অনৈতিক কার্যকলাপের অভিযোগে তরুণ-তরুণী নির্যাতন, ভিডিও ভাইরাল
অনৈতিক কার্যকলাপের অভিযোগে এনে যশোর সদর উপজেলার চুড়ামনকাটি ইউনিয়নের আব্দুলপুর গ্রামে তরুণ-তরুণীর ওপর অকথ্য নির্যাতন চালানো হয়েছে। গত ১৫ মার্চ রাতে এই ঘটনার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়ার পর অভিযুক্তদের একজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। বাকিরা গা ঢাকা দিয়েছেন, যাদের মধ্যে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ সদস্যও রয়েছেন।
আব্দুলপুর গ্রামের বাসিন্দা ওই তরুণ-তরুণীর পরিবারের অভিযোগ, মিথ্যে অভিযোগ এনে দুইজনকে নির্যাতন করেছেন ইউপি সদস্য ও তার সহযোগীরা।
তরুণীর বাবা ইতোমধ্যে যশোরের কোতোয়ালি মডেল থানায় চার জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছেন। পরে পুলিশ বিষয়টি মামলা হিসেবে নথিভুক্ত করে একজনকে আটক করেছে।
যশোর কোতয়ালী মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) তাজুল ইসলাম জানান, মারধরের ভিডিও দেখে চিহ্নিত ১ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলমান রয়েছে।
নির্যাতনের শিকার তরুণীর বাবার অভিযোগ, গত ১৫ মার্চ সন্ধ্যায় তার মেয়ে নিকটাত্মীয় এক তরুণের সঙ্গে বাইসাইকেলে করে চুড়ামনকাটি ইউনিয়নের এনায়েতপুর গ্রামে ওয়াজ মাহফিল শুনতে যায়। ফেরার পথে তাদের বাইসাইকেল গতিরোধ করে অনৈতিক কার্যকলাপের অভিযোগে এনে দুজনকেই অশালীন কথাবার্তা বলতে থাকেক তারা। সেখানে উপস্থিত ছিলেন ইউপি সদস্য আনিচুর রহমান, আইযুব আলী, ভুট্ট, আব্দুল আলীমসহ অজ্ঞাত ৪-৫ জন।
তিনি আরও বলেন, একপর্যায়ে তাদের দুইজনকে নিয়ে একটি দোকানের ভিতরে বেধড়ক মারপিট করতে থাকে তারা। খবর পেয়ে তাদের দুজনকে বাঁচাতে গেলে আমাকেও ধাক্কা দিয়ে তারা চলে যায়। তাদের দুজনকে বিনা দোষে অমানবিক নির্যাতন করেছে। এই নির্যাতনকারীদের বিচার চাই।
এদিকে, গতকাল শুক্রবার ভাইরাল হওয়া ১ মিনিট ২৯ সেকেন্ড এবং ৪৪ সেকেন্ডের দুটি ভিডিওটিতে দেখা যায়, একটি দোকানে অর্ধশতাধিক দোকানের ভিতরে তরুণীকে এলোপাতাড়ি জুতা পিটা করছে ইউপি সদস্য আনিচুর রহমান। ওই তরুণী মাটিতে লুটিয়ে পড়লেও ইউপি সদস্যর পাশে থাকা কয়েক যুবক লাথিও দেন।
অনৈতিক কার্যকলাপের অভিযোগের তরুণীর সাথে থাকা তরুণকেও এলোপাতাড়ি মারধর করছে ইউপি সদস্য ও তার সাথে থাকা কয়েকজন যুবক।
পরে আর একটি ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে কয়েক যুবক তরুণীর হাত ও পা ধরে রেখেছে। ইউপি সদস্যের সঙ্গে থাকা আইয়ুব, ভুট্ট আর আব্দুল আলীমসহ তিন থেকে ৪ জন লাঠি দিয়ে তরুণীর হাতে, পায়ের গুড়ালিতে বেধড়ক মারপিট করছেন।
নির্যাতনের শিকার ওই তরুণ-তরুণী বার বার ছেড়ে দেওয়ার কথা বললেও তারা তাতে কর্ণপাত করেননি। দুই তরুণ-তরুণীকে মাথা ন্যাড়া করে দেওয়ার কথাও শুনা যায় ওই ভিডিও দুটিতে। অভিযুক্ত ইউপি সদস্য আনিচুর রহমানকে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি সাড়া দেননি।
এ বিষয়ে চুড়ামণকাটি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান দাউদ হোসেন বলেন, এর আগেও অনেকবার অনৈতিক কার্যকলাপের অভিযোগ উঠেছে মেয়েটির বিরুদ্ধে। ভিডিওটি ভাইরাল হলে আমি মোবাইলে ইউপি সদস্যের সাথে কথা বলেছি সত্য ঘটনাটি জানার জন্য। মেয়ে ও ছেলেটি যদি অন্যায় করেও থাকে তাহলে এইভাবে নির্যাতন করা উচিত হয়নি। ইউপি সদস্য আসলেই অন্যায় করেছে।