স্কুলছাত্রী অপহরণের দৃশ্য সিসি ক্যামরায়
একটি সিসি ক্যামেরায় সেটি ধরা পড়েছে এক স্কুলছাত্রীকে জোর করে প্রাইভেটকারে তুলে নেওয়ার দৃশ্য। পাশের বাসায় লাগানো ওই সিসি ফুটেজ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে, অভিযুক্ত একজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
সোমবার (১১ অক্টোবর) অপহৃত ছাত্রীর মা বাদী হয়ে এ ব্যাপারে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানায় পাঁচ জনের বিরুদ্ধে অপহরণের অভিযোগে মামলা দায়ের করেন।
স্থানীয় সূত্র থেকে জানা গেছে, শনিবার দুপুরে ওই ছাত্রী তার বাসা থেকে বের হওয়ার পর অপহরণের শিকার হন। তবে, তাকে প্রাইভেটকারে তুলে নিয়ে যাওয়ার দৃশ্যটি পাশের বাসার একটি সিসি ক্যামেরায় ধরা পড়লে সেই ফুটেজ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) নাহিদ হোসেন জানান, মামলা দায়েরের আগেই রবিবার রাতে অপহরণের সঙ্গে জড়িত থাকায় সদর উপজেলার মৈন্দ গ্রামের ধন মিয়ার ছেলে কাউসার মিয়াকে (৩২) গ্রেপ্তার করা হয়েছে। কাউসার এই মামলার তিন নম্বর আসামি।
মামলার এজাহার থেকে জানা যায়, অপহরণের সঙ্গে জড়িতরা সবাই সদর উপজেলার মৈন্দ গ্রামের বাসিন্দা। ওই ছাত্রীর পরিবার ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরে বসবাস করেন। মৈন্দ গ্রামের ধন মিয়ার ছেলে জসিম উদ্দিন (২৫) ওই ছাত্রীকে প্রায় উত্যক্ত করতো। কয়েকদিন আগে জসিম ওই তাকে বিয়ের প্রস্তাব দিলে ওই শিক্ষার্থী ও তার পরিবার সাড়া দেয়নি। সম্প্রতিকালে স্কুল খোলার পর থেকে জসিম ওই শিক্ষার্থীকে ফের উত্যক্ত করতে শুরু করে। গত শনিবার দুপুরে ওই শিক্ষার্থী তার বাসা থেকে বের হওয়ার পর এক যুবক তার পিছু নেয় এবং এক পর্যায়ে তার গতিরোধ করে প্রাইভেটকারে করে অপহরণ করে নিয়ে যায়। ঘটনাটি পাশের বাসার সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজে ধরা পড়ে।
ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া সেই ভিডিওতে দেখা গেছে, বোরকা পরা ওই শিক্ষার্থী স্কুলব্যাগ কাঁধে নিয়ে রাস্তার পাশ দিয়ে হেঁটে যাচ্ছিলেন। এ সময় তার ডান পাশে সাদা রঙের একটি প্রাইভেটকার এসে থামার পরপরই মেয়েটির পিছু নেওয়া এক যুবক তাকে ধাক্কা দিয়ে প্রাইভেটকারে তুলে নেয়।
মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে, অপহরণকারীরা সারাদিন ওই শিক্ষার্থীকে প্রাইভেটকারে নিয়ে ঘুরাঘুরির পর ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার সুহিলপুর বাসস্ট্যান্ড এলাকায় ফেলে পালিয়ে যায়। পরে মেয়েটি বাসায় ফিরে পুরো বিষয়টি পরিবারকে জানায়। এরপর মামলার বাদী ঘটনাটি থানায় অবহিত করেন।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) কাজী মাসুদ ইবনে আনোয়ার জানান, মামলা দায়ের হওয়ার আগেই ঘটনা জানতে পেরে পুলিশ অভিযুক্তদের ধরতে অভিযান শুরু করে। রবিবার রাতে মামলার প্রধান আসামি জসিমের বড় ভাই কাউসার মিয়াকে আটক করেছে পুলিশ।
তিনি আরও জানান, পরদিন সোমবার সকালে ভিকটিমের মা থানায় মামলা দায়ের করলে কাউসারকে এই মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠানো হয়েছে। গ্রেপ্তার আসামির রিমান্ড আবেদন করা হবে। একইসঙ্গে অভিযুক্ত অন্যদেরও ধরতে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রেখেছে।