স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণের পর হত্যা, বিদেশে পালিয়ে যাওয়ার ৫ বছর পর গ্রেফতার
বরিশালের গৌরনদীতে অষ্টম শ্রেণির এক ছাত্রীকে অপহরণ করে ধর্ষণের পর হত্যা করে বিদেশে পালিয়ে যাওয়ার ঘটনায় করা মামলায় প্রধান আসামি আজাদ হোসেন ওরফে কালুকে (৩০) সাড়ে পাঁচ বছর পর গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
শনিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। রবিবার (২৬ সেপ্টেম্বর) গৌরনদী মডেল থানা-পুলিশ আজাদ হোসেনকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠায়।
শাহজালাল বিমানবন্দর থানার পরিদর্শক (অপারেশন) মো. মুজাহিদুল ইসলাম বলেন, ধর্ষণ ও হত্যা মামলার প্রধান আসামি আজাদ হোসেনের নামে আগে থেকে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা থাকায় শনিবার ইমিগ্রেশনে তাঁকে আটক করা হয়। ইমিগ্রেশন থেকে বিমানবন্দর থানা-পুলিশকে বিষয়টি জানানো হয়। পরে আজাদ হোসেনকে গ্রেপ্তার করে গৌরনদী মডেল থানায় পাঠানো হয়।
গৌরনদী মডেল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আবদুল হক বলেন, গ্রেপ্তার আসামি আজাদ হোসেনকে রবিবার আদালতের মাধ্যমে বরিশাল কেন্দ্রীয় করাগারে পাঠানো হয়েছে।
মামলার সূত্রে জানা যায়, গৌরনদী পৌরসভার ওই ছাত্রীকে দীর্ঘদিন থেকে উত্ত্যক্ত করে আসছিলেন আজাদ হোসেন। তাঁর কুপ্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করায় কিশোরীকে অপহরণের হুমকি দেন। একাধিকবার অপহরণের চেষ্টা চালিয়ে ব্যর্থও হন তিনি। অপহরণের চেষ্টার ঘটনায় মেয়েটির পরিবার থেকে গৌরনদী মডেল থানায় একাধিক জিডিও করা হয়েছে। শেষ পর্যন্ত ২০১৬ সালের ১ ফেব্রুয়ারি আজাদ হোসেন তাঁর সহযোগীদের নিয়ে মেয়েটি অপহরণ করেন।
পরে আজাদ হোসেন তাঁর দুই সহযোগী মোর্শেদা আক্তার সোনাই ও খায়রুল সরদারের সহায়তায় মেয়েটিকে ধর্ষণের পর গলায় ফাঁস লাগিয়ে হত্যা করে লাশ ডোবায় ফেলে দেন। ২ ফেব্রুয়ারি গৌরনদী উপজেলার সুন্দরদী মহল্লার একটি ডোবা থেকে মেয়েটির লাশ উদ্ধার করা হয়। লাশের পেটের সঙ্গে রশি বাঁধা ও গলায় প্লাস্টিকের সুতলি প্যাঁচানো ছিল।
এ ঘটনায় নিহত কিশোরীর বাবা বাদী হয়ে হয়ে আজাদ হোসেন কালুকে প্রধান আসামি করে আটজনের নামে গৌরনদী মডেল থানায় হত্যা মামলা করেন। কয়েক দিন পর আজাদ হোসেন পুলিশের চোখ ফাঁকি দিয়ে লেবাননে গিয়ে আত্মগোপন করেন।
অপহরণের পর ধর্ষণ ও হত্যা মামলায় ২০১৬ সালের ৬ এপ্রিল তদন্তের জন্য বরিশাল পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) দায়িত্ব পায়। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বরিশাল গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক মো. নিজাম উদ্দিন বলেন, মামলাটি তদন্তকালে ৩৪ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়েছে। তদন্ত শেষে আজাদ হোসেনসহ তিন আসামিকে অভিযুক্ত করে ও পাঁচজনকে মামলা থেকে অব্যাহতি দিয়ে চলতি বছরের ১৭ জানুয়ারি আদালতে অভিযোগপত্র জমা দিয়েছেন তিনি। অভিযোগপত্রে আজাদ হোসেনকে পলাতক দেখানো হয়েছিল। অভিযুক্ত অপর দুজন মোর্শেদা আক্তার ও খায়রুল সরদার জামিনে আছেন।