ১১টার দিকে উপজেলার বালিগাঁও এলাকার বাসার নিজ কক্ষের আড়ার সঙ্গে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে ওই তরুণী আত্মহত্যা করে। নিহত রুপা আক্তার ইতোমধ্যে বন্দর থানায় দায়ের করা একটি ধর্ষণ মামলার ভিকটিম (ভুক্তভোগী) ছিল।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন বন্দরের কলাগাছিয়া ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার আবদুল মোমেন কঁচি ও একই এলাকার দবির হোসেন। গ্রেপ্তার দু’জন ধর্ষণের শিকার তরুণীর পরিবারকে ঘটনাটির মীমাংসার জন্য চাপ প্রয়োগ করেছিলেন।
বন্দর থানার ওসি (তদন্ত) মো. মহসীন বলেন, গত বৃহস্পতিবারই ধর্ষণ মামলা দায়ের হয়েছে। গত সোমবার বিচার সালিশ বসিয়ে ভুক্তভোগীকে অপমান করে আত্মহত্যার প্ররোচনা ও ইলেক্ট্রনিক ডিভাইস ব্যবহার করে আপত্তিকর ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়ার দায়ে আরেকটি মামলা দায়ের করা হয়।
আরও পড়ুন: অধ্যক্ষদের নিয়ে কক্সবাজার যাচ্ছে স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তর
ওই মামলায় মেম্বারের পাশাপাশি ধর্ষক নুরুল আমিন, ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগে নুরুল আমিনের স্ত্রী শ্যামলী বেগম, ভাগনে ইব্রাহিমসহ আরও কয়েকজনকে আসামি করা হয়েছে। তাদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।
ধর্ষণের ঘটনায় দায়েরকৃত মামলায় বলা হয়, বন্দরের বালিয়াগাঁও এলাকার মৃত জমির খানের ছেলে নুরুল আমিন (৪২) এর সঙ্গে মামলার অভিযোগকারিণীর মেয়ের দুই বছরের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। এই সময়ের মধ্যে নুরুল আমিন ওই তরুণীকে বিভিন্নভাবে ভয় দেখিয়ে তার বাসায় এনে একাধিকবার ধর্ষণ করেছে। এ ঘটনায় গত বৃহস্পতিবার অর্থাৎ ২ জুন ভুক্তভোগী তরুণীর মা বাদী হয়ে নুরুল আমিনের বিরুদ্ধে বন্দর থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে ধর্ষণ মামলা করেছিলন (মামলা নং-৫), যা পুলিশের তদন্তাধীন আছে। ধর্ষণ মামলাটি দায়েরের পর থেকে অভিযুক্ত নুরুল আমিন, মোসা. শিমলি, আব্দুল মমিন ওরফে কচি মেম্বার, ইব্রাহমী, পলাশ, ইস্রাফিল, বাবুল, আরমান ও দবির ভুক্তভোগী তরুণীর বিষয়ে আপত্তিকর মন্তব্য ও সম্ভ্রমহানি করে এমন কথা মোবাইল ফোনের মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়।
অভিযোগে আরো বলা হয়, মামলা হওয়ার পর স্থানীয়ভাবে মীমাংসার কথা বলে রবিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে অভিযুক্ত নুরুল আমিন নিজেদের বাড়িতে সালিশি বৈঠক বসিয়ে তরুণী ও তার মাকে নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য ও গালিগালাজ করে। পরবর্তীতে নুরুল আমিনের স্ত্রী মোসা. শিমলি, আব্দুল মমিন ওরফে কচি মেম্বার, ইব্রাহমী, পলাশ, ইস্রাফিল, বাবুল, আরমান ও দবির তরুণী ও নুরুল আমিনের ব্যক্তিগত মুহূর্তের বেশ কিছু ভিডিও ও স্থীর চিত্র মোবাইল ফোনের মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়। এছাড়াও ধর্ষণ মামলাটি করার কারণে নুরুল আমিন, তার স্ত্রী শিমলি ওই তরুণী কেন আত্মহত্যা করছে না বলে আত্মহত্যার প্ররোচনা দেয়ার কারনেই রুপা আক্তার আত্মহত্যা করে।