২৯ মার্চ ২০২২, ০৭:৩৮

আজই বরখাস্ত হচ্ছেন পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রীকে বিয়ে দেওয়া শিক্ষিকা

বেগমপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা শামসুন্নাহার  © সংগৃহীত

নিজের বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির এক ছাত্রীকে দশম শ্রেণিতে পড়ুয়া ছাত্রের সঙ্গে বিয়ে দেওয়ার ঘটনায় আজই বরখাস্ত হতে পারেন সহকারী শিক্ষিকা শামসুন্নাহার। বাল্যবিয়ের ঘটনায় তার জড়িত থাকার সত্যতা পাওয়ায় এ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। তিনি চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার বেগমপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা। আর ওই ছাত্র তার নিজের ছেলে।

এ ঘটনায় তদন্তকারী কর্মকর্তারা বাল্যাবিয়ের প্রমাণ পেয়েছেন। এখন শিক্ষিকা শামসুন্নাহারের বিরুদ্ধে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ করে চিঠি দিয়েছেন উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা উত্তম কুমার কুন্ডু। তিনি বলেন, ‘উপজেলা সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা মাসুমা আক্তার ঘটনাস্থলে গেলে বিষয়টি স্বীকার করে লিখিত দিয়েছেন ওই শিক্ষিকা। এ ঘটনায় ইউএনও ও জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা বরাবর ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ জানিয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছে।’

এ বিষয়ে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘ওই শিক্ষিকার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শামীম ভূঁইয়া বলেন, ‘অপ্রাপ্তবয়স্ক ছেলের সঙ্গে অপ্রাপ্তবয়স্ক ছাত্রীর বিয়ে দিয়ে ওই শিক্ষিকা আইন লঙ্ঘন করেছেন, অপরাধ করেছেন। আমরা এর সত্যতা পেয়েছি। জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা কর্তৃক মঙ্গলবার ওই শিক্ষিকার সাময়িক বরখাস্তের চিঠি পাব। এরপর বরখাস্ত করা হবে তাকে।’

আরো পড়ুন: ১০ম শ্রেণির ছাত্রের সঙ্গে ৫ম শ্রেণির ছাত্রীর বিয়ে দিলেন শিক্ষিকা মা

এর আগে চুয়াডাঙ্গার বেগমপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ওই শিক্ষিকা দশম শ্রেণিতে অধ্যয়নরত নিজের ছেলের বিয়ে দেন পঞ্চম শ্রেণিতে অধ্যয়নরত এক ছাত্রীর সঙ্গে। গত শুক্রবার বিয়ের পর বিষয়টি কয়েকদিন গোপন থাকলেও সোমবার (২৮ মার্চ) তা জানাজানি হয়। বিষয়টি স্বীকারও করেছেন ওই শিক্ষিকা শামসুন্নাহার।

জানা গেছে, গত শুক্রবার দুই পরিবারের সদস্যরা গোপনে বিয়ের আয়োজন করে। পরে জানাজানি হলে সহকারী উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা সরেজমিনে ঘটনার সত্যতা পানন। এ ঘটনায় ওই স্কুলশিক্ষিকাকে কারণ দর্শানো নোটিশ দেওয়া হয়েছে।

শিক্ষিকা শামসুন্নাহারের দাবি, তার ছেলে সম্প্রতি পঞ্চম শ্রেণির এক ছাত্রীর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলে। এরপর বিয়ের দাবিতে সে নাওয়া-খাওয়া ছেড়ে দেয়। এমনকি আত্মহত্যারও চেষ্টা চালায়। যে কারণে বাধ্য হয়ে তাদের বিয়ে দিয়েছেন।

লিখিত বক্তব্যে ওই স্কুলশিক্ষিকা বলেন, ‘আমার ছেলে আমারই বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির এক ছাত্রীর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলে। একপর্যায়ে নাওয়া-খাওয়া ছেড়ে দিয়ে অস্বাভাবিক আচরণ শুরু করে এবং আত্মহত্যার চেষ্টা চালায়। মেয়েটির মা তিন সন্তান রেখে অন্যত্র চলে গেছেন এবং বাবা দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী। আমি মেয়েটির অসহায়ত্বের কথা চিন্তা করে এ অন্যায় কাজটি মেনে নিতে বাধ্য হয়েছি। কাজটি আইনগত দিক থেকে অবশ্যই অন্যায় হয়েছে। এ জন্য আমি আন্তরিকভাবে দুঃখিত ও ক্ষমাপ্রার্থী।’