ক্লাস না নিয়ে ১০ বছর ধরে বেতন উত্তোলনের অভিযোগ
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ১৪ অক্টোবর ২০২১, ০২:৩৩ PM , আপডেট: ১৪ অক্টোবর ২০২১, ০২:৩৩ PM
খুলনার কয়রায় সরকারি মহিলা কলেজের এক প্রভাষকের বিরুদ্ধে কলেজে পাঠদান না করিয়ে ১০ বছরে ধরে বেতন উত্তোলন করার অভিযোগ উঠেছে। তিনি এলাকায় বিভিন্ন সংসদ সদস্যের সহকারী হিসেবে পরিচিত।
কলেজের বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী ও স্থানীয় বাসিন্দাদের মাধ্যমে জানা যায়, সরকারি মহিলা কলেজের ভূগোলের প্রভাষক মো. আক্তারুজ্জামান কলেজে অনুপস্থিত আছেন বছরের পর বছর। কলেজের পরিচালনা কমিটির যখন যিনি সভাপতি হন, তাকে ও অধ্যক্ষকে হাত করে একদিন এসে হাজিরা খাতায় পুরো মাসের সই করেন এবং বেতন উত্তোলন করেন।
কলেজ সূত্র থেকে জানা যায়, ১৯৯৬ সালে কলেজটি প্রতিষ্ঠিত হয়। মো. আক্তারুজ্জামান ২০০১ সালের ১২ নভেম্বর কলেজে যোগদান করেন। ২০১১ সালের ০১ নভেম্বর বেতন চালু হয় এবং ৩০ মার্চ ২০১৬ সালে জাতীয়করণ হয়। এই শিক্ষকসহ বর্তমান বিদ্যালয়ে ৩৩ জন শিক্ষক আছেন। বর্তমানে ওই কলেজে শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৭৭৮।
সরকারি মহিলা কলেজের শিক্ষার্থীদের থেকে জানা যায়, আমাদের কলেজে মো. আক্তারুজ্জামান নামের এক শিক্ষকের কথা শুনেছি। কিন্তু তিনি কোনো দিন আমাদের ক্লাস নেননি, তাকে চিনিও না।’ এ সময় নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অনেক শিক্ষার্থী বলেন, ওই নামে কোনো শিক্ষককে তারা চেনে না এবং তাদের ক্লাসও নেন না।
এ সময় নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন শিক্ষক বলেন, এ বিষয় আমরা আর কী বলব। অধ্যক্ষ স্যার ভালো জানেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দা জানান, শুরুর দিকে ক্লাস নিলেও ২০০৯ সালের পর থেকে মো. আক্তারুজ্জামান আর কোনো ক্লাস নেন না।
এ ব্যাপারে কথা হয় প্রভাষক মো. আক্তারুজ্জামানের সঙ্গে তিনি বলেন, একবারেই ক্লাস করাই না, এমন নয়। মাঝেমধ্যে ক্লাস নেয়। কলেজটি সরকারি করণে জন্য আমি দীর্ঘ সময় ঢাকায় থেকেছি। এ ছাড়া কয়রার উন্নয়নে বিভিন্ন প্রকল্প পাস করার জন্য কাজ করেছি। এর কারণে ক্লাস নিতে পারিনি। এটা আমার ভুল হয়েছে।
এ ব্যাপারে কলেজের অফিসার-ইন-চার্জ আমিরুল ইসলাম জানান, প্রভাষক আক্তারুজ্জামান ‘মাঝেমধ্যে আসেন। কলেজটি সরকারি করণের ক্ষেত্রে তার অবদান আছে। তাই বলে কলেজে না এসে বেতন পাওয়ার কোনো বিধান আছে কি-না, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, তা অবশ্য নেই। তাহলে ওই শিক্ষক কীভাবে বেতন পান, এমন প্রশ্নের জবাব দিতে তিনি রাজি হননি।
খুলনা-৪ আসনের সংসদ সদস্য আব্দুস সালাম মুর্শেদী বলেন, আক্তারুজ্জামান আমার অফিসিয়াল কোন সহকারী না। আমি যতদুর জানি সে মন্ত্রণালয় থেকে বিভিন্ন কাজ করে দেয়। আমার তার সঙ্গে পরিচয় রয়েছে। তবে সে আমার এপিএস না।
এ বিষয়ে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা খুলনা অঞ্চলের পরিচালক প্রফেসর শেখ হারুন অর-রশীদ জানান, বিষয়টি সম্পর্কে আমি তেমন কিছু জানিনা। এ বিষয়ে খোঁজ খবর নিয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।