টিউশনের টাকা চাওয়ায় পকেটে ইয়াবা ঢুকিয়ে পুলিশে দেওয়ার হুমকি
প্রাইভেট পড়ানোর বকেয়া টাকা চাওয়ায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) এক শিক্ষার্থীর পকেটে ইয়াবা ঢুকিয়ে মাদক ব্যবসায়ী সাজিয়ে পুলিশে দেওয়ার হুমকির অভিযোগ উঠেছে ছাত্রের অভিভাবকের বিরুদ্ধে। এই ঘটনায় রাজধানীর গুলশান থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী সাব্বির আহমেদ।
অভিযুক্ত ব্যক্তির নাম শাহ আশিকুল ইসলাম। তিনি পেশায় গার্মেন্টস ব্যবসায়ী। থাকেন রাজধানীর গুলশান এলাকায়। ভুক্তভোগী সাব্বির ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী।
জানা যায়, রাজধানীর আইডিয়াল স্কুলের (বনশ্রী শাখা) অষ্টম শ্রেণির এক শিক্ষার্থীকে গুলশানের বাসায় গিয়ে প্রাইভেট পড়ান সাব্বির আহমেদ। গত ৯ মার্চ বিকেলে প্রাইভেটের বকেয়া টাকা চাওয়ায় ঐ শিক্ষার্থীর অভিভাবক শাহ আশিকুল ইসলাম ক্ষীপ্ত হয়ে তাকে গালিগালাজ করেন এবং একপর্যায়ে পকেটে ইয়াবা ঢুকিয়ে পুলিশে দেওয়ার হুমকি দেয়। পরে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী ওই বাসা থেকে বেরিয়ে নিরাপত্তা শঙ্কায় গুলশান থানায় জিডি করেন।
আরও পড়ুন: অনুরোধ, মেডিকেলে প্রথম হয়ে পরে আবার বিসিএস দেবেন না
জিডিতে তিনি অভিযোগ করেন, আমি ২০১৯ সাল থেকে ২০২২ এর ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত অভিযুক্ত (আশিকুল) ব্যক্তির সন্তানকে প্রাইভেট পড়িয়েছি। আগে ঠিকমতো বেতনের টাকা দিলেও কয়েকমাস যাবত বেতনের টাকা ঠিকমতো দিচ্ছে না। পড়ানোর মোট পাওনা ৩১ হাজার টাকা বলে দাবি করেন এই শিক্ষার্থী। তিনি জিডিতে উল্লেখ করেন, উক্ত ৩১ হাজার টাকার মধ্যে আমাকে ১০ হাজার টাকার চেক দিয়েছে ফেব্রুয়ারির ১০ তারিখে, কিন্তু ব্যাংকের সেই একাউন্টে টাকা না থাকায় আমি টাকা তুলতে পারিনি।
ভুক্তভোগী সাব্বির জিডিতে উল্লেখ করেন, বর্তমানে টাকা চাইতে গেলে স্টুডেন্ট এর বাবা আশিকুল আমাকে ভয়ভীতি দেখায় ও হুমকি দেয়। গত ৯ মার্চ বিকেলে তাদের বাসায় গেলে পকেটে ইয়াবা ঢুকিয়ে দিয়ে মাদক ব্যবসায়ী সাজিয়ে পুলিশে দেওয়ার ভয় দেখায়।
অভিযোগের বিষয়ে শাহ আশিকুল ইসলামের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ওই ছেলে একটা মাদকাসক্ত। ফকিন্নির বাচ্চা। ওরে আগে সামনে পাই।আমাকে চিনে? মাস্তানি করে আমার সাথে না? ওরে আমি পুলিশে দিব।
আরও পড়ুন: মেডিকেলে সুযোগ পেয়েছে মেয়ে, খরচ যোগাতে চিন্তায় ভ্যানচালক বাবা
নিজেকে জাহির করে আশিকুল বলেন, আমি ঢাকা শহরে বড় হয়েছি ভাই। খোলামেলা বুক ফুলিয়ে চলি। প্রধানমন্ত্রীর একদম অন্ধভক্ত। সেই ৯৪ সাল থেকে কাজ করছি। রাস্তায় নেমে ফাইট (যুদ্ধ) করেছি। আমার বাবা, দাদারা মুক্তিযোদ্ধা ছিল। আমরা তো ফালতু পোলাপান না।
তবে পকেটে ইয়াবা ঢুকিয়ে ভয় দেখানোর কথা অস্বীকার করেন তিনি বলেন, ও আমার বাসায় কয়েক বছর ধরে পড়াতো, খুব ভালো ছেলে ছিলো। ছোট ভাইয়ের মতো দেখতাম। প্রশ্নই আসে না এমন করার।
এদিকে তদন্ত কর্মকর্তা ও গুলশান থানার উপ-পরিদর্শক শামীম হোসেনের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, সে (সাব্বির) গুলশান থানায় জিডি করেছে। তদন্তের জন্য আমি এটা কোর্টে আবেদন করেছি। আগামী ১৮ তারিখে হাজিরা আছে।