ছেলে-মেয়েকে নিয়ে খুলেছেন বিশ্ববিদ্যালয়, ৩ হাজার ভুয়া সনদ বিক্রি
দুই ছেলে ও এক মেয়েকে নিয়ে ভুয়া বিশ্ববিদ্যালয় খুলেছেন ষাটোর্র্ধ্ব নুরুল হক সরকার ওরফে শেখ গনি সরকার। সেই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এখন পর্যন্ত তারা তিন হাজার ভুয়া সনদও বিক্রি করেছেন। গনি সরকারের প্রতিষ্ঠিত ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম প্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলোজি। বাস্তবে এটির কোনো অস্তিত্ব নেই। গনি সরকারের দুই ছেলে নূর মোহম্মদ ও নূর আহমেদ। মেয়ের নাম নূর আফরোজ। বৃহস্পতিবার ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের হাতে আটক এই প্রতারক চক্র নিয়ে বিস্তারিত জানায় সংস্থাটি।
ডিবি জানায়, বুধবার রাজধানীর মালিবাগের প্যারামাউন্ট টাওয়ারে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃত প্রতারক চক্রটি বিগত প্রায় দুই দশক ধরে ‘প্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলোজি’- নামক ভুয়া প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে সার্টিফিকেট বিক্রয়ের ব্যবসা করতো। প্রতারণার উদ্দেশ্যে তারা ভুয়া ওয়েবসাইটে এবং বিভিন্ন পত্রপত্রিকা ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে চটকদার বিজ্ঞাপন দিতো। বিজ্ঞাপনে কম্পিউটারাইজড ক্যাম্পাসের কথা উল্লেখ থাকতো, যা বাস্তবে অস্তিত্বহীন। তারা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ভুয়া আদেশ ও একটি হাইকোর্টের জাল রিট প্রদর্শন করতো।
আরও পড়ুন- র্যাগ ডের নামে ‘নগ্ন-অশ্লীল’ কর্মকাণ্ড বন্ধে রিট
ডিবি আরও জানায়, তাদের রোগী দেখার চেম্বার ছিল অত্যাধুনিক উপায়ে সজ্জিত। নামফলক ছিল নানান গুরুত্বপূর্ণ ডিগ্রি সংবলিত। MBBS, BDS, MPhil, PHD, Engineering, Advocateship এই ধরনের ১৪৪টি বিষয়ের উপরে অসংখ্য সার্টিফিকেট প্রদান করে কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছে। তিনি বলেন, বাস্তবে Premier university of technology এর কোনো অস্তিত্ব নাই। একইভাবে ডা. মো. নুরুল হক সরকার নিজেকে Pitch Blende university of Science and technology (PUST) Ges Peace Land university নামক বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি হিসেবে নিজেকে পরিচয় দিতো। গ্রেপ্তার সাইদুর রহমান ওরফে নজরুল, দেবাশীষ কুণ্ডুু, আমান উল্লাহ, মাহফুজুর রহমান ওরফে মাহফুজসহ অসংখ্য ব্যক্তিকে ভুয়া ডাক্তারি সনদপত্রসহ অন্যান্য বহু বিষয়ে ভুয়া সনদপত্র প্রদান করেছে। ভুয়া ডাক্তার এমএন হক তার পরিবারের সদস্যসহ অন্যান্য সহযোগীদের সহায়তায় ভুয়া সনদপত্র প্রদানের একটি সংঘবদ্ধ চক্র গড়ে তোলে।
পুলিশ জানায়, চক্রটি কোনো রকম পরীক্ষা, ক্লাস ও বৈধ অনুমোদন ছাড়াই টাকার বিনিময়ে বিভিন্ন বিষয়ে ভুয়া ও জাল সার্টিফিকেট বিক্রয় করেছে। ভুয়া ডাক্তারি সনদ নিয়ে সারা দেশে ছড়িয়ে পড়া ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে চক্রের সঙ্গে জড়িত অন্যদের গ্রেপ্তারের জন্য অভিযান চলছে। এ ঘটনায় রমনা থানায় একটি মামলা হয়েছে।