কুবি শিক্ষকদের বাসায় দুর্ধর্ষ চুরি
তালা ভেঙে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) দুই শিক্ষকের বাসা থেকে স্বর্ণালংকার ও ল্যাপটপসহ প্রায় আড়াই লাখ টাকার মালামাল চুরি হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন সালমানপুর এলাকার হাজী ভিলায় এ ঘটনা ঘটে। শনিবার বিকেলে সাংবাদিকদের হাতে আসা সিসিটিভি ফুটেজে বিষয়টি জানা যায়।
ভুক্তভোগী শিক্ষকেরা জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের প্রভাষক অদিতি সরকার ও আইন বিভাগের প্রভাষক সাদিয়া তাবাসুম হাজী ভিলার চতুর্থ তলায় একটি ফ্ল্যাট ভাড়া নিয়ে থাকেন। ঈদের ছুটিতে সাদিয়া তাবাসুম চলে যান গ্রামের বাড়িতে।
গত ৬ মে সকালে অদিতি সরকারও ঢাকায় যান। ওইদিন বিকেল ৩টার দিকে বাসায় ফিরে তিনি তালা ভাঙা দেখতে পান। পরে অদিতি সরকারের স্বর্ণালংকার এবং সাদিয়া তাবাসসুমের ল্যাপটপসহ প্রায় আড়াই লাখ টাকার মালামাল চুরি হয়েছে বলে বুঝতে পারেন।
সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, ঘটনার দিন দুপুর ১টা ৬ মিনিটে ভবনের সামনে এক মোটরসাইকেল আরোহীকে নামতে দেখা যায়। পরে তিনি একটি ব্যাগ হাতে ভবনে প্রবেশ করেন। তৃতীয় ও চতুর্থ তলার কয়েকটি ফ্ল্যাটে প্রবেশের চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়ে চতুর্থ তলায় ওই শিক্ষকদের ফ্ল্যাটের দরজা ভেঙ্গে প্রবেশ করেন। এর প্রায় ২০ মিনিট পর তাকে ব্যাগ হাতে বের হতে দেখা যায়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক অদিথি সরকার বলেন, ঘটনার দিন সকালে আমি ঢাকায় যাই। ৩টায় ফিরে আসি। এর মধ্যে চুরির ঘটনাটি ঘটে। আমার স্বর্ণালংকারসহ দেড় লাখ টাকার মালামাল নিয়ে যায়। এ ছাড়া আমার সহকর্মীর ল্যাপটপসহ অন্যান্য জিনিসপত্র চুরি হয়েছে।
এ ঘটনায় ভবনের মালিক হাজী ফরিদ মিয়া গত ৭ মে সদর দক্ষিণ থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন। তবে ঘটনার ৮ দিন পেরিয়ে গেলেও প্রশাসন এখনও কাউকে শনাক্ত করতে পারেনি।
আরো পড়ুন: স্কুল ড্রেস পরে রাস্তায় ধূমপান, ৪ ছাত্রী বহিষ্কার
এ বিষয়ে জানতে চাইলে কুমিল্লা সদর দক্ষিণ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দেবাশীষ চৌধুরী বলেন, অভিযোগটি পাওয়ার পর কোটবাড়ি পুলিশ ফাড়িঁকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
কোটবাড়ি পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ রিয়াজ উদ্দিন চৌধুরী বলেন, আমরা সিসি ফুটেজ সংগ্রহ করেছি। সে অনুযায়ী তদন্ত করছি।
এদিকে চুরির বিষয়ে হাজী ভিলার মালিক হাজী ফরিদ মিয়ার কাছে জানতে চাইলে তিনি ভুক্তভোগী শিক্ষকের সাথে অসদাচরণ করে বাসা ছেড়ে দিতে বলেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। ভুক্তভোগী শিক্ষক অদিতি সরকার অভিযোগ করে বলেন, ‘মালিকের কাছে চুরির বিষয়টি জানতে চাইলে তিনি লাঞ্ছিত করে বাসা থেকে বের হয়ে যেতে বলেন।'
আবার ঘটনার পর ভবনটির কেয়ারটেকার বিল্লাল হোসেনকেও মারধর করেন বাড়ির মালিক ও তার জামাতা।
তবে এ অভিযোগ অস্বীকার করে মালিক ফরিদ মিয়া বলেন, ‘অদিতি আমার সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করে নিজেই বের হয়ে যাবেন বলেন। আমি বলেছি, বের হলে বের হয়ে যেতে।’
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর মাহাবুবুল হক ভূইঁয়া বলেন, ‘এ ধরনের কোন অভিযোগ আমি পাইনি। অভিযোগ পেলে বিষয়টি খতিয়ে দেখব।’