ই-কমার্সের নামে প্রতারণা, গ্রেফতার ৩
ই-কমার্সের কয়েকটি সাইটে মুখরোচক বিজ্ঞাপন দিয়ে ভুয়া পরিচয়ে অগ্রিম লক্ষাধিক টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে গ্রেফতার হয়েছেন রাজধানীর একটি প্রতারক চক্র। প্রতারণামূলক এ ব্যবসায় তারা পুলিশের পরিচয় ব্যবহার করতো। আর এরপরই হয়ে যেতো লাপাত্তা।
শুক্রবার (১৯ নভেম্বর) প্রতারণায় লিপ্ত ওই চক্রটির ৩জন সদস্যকে অবশেষে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি ) সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম বিভাগ।
প্রতারণার শিকার খিলগাঁওয়ের আবু বকর সিদ্দিকী জানান, একটি ই-কমার্স সাইটে মোবাইলের বিজ্ঞাপন দেখে অর্ডার দিলে বিক্রেতা তার কাছে বিকাশে অগ্রিম টাকা চান। টাকা নেয়ার পরে মোবাইল ফোনটি বাসার ঠিকানায় ডেলিভারি দেয়া হয়েছে বলে জানায় প্রতারক। প্রমাণস্বরূপ বেশ পরিচিত কুরিয়ারের একটি চালানও পাঠানো হয়। কিন্তু মাস পেরিয়ে গেলেও ফোনের খোঁজ মেলেনি। এরপর হঠাৎ করে বন্ধ হয়ে যায় প্রতারকদের ফোন নম্বরগুলো। এমনকি ওই অনলাইন সাইট থেকেও তাদের তথ্যগুলো উধাও হয়ে যায়।
একই অবস্থা কুমিল্লার মেহেদী হাসান ও গাজীপুরের তারেক হোসেনের বেলায়ও। তারা সবাই একই প্রতারকের কাছ থেকে পণ্য কিনতে গিয়ে ফাঁদে পড়েন। ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, প্রতারকদের একজন নিজেকে পুলিশ সদস্য পরিচয় দিয়ে আইডি কার্ডও দেখাতো।
বেশ কয়েকমাস ধরে অনলাইন সাইটে মোবাইল, বিদেশি পণ্য ও পুরনো গাড়িসহ নানা সামগ্রীর ছবিসহ বিজ্ঞাপন দিয়ে পণ্য বিক্রির নামে অনেকের কাছ থেকে লক্ষাধিক টাকা হাতিয়ে নেয়ার পর অবশেষে প্রতারক চক্রের তিন হোতা শিখন, আল-আমিন এবং বিপ্লবকে গ্রেফতার করা হলো। পণ্যের অর্ধেক দাম হিসাবে অগ্র্রিম ডেলিভারি চার্জ নির্ধারণ করতো তারা।
সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম বিভাগের উপপুলিশ কমিশনার মুহাম্মদ শরীফুল ইসলাম জানান, গ্রামের সহজ-সরল মানুষের এনআইডি দিয়ে বিকাশ একাউন্ট খুলে এই চক্রটি এতদিন ধরে প্রতারণামূলক লেনদেন চালিয়ে আসছে। এরা ভুয়া ফোন নম্বর, ই-মেইল এবং অনলাইন প্রতিষ্ঠানের ভুয়া আইডি খুলে প্রতারণা করতো।
তিনি আরো বলেন, গ্রাহকের বিশ্বাস অর্জন করতে প্রতারক চক্রটি প্রথমে পুলিশ সদস্য পরিচয় দিয়ে জাতীয় পরিচয়পত্র পাঠাতো ক্রেতার কাছে। তারপর একটি কুরিয়ার সার্ভিসের বুকিং স্লিপ পাঠাতো। জাতীয় পরিচয়পত্র ও কুরিয়ার সার্ভিসের আসল বুকিং বই তারা প্রতারণা করে সংগ্রহ করেছিল। অনলাইন সাইটে বিজ্ঞাপন দিয়ে মোবাইল ফোন বিক্রির নামে মানুষের কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে চক্রটি।
তাই ঝুঁকি এড়াতে পণ্য হাতে পাওয়ার আগে টাকা পরিশোধ না করার পরামর্শ মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি)।