স্বামী-সন্তান রেখেই প্রেমিকের বাড়িতে অবস্থান নিয়েছিল সেই বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রী
বিয়ের দাবিতে জামালপুর থেকে বরগুনার চান্দখালীতে প্রেমিকের বাড়িতে অবস্থান নিয়েছিল রাজধানীর বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী শিখা আক্তার মৌ। তবে স্বামী-সন্তান থাকা সত্ত্বেও প্রেমিকের বাড়িতে অবস্থান নেন তিনি। এদিকে প্রেমিকের বাড়িতে অবস্থান নেওয়া ওই ছাত্রীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে আদালত। মঙ্গলবার (১০ মে) সকালে বেতাগী থানাকে এ আদেশ দিয়েছেন বরগুনার মুখ্য বিচারিক হাকিম মুহাম্মদ মাহবুব আলম।
জানা গেছে, গত ২৮ এপ্রিল (বৃহস্পতিবার) প্রেমিকের বাড়িতে অবস্থান নেয় ওই বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রী। এ সময় প্রেমিক ও তার পরিবার বাসা থেকে পালিয়ে যায়।
শিখা আক্তার মৌ রাজধানীর উত্তরার একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে আইন বিভাগের শিক্ষার্থী ও জামালপুরের সড়িষাবাড়ির বাসিন্দা। এছাড়া প্রেমিক মাহমুদুল হাসান উপজেলার চান্দখালীর কাঠপট্টি গ্রামের বাসিন্দা ও রাজধানীর ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস অ্যাগ্রিকালচার অ্যান্ড টেকনোলজিতে (আইইউবিএটি) সিভিল প্রকৌশল বিভাগের শিক্ষার্থী।
সে সময় ওই ছাত্রী জানায়, মাহমুদুল উত্তরায় থাকতেন। পরে তাদের মধ্যে পরিচয় হয়। প্রেমের সম্পর্কের তিন বছর পর মাহমুদুলকে বিয়ের জন্য বলেন তরুণী। মাহমুদুল নানা অজুহাতে তরুণীকে এড়িয়ে চলতে শুরু করেন।
তিনি আরও জানান, চলতি মাসে মাহমুদুল গ্রামে চলে আসেন। বাড়িতে এসে তার সঙ্গে যোগাযোগ কমিয়ে দেয় প্রেমিক মাহমুদুল। এরপর চার-পাঁচ দিন ধরে মোবাইল ফোনটিও বন্ধ রয়েছে। এজন্য মাহমুদুলের বাড়িতে অবস্থান নিয়েছেন তিনি। তাকে দেখে মাহমুদুল ও তার পরিবার বাসায় তালা লাগিয়ে পালিয়েছে।
ওই ছাত্রী আরও জানান, দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে। বাধ্য হয়ে এসেছি। ও বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। তিন বছরের সম্পর্ক। নিরুপায় হয়ে এখানে এসেছি। বিয়ে করে স্ত্রীর মর্যাদা না দিলে আমি এখানেই আত্মহত্যা করব।
আরও পড়ুন : বান্ধবী নিয়ে ক্যাম্পাসে প্রবেশের চেষ্টা, মুচলেকায় ছাড়া পেলেন ছাত্রলীগ নেতা
এ ঘটনায় স্থানীয় বাসিন্দারা তালা ভেঙ্গে তাকে প্রেমিক মাহমুদুলের কক্ষে দিয়ে যায়। সেখানেই বসবাস করছিল ওই বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রী। এছাড়া বেতাগী থানা ও উপজেলা প্রশাসন মৌয়ের নিরাপত্তায় জোরদার করে। তবে মাহমুদুলের বাবা মৌয়ের নিকটে আগের স্বামীর সঙ্গে তালাকের কাগজ ও অভিভাবকদের নিয়ে আসার জন্য বলেন। তবে এতে ব্যর্থ হয় মৌ।
বরগুনা জেলা আইনজীবী সমিতির সদস্য অ্যাড. সাইমুল ইসলাম রাব্বি জানান, বিষয়টি আদালতের নজরে এনে আবেদন করেছি। বিচারক কথিত বিয়ের দাবিতে একটি পরিবারকে অবরুদ্ধ করে অবস্থানরত জামালপুরের তরুণী ওই বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রীর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে বেতাগী থানাকে নির্দেশনা দিয়েছেন। জাস্টিস অব দ্যা পিস আইনে এ আদেশ দিয়েছেন বিচারক।
বেতাগী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শাহ আলম জানান, এখনো আদেশ হাতে পাইনি। আদেশ পাওয়ার পরে এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।