অনলাইনে জঙ্গিবাদ প্রচার: গ্রেপ্তারের পর রিমান্ডে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী
অনলাইনে ইসলামী জঙ্গিবাদ প্রচারের অভিযোগে মানারাত ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির হাসিবুর রহমান ওরফে আযযাম আল গালিব (২১) নামে এক ছাত্রকে গ্রেপ্তারের পর জিজ্ঞাসাবাদের পাঁচ দিনের হেফাজতে নেওয়ার অনুমতি পেয়েছে পুলিশ। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়টির আ্ইনের ছাত্র। তার বাড়ি পটুয়াখালীর মহিপুরে।
ঢাকা মহানগর পুলিশে (ডিএমপি) কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) শাখার কর্মকর্তারা বলছেন, হাসিবুর নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন আনসার ইসলামের সঙ্গে জড়িত। তিনি অনলাইনে জঙ্গিবাদী মতাদর্শ প্রচারের নেতৃত্ব দিতেন।
রাজধানীর উত্তরা পূর্ব থানার আদুল্লাহপুর বেড়ীবাধ এলাকা থেকে আগের দিন গ্রেপ্তারের পর সোমবার (১৫ নভেম্বর) সিটিটিসির প্রধান অতিরিক্ত কমিশনার মো. আসাদুজ্জামান এসব তথ্য জানান।
সাংবাদিকদের তিনি বলেন, হাসিবুর ২০১৬ সালে এসএসসি পাশ করে ঢাকা অক্সফোর্ড ইন্টারন্যাশনাল কলেজে উচ্চ মাধ্যমিকে পড়ার সময় ‘জামিল হাসান’ ও ‘মো. জামসেদ হোসাইন’ নামে দুটি ফেসবুক আইডির মাধ্যমে জঙ্গিবাদে দীক্ষিত হন। এই আইডিগুলোতে তালেবান ও আল কায়েদা নিয়ে ‘লেখালেখি’ হতো ও তাদের বিভিন্ন ‘সংবাদ’ প্রচার করতো।
হাসিবুরের কাছ থেকে জব্দ মোবাইল ফোন পরীক্ষা করে ফেসবুক, মেসেঞ্জার ও টেলিগ্রামসহ বিভিন্ন অ্যাপে ‘উগ্রবাদী কন্টেন্ট’ পাওয়া যায় বলে জানান তিনি।
হাসিবুরকে অনলাইনে জঙ্গিবাদ প্রচারণার অন্যতম ‘ত্রিরত্ন’ আখ্যা দিয়ে সিটিটিসির প্রধান বলেন, এর আগে আল আমিন সিদ্দিকী ও নারী জোবায়দা সিদ্দিকী নাবিলাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের পরিচালিত ‘জায়েদ ইবনে আলী’ ও ‘শাফায়েত মুসান্না ইসা’ নামে টেলিগ্রাম আইডির সঙ্গে হাসিবুরের যোগাযোগ হয়। তারা একত্রে সংগঠনের প্রচার প্রচারণা, সদস্য সংগ্রহ কার্যক্রম শুরু করেন। হাসিবুর রহমান আনসার আল ইসলামের মতদর্শ প্রচারের প্রধান হিসেবে অনলাইন র্যাডিক্যালাইজেশনের নেতৃত্ব প্রদান করেন।
“পাশাপাশি ফেসবুকে মুয়াহিদ মুসলিম নামে আরো একটি পেইজ খোলেন। সেখানে সে দাওয়াতি কার্যক্রম পরিচালনা করে সদস্য সংগ্রহ করতে থাকে। উগ্র মতবাদ ছড়ানোর অভিযোগে তার পেইজটি ফেইসবুক কর্তৃপক্ষ বন্ধও রাখে।”
সিটিটিসি প্রধান বলেন, সর্বশেষ সে আব্দুল্লাহ গালিব আযযাম নামে একটি ফেসবুক আইডি ব্যবহার করতো। কারাগারে আটক আনসার আল ইসলামের সদস্যদের জামিনের জন্য সে গোপনে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে অর্থ সংগ্রহেরও কাজ করতো।
তাকে গ্রেপ্তার করায় অনলাইনে জঙ্গিবাদ প্রচারণা ‘৮০ শতাংশ কমে আসবে’ বলে দাবি করেছে সিটিটিসি।
এদিকে, উত্তরা পূর্ব থানার সন্ত্রাসবিরোধী আইনের মামলায় তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক সাইফুর রহমান সোমবার আসামিকে আদালতে হাজির করে ১০ দিনের হেফাজতের আবেদন করেন। শুনানি শেষে বিকেলে ঢাকার মহানগর হাকিম সাদবীর ইয়াসির আহসান চৌধুরী পাঁচ দিনের হেফাজত মঞ্জুর করেন।