১০ নভেম্বর ২০২১, ১১:৪৯

কম বকশিস পেয়ে খুলে ফেলা হলো অক্সিজেন মাস্ক, স্কুলছাত্রের মৃত্যু

  © সংগৃহীত

৫০ টাকা বকশিস কম দেওয়ায় অক্সিজেন মাস্ক খুলে বিকাশ চন্দ্র (১৭) নামে এক স্কুলছাত্রকে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। মঙ্গলবার (৯ নভেম্বর) রাতে বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এ ঘটনা ঘটেছে।

পরে আনসারদের সহযোগিতায় আসাদুজ্জামান দুলু নামে ওই কর্মচারী পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় শহরজুড়ে সমালোচনার ঝড় উঠলে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল তদন্ত কমিটি গঠন করেছে।

মৃত বিকাশ চন্দ্র গাইবান্ধার সাঘাটা উপজেলার পুটিমারি গ্রামের বিশু চন্দ্র কর্মকারের ছেলে এবং স্থানীয় খামার ধনারুয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের ৮ম শ্রেণির ছাত্র।

বিকাশের কাকা শচীন চন্দ্র কর্মকার বলেন, হাসপাতালের জরুরি বিভাগের কার্যক্রম শেষ করে অক্সিজেনসহ রোগী বিকাশকে তৃতীয় তলায় নিয়ে যাওয়া হয়।  হাসপাতালের দুলু নামে এক কর্মচারী রোগীকে ট্রলিতে করে বেডে পৌঁছে দেওয়ার পর ২০০ টাকা বকশিস দাবি করেন। এসময় বিকাশের বাবা ১৫০ টাকা দেন। তাদের কাছে আর কোনো টাকা না থাকার কথা জানালে কর্মচারী দুলু রোগীর মুখ থেকে অক্সিজেন মাক্স খুলে দেয়। এতে ৫ মিনিটের মধ্যে বিকাশ শ্বাসকষ্টে মারা যায়। এসময় অন্যান্য রোগীর লোকজন ওই কর্মচারীর ওপর চড়াও হলে হাসপাতালে কর্মরত আনসারদের সহায়তায় পালিয়ে যান দুলু।

তিনি আরও জানান, সংসারে টানাপড়েনের কারণে বিকাশ লেখাপড়ার পাশাপাশি একটি ওয়ার্কশপে কাজ করত। মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে বাইসাইকেলযোগে বাড়ি ফেরার পথে একটি মোটরসাইকেলের সঙ্গে ধাক্কা লেগে বিকাশ মাথায় গুরুতর আঘাত পান। 

তাকে সাঘাটা উপজেলা হাসপাতালে ভর্তি করে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়ার পর উন্নত চিকিৎসার জন্য রাত ১০টায় বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা. আব্দুল ওয়াদুদ বলেন,  দুলু কোন সরকারি কর্মচারী নন। মাঝে মাঝে সেখানে ডিউটি করত। তার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ আনা হয়েছে তা তদন্তে কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্তে সে দোষী প্রমাণিত হলে তার বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা প্রহণ করা হবে।

বগুড়া সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সেলিম রেজা বলেন, ঘটনার পর সেখানে আমাদের পুলিশ কর্মকর্তা যান এবং ঘটনার সত্যতা পাওয়া যায়। অভিযুক্ত কর্মচারী দৈনিক মজুরির ভিত্তিতে হাসপাতালে কাজ করতো। সে এখন পলাতক।

তিনি আরও বলেন, মরদেহ মর্গে রাখা হয়েছে। এখনও রোগীর স্বজন বা হাসপাতাল কৰ্তৃপক্ষ কোনো অভিযোগ করেনি। অভিযোগ করলে আইন অনুসারে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।