ছেলেকে শাসন করায় শিক্ষককে পেটালেন বাবা, এরপর...
ক্লাসে অন্যদের জ্বালাতন করছিলেন এক ছাত্র। অনেক বকাঝকা করেও লাভ হয়নি। শেষে তাকে চড় মেরে শাসন করেন শিক্ষক। এতে রেগে গিয়ে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে ক্লাস থেকে বেরিয়ে বাড়ি চলে যায় ছাত্র। পরে বাবাকে ডেকে নিয়ে আসেন। বাবা ওই শিক্ষককে মারধর শুরু করেন। তবে এরপর ঘটে যায় তুলকালাম।
ঘটনাটি ঘটেছে ফুলবাড়িয়ার মোহাম্মদনগর উচ্চ বিদ্যালয়। শিক্ষক মো. আকরাম হোসেনকে এভাবে মারধর করেছেন বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সাবেক অভিভাবক সদস্য আব্দুল্লাহ আল মামুন। বুধবার (১৬ মার্চ) দুপুরে বিদ্যালয়ে এ ঘটনার পর শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা তাঁকে অন্তত চার ঘণ্টা অবরুদ্ধ করে রাখেন। এ সময় বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ করেন তাঁরা।
পরে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যায় পুলিশ। ক্ষমা চেয়ে রক্ষা পান বাবা ও ছেলে। শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বুধবার ১০টার দিকে দশম শ্রেণির ইংরেজি ক্লাস চলাকালে ছাত্র মেহরাব অন্যদের বিরক্ত করছিল। বিষয়টি দেখে শিক্ষক আকরাম হোসেন তাঁকে চড় মেরে ধমক দেন। এ সময় ওই শিক্ষককে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করার পর স্কুলে ব্যাগ রেখে বাড়ি চলে যায় সে।
কিছুক্ষণ পরে তার বাবা আব্দুল্লাহ আল মামুন উপস্থিত হয়ে স্টাফ রুম থেকে ওই শিক্ষককে বের করে চড়-থাপ্পড় মারা শুরু করেন। এ দৃশ্য বিদ্যালয়ের অন্যান্য শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা দেখে তাঁকে ঘিরে ধরে আটকিয়ে রাখেন। পরে বিক্ষোভ শুরু করেন।
শিক্ষক মো. আকরাম হোসেন বলেন, ‘ক্লাসে শিক্ষার্থীদের বিরক্ত করলে ওই ছাত্রকে ধমক দেওয়ায় সে আমাকে গালিগালাজ করে বাড়ি চলে যায়। কিছুক্ষণ পর তার বাবা এসে মারপিট করে আমাকে।’
আরো পড়ুন: স্বাধীনতা পদক পাওয়া আমির হামজা ছিলেন যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামি
প্রধান শিক্ষক মো. শাহদত হোসেন বলেন, ‘সাবেক অভিভাবক সদস্য শিক্ষককে মারপিট করেছে, যা খুবই দুঃখজনক। এ ঘটনায় শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা তাঁকে আটকে রেখে বিচার দাবি করেন। পরে সবার উপস্থিতিতে ক্ষমা চেয়ে মুচলেকা দেওয়ায় চেয়ারম্যানের জিম্মায় ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।’
এদিকে অভিভাবক আব্দুল্লাহ আল মামুন এ ধরনের কাজ করা ঠিক হয়নি বলে দুঃখ প্রকাশ করেছেন।
এ বিষয়ে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান পালাশ বলেন, ‘সবার উপস্থিতিতে ওই অভিভাবক ও ছাত্র ক্ষমা চাওয়ায় বিষয়টি মীমাংসা করে দিয়েছি।’