১৪ নভেম্বর ২০২১, ১৭:৪৭

মেয়েকে দেহ ব্যবসায় বাধ্য করার অভিযোগে বাবা-মা গ্রেপ্তার

  © প্রতীকী ছবি

এক কিশোরী কন্যাকে (১৪) দেহব্যবসায় বাধ্য করানোর অভিযোগে মেয়েটির বাবা-মা সহ তিন জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। পরে এই অভিযোগে তাদেরই বড় মেয়ের দেওয়া মামলায় অভিযুক্তদের কারাগারে পাঠিয়েছে আদালত। 

ঘটনাটি ঘটেছে বরিশাল নগরের ১৫ নং ওয়ার্ডে। ভুক্তভোগী ওই কিশোরীকে রাখা হয়েছে বরিশাল মহানগর পুলিশের ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারে। একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ওই কিশোরী নগরের ১৫ নম্বর ওয়ার্ডে বাবা-মায়ের সঙ্গে থাকতো। 

গ্রেফতারকৃতরা হলেন- মেয়েটির মা নাসরিন বেগম, বাবা সামসুল সিকদার এবংতাদের সহযোগী মধু ব্যবসায়ী  আনোয়ার হোসেন হাওলাদার।   

পুলিশ জানিয়েছে, শনিবার (১৩ নভেম্বর) বিকেলে ওই কিশোরী বাো থেকে পালিয়ে বরিশাল মহানগর পুলিশ কমিশনারের কার্যালয়ে গিয়ে অভিযোগ জানায়। পরে তার কাছ থেকে বিস্তারিত জেনে কোতোয়ালি মডেল থানাকে তৎক্ষণিক আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার নির্দেশ দেন পুলিশ কমিশনার শাহাবুদ্দিন খান। ওইদিন রাতেই অভিযান চালিয়ে অভিযুক্ত মা-বাবা ও তাদের সহযোগী আনোয়ার হোসেন হাওলাদারকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

রোববার (১৪ নভেম্বর) তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন ভুক্তভোগী স্কুলশিক্ষার্থীর বড় বোন সুমি আক্তার। সেই মামলা আমলে নিয়ে অভিযুক্তদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন মহানগর বিচারিক হাকিম আদালত।  

পুলিশ জানিয়েছে, কিশোরীটির মা-বাবা দুজনেই মাদক ও দেহ ব্যবসা করেন। তাদের বিরুদ্ধে মহানগরের কোতয়ালি মডেল থানায় একাধিক মামলা রয়েছে। তারা একাধিকবার পুলিশের হাতে গ্রেপ্তারও হয়েছেন।

পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগে কিশোরীটি জানায়, তার মা-বাবা বেশ কয়েকমাস ধরেই তাকে দেহ ব্যবসা করার জন্য নানাভাবে চাপ দিচ্ছিলেন। কিন্তু তাতে রাজি না হওয়ায় প্রতিনিয়তই নির্যাতন করা হত তাকে। চলতি বছরের জুন মাসে মা নাসরিন বেগম তাকে আনোয়ার হোসেন হাওলাদারের বাসায় নিয়ে যায়। আনোয়ার নগরীর মুনসুর কোয়ার্টার এলাকার ‘মিম মধু ঘর’ এর মালিক। সেখানে আনোয়ারের সঙ্গে একটি কক্ষে আটকে রাখা হয় ওই কিশোরীকে। এ সময় আনোয়ার তার শ্লীলতাহানি করেন বলে অভিযোগ ওই কিশোরীর।

কিশোরীটি জানায়, গত জুন থেকে অক্টোবর পর্যন্ত তাকে মোট ১২৫ বারের বেশি যৌন নির্যাতন করেছেন অভিযুক্ত আনোয়ার। আর এ কাজে বাধ্য করেছেন কিশোরীটির বাবা ও মা।

নগরের কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. নুরুল ইসলাম এ বিষয়ে বলেন, আমরা অভিযোগ পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নিয়েছি। ওই কিশোরীর অভিযোগটি মামলা হিসেবে গ্রহণ করে ওই মামলায় কিশোরীর বাবা-মাসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। এরপর তাদের আদালতে পাঠানো হলে হাকিম তাদের কারাগারে পাঠায়।