২ লাখ টাকায় ঢাবিতে ভর্তি!
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে দুই লাখ টাকায় ভর্তির সুযোগ করে দেয়ার ফাঁদ পেতেছেন এক ব্যক্তি। নিজেকে শিক্ষা সচিব পরিচয় দেয়া ওই ব্যক্তি দুই লাখ টাকার বিনিময়ে ঢাবিতে ভর্তি করিয়ে দেয়ার প্রলোভন দেখাচ্ছেন শিক্ষার্থীদের। এজন্য তাকে অগ্রিম দিতে হবে ৫০ হাজার টাকা।
শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে এমন অভিযোগ পেয়ে ওই ব্যক্তির সাথে যোগাযোগ করে জানা যায়, তার নাম শহিদুল বিশ্বাস। ফেসবুক প্রোফাইলে দেয়া তথ্য অনুযায়ী তিনি ঢাবির সাবেক শিক্ষার্থী এবং ৩৩তম বিসিএস ক্যাডার। তবে তার এসব পরিচয়ের কোনো সত্যতা পাওয়া যায়নি।
ভর্তি পরীক্ষার প্রস্তুতি নেয়া শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, গত কয়েকদিন ধরে শহিদুল সামাজিক যোগযোগমাধ্যমে ভর্তি পরীক্ষা সংক্রান্ত একাধিক গ্রুপে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির প্রলোভন দেখাচ্ছেন। তার এই ফাঁদে কয়েকজন শিক্ষার্থী পা-ও দিয়েছেন। প্রথমে শিক্ষার্থীদের প্রলোভন দেখিয়ে তাদের কাছে অগ্রম টাকা চাওয়া হচ্ছে। কেউ দিতে রাজি হলে তার এইচএসসি পরীক্ষার প্রবেশপত্রের ছবি চাওয়া হচ্ছে। কারো সন্দেহ হলে তাকে ব্লক করে দেয়া হচ্ছে।
আরও পড়ুন: সান্ধ্য কোর্স থাকছে ঢাবিতে
শিক্ষার্থীদের এসব অভিযোগের বিষয়ে অনুসন্ধানে নামে দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস। নিজেকে শিক্ষার্থী পরিচয় দিয়ে ওই ব্যক্তির সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি এই প্রতিবেদকের কাছে জানতে চান- কি কাজ করাবেন? প্রতিউত্তরে তাকে ঢাবিতে ভর্তি করিয়ে দেয়ার কথা বলা হলে তিনি ২ লাখ টাকা লাগবে বলে জানান। সেই সাথে ৫০ হাজার টাকা এডভান্সও করতে বলেন। পরবর্তীতে সন্দেহ হওয়ায় তিনি এইচএসসির রেজিস্ট্রেশন কার্ড চান।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সূত্রগুলো বলছে, শহিদুল বিশ্বাস নামে কোন শিক্ষা সচিব মন্ত্রণালয়ে নেই। সদ্য বিদায়ী শিক্ষা সচিবের নাম মো. মাহবুব হোসেন। মাহবুব হোসেনের পূর্বে ছিলেন সোহরাব হোসাইন। যিনি বর্তমানে পিএসসির চেয়ারম্যান হিসেবে কর্মরত আছেন। এছাড়া বর্তমান শিক্ষা সচিবের নাম মো. আবু বকর ছিদ্দীক। তিনি এখনো শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে যোগদান করেননি।
আরও পড়ুন: কলেজে ৫ লাখ আসন ফাঁকা থাকবে
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি সংক্রান্ত একটি গ্রুপের বিভিন্ন পোস্টের কমেন্টে শহিদুল বিশ্বাস লিখেছেন- ‘‘সরাসরি ভর্তি হতে চাইলে যোগাযোগ করো। ১০০% পাবলিক যেকোন বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স করে দেব। ৭ কলেজে ভর্তি ইচ্ছে মতো, ন্যাশনালে ভর্তি, ঢাবি-জবিসহ যেকোন ইউনিভার্সিটি, গুচ্ছ ন্যাশনাল, ওয়েটিং থেক ভর্তি, মেরিট লিস্ট দূরে থাকলে টেনে ভালো সাবজেক্টে ভরি, যে কোন ধরনের রেজাল্ট চেইঞ্জের বিষয়ে কাজ করা হয়। ইনবক্সে মেসেজ করুন।’’
এটিকে প্রতারণার ফাঁদ বলে আখ্যা দিয়েছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশনস বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) ফারুক হোসেন। দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে তিনি বলেন, ফেসবুকে প্রতিনিয়ত এমন অসংখ্য ঘটনা ঘটে। এগুলো থেকে শিক্ষার্থীদের সচেতন থাকতে হবে।
আরও পড়ুন: প্রয়োজনে লকডাউন দেয়া হতে পারে
তিনি আরও বলেন, আমরা প্রতিনিয়ত এ ধরনের প্রতারণার অভিযোগ পেয়ে থাকি। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এই ঘটনাগুলো বেশি দেখা যায়। এ থেকে বাঁচার একমাত্র উপায় সচেতন হওয়া। পড়ালেখা ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির ভিন্ন কোনো উপায় নেই বলেও জানান তিনি।