৫ ব্যাংকের নিয়োগ পরীক্ষা

ফাঁস হওয়া প্রশ্ন যেত ৮ এলাকায়, মুখস্তের জন্য ছিল ‘গোপন বুথ’

প্রশ্নপত্র ফাঁসকারী চক্রের পাঁচ সদস্যকে গ্রেপ্তারের পর এসব তথ্য জানা গেছে। চক্রের অন্য সদস্যদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে
প্রশ্নপত্র ফাঁসকারী চক্রের পাঁচ সদস্যকে গ্রেপ্তারের পর এসব তথ্য জানা গেছে। চক্রের অন্য সদস্যদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে  © সংগৃহীত

রাষ্ট্রায়ত্ত ৫ ব্যাংকের অফিসার (ক্যাশ) পদের নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্ন জালিয়াত চক্রের ৫ সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। যারা পরীক্ষার আগে রাজধানীর আটটি এলাকায় ফাঁস হওয়া প্রশ্ন নিয়ে যান এবং প্রার্থীদের তা মুখস্ত করান।

বুধবার (১০ নভেম্বর) ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা বিভাগের (ডিবির) অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার এ কে এম হাফিজ আক্তার এক সংবাদ সম্মেলনে এ সব তথ্য জানান।

পুলিশ জানিয়েছে, ওই পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁস হতে পারে, এমন তথ্য পেয়ে পুলিশ পরীক্ষার দিন সকাল ৭টার দিকে প্রশ্ন ও উত্তর পেতে চক্রের সঙ্গে যোগাযোগ করে। ওই চক্রের মূল হোতা রাইসুল ইসলাম স্বপনকে অগ্রিম টাকা দেওয়া হলে, তিনি পরীক্ষার্থীকে একটি বুথে নিয়ে যান। পরে ওই পরীক্ষার উত্তরপত্রসহ তাকে হাতেনাতে গ্রেপ্তার করা হয়।

গত ৬ নভেম্বর থেকে আজ বুধবার পর্যন্ত ডিবি পুলিশের অভিযানে ৫ জনকে গ্রেপ্তার করেছে গোয়েন্দা পুলিশ। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- মো. মোক্তারুজ্জামান রয়েল (২৬), মো. শামসুল হক শ্যামল (৩৪), জানে আলম মিলন (৩০), মোস্তাফিজুর রহমান মিলন (৩৮) ও রাইসুল ইসলাম স্বপন (৩৬)।

পুলিশ আরও জানায়, রাজধানীর বাড্ডা, বসুন্ধরা, উত্তরা, মোহাম্মদপুর, কল্যানপর, রূপনগর, মিরপুর, মাতুয়াইল, শেওড়াপাড়া, শেরেবাংলা নগর, পল্লবী এলাকায় নিয়ে যাওয়া হতো প্রার্থীদের। পরীক্ষার ৫ থেকে ৬ ঘন্টা আগে তাদের প্রশ্ন দিয়ে উত্তরপত্র মুখস্থ করানো হতো। এরপর ওই পরীক্ষার্থীরা কেন্দ্রে গিয়ে পরীক্ষায় অংশ নেন।

সংবাদ সম্মেলনে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের প্রধান হাফিজ আক্তার জানান, কয়েকটি সরকারি ব্যাংকের কর্মকর্তা ফাঁস হওয়া প্রশ্ন পরীক্ষার্থীদের কাছে ৫-১৫ লাখ টাকায় বিক্রি করেছেন। চক্রটি প্রশ্নপত্র ও উত্তরপত্র ফাঁসের মাধ্যমে হাতিয়ে নিয়েছে ৬০ কোটি টাকা।

তিনি আরও বলেন, প্রশ্ন নিতে যারা টাকা দিয়ে চুক্তিবদ্ধ হয়, তাদের ‘গোপন বুথে’ নিয়ে প্রশ্নের উত্তর মুখস্ত করানো হয়। এভাবে ৬০-৭০ ভাগ এমসিকিউ এর সঠিক উত্তর দেওয়া সম্ভব হয়েছে।

টাকা নিয়ে প্রশ্নপত্র পেয়েছেন এমন দুই শতাধিক পরীক্ষার্থীর তালিকা পেয়েছে গোয়েন্দা পুলিশ। হাফিজ আক্তার জানান, প্রশ্নপত্র ফাঁসকারী চক্রের পাঁচ সদস্যকে গ্রেপ্তারের পর এসব তথ্য জানা গেছে। চক্রের অন্য সদস্যদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে। জড়িত সরকারি ব্যাংক কর্মকর্তাদের পরিকল্পনায় প্রশ্নপত্র প্রণয়নসহ পরীক্ষা আয়োজনের দায়িত্বপ্রাপ্ত আহসানউল্লাহ ইউনির্ভাসিটির আইসিটি বিভাগ থেকে প্রশ্ন ফাঁস হয়েছে।


সর্বশেষ সংবাদ