বিসিএস ক্যাডার হওয়ার স্বপ্ন পূরণের আগেই ঝুললো ফাঁসিতে
বিসিএস ক্যাডার হওয়ার প্রবল স্বপ্ন ছিল সাদিয়া সাথীর। স্বপ্ন সফল করতে আপ্রাণ চেষ্টাও চালিয়ে যাচ্ছিলেন তিনি। কিন্তু যুদ্ধে জয়ী হওয়ার আগেই আত্মহননের পথ বেছে নিলেন সাদিয়া সাথী (২৪)। আজ সোমবার (৭ মার্চ) দুপুরে বরিশাল সিটি করপোরেশনের ২০ নম্বর ওয়ার্ডের বৈদ্যপাড়া এলাকার ভাড়া বাসার পঞ্চমতলা থেকে সাদিয়ার ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
সাদিয়ার মরদেহ উদ্ধারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বরিশাল মহানগর পুলিশের কোতোয়ালি মডেল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) রেজাউল ইসলাম রেজা। তিনি জানান, সাদিয়া সাথীর ৮ বছরের একটি কন্যাশিশু রয়েছে।
জানা গেছে, বাবুগঞ্জ উপজেলার কেদারপুর ইউনিয়নের পূর্ব ভূতেরদিয়া গ্রামের সিরাজুল ইসলাম ও ফাতেমা বেগম দম্পতির মেয়ে সাদিয়া সাথী। স্বামী মাইনুল ইসলাম একটি বেসরকারি কোম্পানিতে চাকরি করেন। স্থানীয়দের দাবি, স্বামীর সঙ্গে সাদিয়ার কলহের কারণে পারিবারিকভাবে ডিভোর্স হওয়ার কথা ছিল।
পাশের ফ্লাটের বাসিন্দারা জানায়, মেয়েকে শের-ই-বাংলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পৌঁছে দিয়ে এসে বাসার দরজা আটকে দেন সাদিয়া। অনেকক্ষণ ডাকাডাকি করে সাড়াশব্দ না পেয়ে প্রতিবেশীরা চিন্তিত হয়ে ৯৯৯ এ ফোন করে পুলিশকে খবর দেয়। দুপুর ১টার দিকে ঘটনাস্থলে গিয়ে সিলিং ফ্যানের সঙ্গে গলায় দড়ি দেওয়া অবস্থায় ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
এসআই রেজাউল ইসলাম রেজা বলেন, সাদিয়ার পড়ার টেবিলের সামনের দেয়ালে কাগজে লেখা ছিল ‘আই হ্যাব টু বি এ বিসিএস ক্যাডার’। ঘরে প্রচুর বই ছিল, বিসিএস কোচিং করত। বোঝা যায় বিসিএস ক্যাডার হওয়ার জন্য কঠোর চেষ্টা ছিল সাদিয়ার। তবে সাদিয়ার পরিবারের কাছ থেকে এখন পর্যন্ত মৃত্যুর বিষয়ে কোনো অভিযোগ পাওয়া যায়নি।
তিনি আরও বলেন, এমনকি সাদিয়ার বাবা-মাও জানাতে পারেননি কী কারণে সাদিয়া আত্মহত্যা করেছে। তবে আমরা কারণ অনুসন্ধানের করছি। মেয়েকে নিয়ে ভাড়া বাসায় একাই থাকেন সাদিয়া। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য শের-ই-বাংলা চিকিৎসা মহাবিদ্যালয় (শেবাচিম) হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়।
কোতোয়ালি মডেল থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন উপপরিদর্শক রেজাউল ইসলাম। স্বামী মাইনুল করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে বাসায় চিকিৎসাধীন বলে পুলিশ জানিয়েছে।