‘ভিকারুননিসা অধ্যক্ষের ফোনালাপে তেমন কিছু নেই’
ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ কামরুন নাহার ও মীর সাহাবুদ্দিন টিপুর ফোনালাপে ‘তেমন কিছু নেই’ বলে আদালতকে জানিয়েছে রাষ্ট্রপক্ষ। এরপর ফোনালাপ ফাঁসের ঘটনায় শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন নিয়ে পরবর্তী শুনানির জন্য আগামী ৩০ নভেম্বর দিন ধার্য করেছেন আদালত। এ বিষয়ে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
আজ রবিবার (৩১ অক্টোবর) ভিকারুননিসার অধ্যক্ষ ও অভিভাবক ফোরামের নেতার ফোনালাপ ফাঁসের ঘটনায় শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন দাখিলের নির্ধারিত দিন ছিল। হাইকোর্টের বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত ভার্চুয়াল বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আদালতে রিটের পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট আবদুল্লাহ আল হারুন ভূঁইয়া রাসেল। অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিপুল বাগমার। ফোনালাপ ফাঁসের ঘটনায় শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের তদন্ত কমিটির রিপোর্ট দাখিলে রাষ্ট্রপক্ষ থেকে সময় আবেদন করার পরিপ্রেক্ষিতে গত ১৬ সেপ্টেম্বর হাইকোর্টের একই ভার্চুয়াল বেঞ্চ ৩১ অক্টোবর শুনানির দিন ধার্য করেছিলেন। ওইদিন ভিকারুননিসার অধ্যক্ষের মুখে ‘এমন ভাষা অপ্রত্যাশিত’ বলে মন্তব্য করেছিলেন হাইকোর্ট।
গত ১০ আগস্ট আদালত শুনানিতে ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ কামরুন নাহার ফোনালাপে যে ভাষা ব্যবহার করেছেন, তা অবশ্যই নিন্দনীয় বলেও মন্তব্য করেন।
হাইকোর্ট জানিয়েছেন, ‘এটা অপ্রত্যাশিত। একজন অধ্যক্ষ এভাবে কথা বলতে পারেন না। তার মুখ থেকে এ ধরনের ভাষা আশা করা যায় না। যেহেতু তার ফোনালাপের বিষয়ে একটি তদন্ত কমিটি করা হয়েছে, তারা কী পদক্ষেপ নেন তা দেখে আমরা এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেব।’
অধ্যক্ষ কামরুন নাহারকে পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়ার নির্দেশনা চেয়ে করা রিটের শুনানিতে ওইদিন হাইকোর্টের একই ভার্চুয়াল বেঞ্চ এমন মন্তব্য করেন।
অধ্যক্ষ কামরুন নাহারকে পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়ার নির্দেশনা চেয়ে করা রিটের বিষয়ে আদেশের নির্ধারিত দিনে গত ১০ আগস্ট হাইকোর্টের বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত ভার্চুয়াল বেঞ্চ এ বিষয়ে আদেশ দেন।
এদিকে, ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ কামরুন নাহার এবং অভিভাবক ফোরামের নেতা মীর সাহাবুদ্দিন টিপুর ফোনালাপ ফাঁসের ঘটনায় শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের তদন্ত কমিটির রিপোর্ট ৩০ আগস্টের মধ্যে জমা দিতে বলেছিলেন হাইকোর্ট। ওই তদন্ত রিপোর্ট দেখে ১৬ সেপ্টেম্বর আদালত শুনানি ও আদেশের কথা ছিল। কিন্তু নির্ধারিত দিনে সময় আবেদনের কারণে তা পিছিয়ে যায়।
গত ৮ আগস্ট হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় রিটটি করেন ভিকারুননিসার দুই শিক্ষার্থীর অভিভাবক মোহাম্মদ মোরশেদ আলমের পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট আবদুল্লাহ আল হারুন ভূঁইয়া রাসেল। রিটে নৈতিক স্খলনের দায়ে অধ্যক্ষকে পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়ার আর্জি জানানো হয়। একই সঙ্গে ফোনালাপ ফাঁসের ঘটনায় অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নিতে বিবাদীদের নিষ্ক্রিয়তা কেন অবৈধ হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারির নির্দেশনা চাওয়া হয়।
রিটে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব, শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) ও ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের গভর্নিং বডির সভাপতিকে বিবাদী করা হয়। তিনি বলেন, ‘অধ্যক্ষ কামরুন নাহার ফোনালাপে যেসব কথা বলেছেন, তাতে তিনি ওই কলেজের অধ্যক্ষ পদে থাকার নৈতিক অবস্থান হারিয়েছেন। কারণ তিনি অধ্যক্ষ পদে বহাল থাকলে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের ওপর এর প্রভাব পড়বে।’
এর আগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অধ্যক্ষ ও অভিভাবক ফোরামের এক নেতার একটি ফোনালাপ ফাঁস হয়।