পাঁচ ভাইকে চাপা দেওয়া চালকের লাইসেন্স ছিল না: র্যাব
কক্সবাজারের চকরিয়ায় বাবার শ্রাদ্ধ শেষে ফেরার পথে বেপরোয়া গতির পিকআপ চাপায় নিহতের ঘটনায় সেই চালক সহিদুল ইসলাম ওরফে সাইফুলকে রাজধানীর মোহাম্মদপুর থেকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। তার গাড়ি চালানোর লাইসেন্স ছিল না। দুর্ঘটনার সময় বেপরোয়া গতিতে পিকআপ চালাচ্ছিলেন তিনি।
শনিবার (১২ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে রাজধানীর কারওয়ানবাজারে র্যাবের মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান র্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।
আরও পড়ুন: শাবিপ্রবি শিক্ষার্থীদের আন্দোলন প্রত্যাহার
গত ৮ ফেব্রুয়ারি চকরিয়ার মালুমঘাটে একসঙ্গে পাঁচ ভাইকে চাপা দিয়ে মারে একটি পিকআপ। তারা হলেন-অনুপম সুশীল, নিরুপম সুশীল, দীপক সুশীল, চম্পক সুশীল ও স্বরণ সুশীল। এ দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত হয়েছেন তাদের আরেক ভাই রক্তিম সুশীল এবং বোন হীরা সুশীল। রক্তিম বর্তমানে চট্টগ্রাম মহানগরীর একটি হাসপাতালে লাইফ সাপোর্টে রয়েছেন।
গত ৩০ জানুয়ারি তাদের বাবা সুরেশ চন্দ্র সুশীল বার্ধক্যজনিত কারণে মারা যান। গত ৮ ফেব্রুয়ারি অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার অংশ হিসেবে পূজা শেষ করে তারা ৯ ভাই-বোন চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের মালুমঘাট বাজারের কাছে রাস্তা পার হওয়ার জন্য অপেক্ষা করছিলেন। তখন তাদের চাপা দেয় বেপরোয়া গতির পিকআপটি।
র্যাব কর্মকর্তা জানান, দুর্ঘটনার পর পালিয়ে যান পিকআপ চালক সাইফুল। র্যাব-১৫ এর সদস্যরা গতকাল শুক্রবার রাতে রাজধানীর মোহাম্মদপুর বাসস্ট্যান্ড এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে।
আরও পড়ুন: শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলায় আপত্তি নেই: স্বাস্থ্যমন্ত্রী
সাইফুলের বরাত দিয়ে র্যাব জানায়, ঘটনার দিন ভোরে তারেক ও রবিউল নামে দুইজনসহ চকরিয়া থেকে কক্সবাজারের উদ্দেশ্যে সবজি বোঝাই পিকআপ নিয়ে রওনা হন তিনি। রাস্তায় ঘন কুয়াশা থাকা সত্ত্বেও সাইফুল দ্রুতগতিতে গাড়ি চালাচ্ছিলেন। মালুমঘাট বাজারের নার্সারি গেটের সামনে রাস্তা পার হওয়ার জন্য অপেক্ষারতদের তিনি দূর থেকে দেখতে পারেননি। কাছাকাছি এসে লক্ষ্য করলেও বেপরোয়া গতি নিয়ন্ত্রণ করতে পারেননি সাইফুল। গাড়িটি ৬৫-৭০ কিলোমিটার গতিতে চলছিল। যে কারণে ব্রেক কষলেও সেটি সামনে ১০০ ফুটের মতো চলে যায়। দুর্ঘটনার পর পিকআপ মালিকের ছেলে তারেকের নির্দেশে সাইফুল পালিয়ে যান।
র্যাব আরও জানায়, তার কোনো ড্রাইভিং লাইসেন্স না থাকলেও দুই বছর যাবত বিভিন্ন ধরনের গাড়ি চালিয়ে যাচ্ছিলেন। দুর্ঘটনার এক সপ্তাহ আগে থেকে পিকআপটি চালানো শুরু করেন, তার আগে বান্দরবানের লামায় একটি রাবার বাগানে চাকরি করতেন তিনি।
র্যাব জানায়, সাইফুল মালুমঘাট বাজারের একটি স্থানে গাড়ি থামিয়ে মালিককে ফোন করে দুর্ঘটনার বিষয়টি জানান। মালিক তাকে গাড়ি পরবর্তী কোনো স্টপেজে রেখে লোকাল বাসে করে তার সঙ্গে দেখা করতে বলেন। পরে সাইফুল ডুলাহাজরায় পিকআপটি রাখে এবং চকরিয়ায় গিয়ে মালিকের সঙ্গে দেখা করেন। পরে আত্মগোপন করেন।