স্কুলছাত্রীকে গণধর্ষণ ও হত্যা, সুষ্ঠু বিচারের দাবি পরিবারের
কুষ্টিয়ায় নবম শ্রেণীর ছাত্রী গণধর্ষণ ও নৃশংস হত্যার সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচারের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছে নিহতের পরিবার। এর আগে ময়নাতদন্তের রিপোর্টে উল্লিখিত গণধর্ষণের ঘটনা পাল্টে পুলিশ একজন আসামিকে অভিযুক্ত করে মামলায় নেয়। এখন এই হত্যা মামলার একমাত্র আসামি জেলার মিরপুর উপজেলার কলেজছাত্র আপন। আর নিহত স্কুলছাত্রী উম্মে ফাতেমা যার বয়স ছিল ১৪ বছর।
রবিবার (২১ নভেম্বর) বেলা সাড়ে ১০টায় কুষ্টিয়া প্রেস ক্লাবের এম এ রাজ্জাক মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে নিহত ছাত্রীটির পরিবারের পক্ষ থেকে এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচারের দাবি জানানো হয়।
সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন নিহত স্কুলছাত্রী উম্মে ফাতেমার পিতা খন্দকার সাইফুল ইসলাম।
এ সময় নিহত স্কুলছাত্রী উম্মে ফাতেমার মা হালিমা খাতুনসহ ও অন্যান্য স্বজনরাও উপস্থিত ছিলেন।
নিহত ছাত্রীর পিতা লিখিত বক্তব্যে অভিযোগ করেন, হত্যার পর পরিবারের পক্ষ থেকে ৪-৫ জনকে আসামি করার কথা বলা হলেও পুলিশ তা না করেই মাত্র একজনকে আসামি রেখে তাদের কাছ থেকে এজাহারে স্বাক্ষর করে নেয়। পরবর্তীতে এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনা আসামি আপনের একার পক্ষে ঘটানো সম্ভব নয় জানিয়ে পরিবারের পক্ষ থেকে কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপার, খুলনা রেঞ্জের ডিআইজি এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগে লিখিত আবেদন করা হলেও পুলিশ কিছুতেই তাদের কথা আর আমলে নিচ্ছে না।
সংবাদ সম্মেলনের লিখিত বক্তব্যে তিনি আরও জানান, গত ১৫ জুলাই সকালে কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার ভাঙা বটতলা এলাকায় একটি ভুট্টা ক্ষেত থেকে নবম শ্রেণীর স্কুলছাত্রী উম্মে ফাতেমার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় ওই দিন রাতেই পুলিশ মিরপুর পৌরসভার কুরিপোল মধ্যপাড়া এলাকার রংমিস্ত্রি মিলনের ছেলে ও আমলা সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী আপনকে গ্রেপ্তার করে। পরের দিন কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপার সংবাদ সম্মেলন করে দাবি করেন গ্রেফতারকৃত আসামি কলেজছাত্র আপন একাই ধর্ষণ শেষে স্কুল ছাত্রী ফাতেমাকে হত্যা করেছে। এরপরে আদালতে আসামি কলেজছাত্র আপন স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করে।
এদিকে গত ৯ নভেম্বর আদালতে দাখিলকৃত ফাতেমার ময়নাতদন্ত রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে ফাতেমাকে নৃশংসভাবে হত্যা করার আগে দলবদ্ধভাবে ধর্ষণ করা হয়েছে। দলবদ্ধ ধর্ষণের কারণেই তার যৌনাঙ্গের ভিতরে এবং বাইরে ক্ষত চিহ্ন রয়েছে।
সম্মেলনে তার পরিবারের পক্ষ থেকে অবিলম্বে মামলাটি সিআইডি অথবা পিবিআইর হাতে ন্যস্ত করার দাবি জানানো হয়।
এ ঘটনায় ধর্ষণ ও হত্যার বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপার খায়রুল আলম জানান, “এটি মেডিকেল রিপোর্ট। ডিএনএ রিপোর্ট আসার পরই এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”
একই বিষয়ে জানতে কুষ্টিয়ার মিরপুর থানার পুলিশ পরিদর্শক জনাব মোঃ রফিকুল ইসলামের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তার নম্বরটি বন্ধ পাওয়া যায়।