সেনাবাহিনীতে চাকরির কথা বলে বাসায় নিতেন পরীক্ষা, নিয়োগপত্রও দিতেন
নিয়োগ সেনাবাহিনীতে। আর পরীক্ষা নিতেন নিজ বাসায়। স্বাস্থ্য পরীক্ষাও করাতেন প্রাইভেট ক্লিনিকে। দিতেন নিয়োগপত্রও। বিনিময়ে হাতিয়ে নিতেন মোটা অংকের অর্থ। আজ শনিবার (২০ নভেম্বর) রাজশাহীর তানোর থেকে এই চক্রের দুই সদস্যকে আটক করেছে র্যাব-৫ রাজশাহীর মোল্লাপাড়া ক্যাম্প।
আটক দুজন হলেন- তানোর উপজেলার কলমা ইউনিয়নের ভালুকা এলাকার শফিকুল ইসলাম ওরফে বাবুল ও রাজশাহী মহানগরীর চন্দ্রিমা এলাকার আনোয়ার হোসেন ওরফে সাবের আলী।
র্যাব জানায়, সেনাবাহিনীর সামরিক ও বেসামরিক বিভিন্ন পদে নিয়োগের নামে অর্থ হাতিয়ে নিতেন এই দুই প্রতারক। এ ঘটনায় তাদের বিরুদ্ধে তানোর থানায় মামলা করা হয়েছে।
প্রতারকদের ধরতে অভিযানে নেতৃত্ব দেন র্যাব-৫ এর কোম্পানি কমান্ডার মেজর নাজমুস শাকিব। তিনি জানান, সেনাবাহিনীতে চাকরির নামে গত জানুয়ারিতে তানোরের রঞ্জুর কাছে সাড়ে ৭ লাখ, আলমগীরের কাছে ৮ লাখ এবং মেহেদী হাসানের কাছে ৭ লাখ টাকা চান প্রতারক শফিকুল ইসলাম ও সাবের আলী। নিয়োগপত্র পাওয়ার পরই টাকা নেওয়ার কথা হয়।
জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে নগরীর চন্দ্রিমা এলাকায় সাবের আলীর বাসায় লিখিত পরীক্ষায় অংশ নেন চাকরি প্রত্যাশীরা। পরে ঢাকায় নিয়ে গিয়ে একটি প্রাইভেট ক্লিনিকে তাদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করানো হয়। শারীরিক যোগ্যতা ঠিক আছে জানিয়ে চাকরি প্রত্যাশীদের বাড়ি পাঠিয়ে দেন প্রতারকরা। ওই সময় জানানো হয়, তারা ১৫ দিনের মধ্যে নিয়োগপত্র পেয়ে যাবেন।
গত ২ ফেব্রুয়ারি নিয়োপত্র এসেছে বলে চাকরি প্রত্যাশীদের জানান দুই প্রতারক। সাবের আলীর বাসায় ডেকে তাদের নিয়োগপত্রের অংশ বিশেষ দেখানো হয়। তা দেখেই কয়েক দফায় রঞ্জু সাড়ে ৪ লাখ ও আলমগীর আড়াই লাখ টাকা দেন। মেহেদীও দেন মোটা অংকের অর্থ।
পরে তারা নিয়োগপত্র হাতে পান। তাদের জানানো হয়, তারা যোগদান করবেন জুনে। ওই সময় প্রতিশ্রুতির বাকি অর্থ দিতে হবে। এ নিয়ে ফাঁকা চেক এবং স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নেন দুই প্রতারক। ১ জুন ঢাকায় যোগদান করতে গিয়ে প্রতারণার বিষয়টি টের পান চাকরি প্রত্যাশীরা।
তখন তারা সাবের আলীর সঙ্গে বিভিন্নভাবে যোগাযোগের চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন। রাজশাহী ফিরে এসে টাকা ফেরত চাইলে দিতে অস্বীকৃতি জানান সাবের আলী। উল্টো ফাঁকা স্ট্যাম্প ও চেক পুঁজি করে ফাঁদে ফেলতে চাকরি প্রত্যাশীদের উকিল নোটিশ পাঠান।
মেজর নাজমুস শাকিব আরও জানান, র্যাবের জিজ্ঞাসাবাদে আটক সাবের আলী ও শফিকুল ইসলাম বাবুল ঘটনার দায় স্বীকার করেছেন। দীর্ঘদিন ধরে তারা সেনাবাহিনীতে চাকরি দেওয়ার নামে প্রতারণা করে মোটা অংকের অর্থ হাতিয়ে আসছিলেন। পরে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।