সার্জেন্ট সেজে টাকা আদায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্রকে ধরে দিল পুলিশে
যশোরের মনিরামপুরে ট্রাফিক পুলিশের সার্জেন্ট সেজে রাস্তায় দাঁড়িয়ে মোটরসাইকেল চালকদের সঙ্গে প্রতারণা করার সময় হাতেনাতে এক যুবককে ধরে পুলিশ দিয়েছে লোকজন। আজ রবিবার সকালে মনিরামপুর-নওয়াপাড়া সড়কের হাজিরহাট স্লুইসগেটে এ ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, মনিরুজ্জামান আজ সকালে মোটরসাইকেল চালকদের থামিয়ে পুলিশ সার্জেন্ট পরিচয় দিয়ে কাগজপত্র দেখার নামে টাকা আদায় করছিলেন। এ সময় মোটরসাইকেল চালক এক কাঠ ব্যবসায়ীর কাছ থেকে ১০ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন তিনি। পরে মনিরুজ্জামানকে ধরে পুলিশে দেন স্থানীয়রা।
এ ঘটনায় মনিরুজ্জামানের বিরুদ্ধে মনিরামপুর থানায় মামলা হয়েছে। পরে বিকেলে তাঁকে আদালতে হাজির করে পুলিশ। মনিরুজ্জামানের বাড়ি খুলনার খানজাহান আলী থানাধীন গিলেতলার আধরা ডাক্তারবাড়ি এলাকায়। তাঁর বাবা মিজানুর রহমান কুয়েত প্রবাসী।
মনিরুজ্জামানের দাবি, পাঁচ-ছয় বছর আগে তিনি একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং পাস করেছেন। সকালে মোটরসাইকেল নিয়ে ঘুরতে এসে শয়তানের ফেরে পড়ে তিনি রাস্তায় মোটরসাইকেল চালকদের দাঁড় করিয়ে কাগজপত্র দেখছিলেন। এ সময় জনগণ ধরে মারপিট করে তাঁর টাকা কেড়ে নিয়েছেন বলে দাবি করেন তিনি।
হাজিরহাটের আঠারোপাকিয়া গ্রামের কাঠ ব্যবসায়ী আরজান হোসেন বলেন, পাঁচকাটিয়া এলাকায় আমার শ্রমিকরা গাছ কাটার কাজ করছিলেন। সকালে বাড়ি থেকে মোটরসাইকেল চালিয়ে সেখানে যাচ্ছিলাম। পথে স্লুইসগেটের সামনে পৌঁছুলে সংকেত দিয়ে আমাকে দাঁড় করান মনিরুজ্জামান। আমি দাঁড়াতেই গাড়ির কাগজপত্র দেখতে চান। এরপর আমাকে ৫০০ টাকা জরিমানা করেন। আমার পকেটে ১০ হাজার টাকা ছিল। একপর্যায়ে টাকা দেখতে পেয়ে সেগুলো ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন মনিরুজ্জামান। এ সময় ধস্তাধস্তির একপর্যায়ে আশপাশের লোকজন চলে এসে মনিরুজ্জামানকে চ্যালেঞ্জ করেন।
আরজান বলেন, ওই লোকটি একা ছিলেন। তিনি যশোর ট্রাফিকের সার্জেন্ট পরিচয় দিয়েছেন। এ সময় লোকজনকে তিনটি পদকও দেখান তিনি। তখন সন্দেহ হলে লোকজন তাঁকে ধরে ফেলেন।
জসিম সরদার নামের এক পথচারী বলেন, সকাল ৯টার দিকে পাঁচকাটিয়া থেকে গরু কিনে বাড়ি ফিরছিলাম। পথে এ লোকটি (মনিরুজ্জামান) আমাকে সংকেত দেন। মোটরসাইকেলে আরো দুজন ছিলেন। আমি দাঁড়াতে কাগজপত্র দেখতে চেয়েছেন। পরে জরিমানার ভয় দেখিয়ে ৫০০ টাকা নেন।
জসিম বলেন, অনেক মোটরসাইকেল ধরে কাগজপত্র দেখতে চেয়ে চালকদের কাছ থেকে ২০০ থেকে ৫০০ টাকা করে নিয়েছেন মনিরুজ্জামান।
মনিরামপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আব্দুল হান্নান বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে ওই যুবকসহ তাঁর ব্যবহৃত মোটরসাইকেল জব্দ করে থানায় এনেছি।
মনিরামপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নূর-ই-আলম সিদ্দীকি বলেন, ওই যুবক সার্জেন্ট সেজে মোটরসাইকেল চালকদের আটকে টাকা নিচ্ছিলেন। ভুক্তভোগীদের অভিযোগের ভিত্তিতে ভুয়া পরিচয় দেওয়ার অপরাধে মামলা দিয়ে তাঁকে আদালতে সোপর্দ করেছি।