‘তোর বেঈমানির জন্য আত্মহত্যা করলাম’

এমরান হোসেন মুন্না ও সৈয়দা সাজিয়া শারমিন উষা
এমরান হোসেন মুন্না ও সৈয়দা সাজিয়া শারমিন উষা  © সংগহীত

অন্যজনের সঙ্গে স্ত্রীর প্রেমের সম্পর্ক থাকার অভিযোগে ক্ষোভ-অভিমানে এমরান হোসেন মুন্না (২৯) নামে এক যুবক আত্মহত্যা করেছেন। গত বুধবার সন্ধ্যায় নিজ বাড়িতে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন তিনি। কুমিল্লার বারপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

আত্মহত্যার পূর্বে মুন্না ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দিয়েছেন। সেখানে তিনি লিখেছেন, ‘আর পাঁচটা মানুষের মতো আমার জীবন না। মনে রাখিস, তোর বেঈমানি ও পরকীয়ার জন্য আত্মহত্যা করলাম আমি...।’

এ বিষয়ে গতকাল বৃহস্পতিবার (২৩ সেপ্টেম্বর) স্ত্রী সৈয়দা সাজিয়া শারমিন উষার (২৮) বিরুদ্ধে আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগ এনে কোতয়ালী মডেল থানায় মামলা দায়ের করেছেন নিহতের পিতা মো. মতিউর রহমান। নিহত মুন্না মহানগর যুবলীগের একজন সক্রিয় কর্মী ছিলেন।

মামলা সূত্রে জানা যায়, শহরতলীর বারপাড়া এলাকার মো. মতিউর রহমানের পুত্র এমরান হোসেন মুন্না। আর লাকসামের রাজাপুর এলাকার খিলা বাজার গ্রামের সৈয়দ জাহাঙ্গীর আলমের কন্যা সৈয়দা সাজিয়া শারমিন উষা। একসময় কুমিল্লা কর্মাশিয়াল ইন্সটিটিউট (বর্তমানে সরকারি সিটি কলেজ) এ শিক্ষার্থী ছিল মুন্না ও উষা। দুইজন এক বছরের সিনিয়র-জুনিয়র। ফলে কলেজ জীবনে প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন তারা।

প্রেমের সম্পর্ক থেকে ২০১৮ সালের ২৫ জানুয়ারি তাদের বিয়ে হয়। বিয়ের বছর খানেক পর থেকেই তাদের পারিবারিক জীবনে টানাপোড়ন শুরু হয়। উষা ঢাকায় একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশুনার সুবাদে বেশিরভাগ সময় ঢাকায় থাকতেন। আর মুন্না প্রথমে কুমিল্লায় একটি প্রাইভেট কোম্পানীতে চাকরি করলেও পরে চাকরি ছেড়ে কুমিল্লাতেই ঠিকাদারি ব্যবসা শুরু করেন। দিনদিন তাদের মধ্যে সম্পর্কে ফাটল ধরে।

মুন্নার পরিবারের অভিযোগ, উষা ঢাকায় সোহেল নামের এক ছেলের সঙ্গে পরকীয়া সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে মুন্নাকে বিভিন্নভাবে মানসিক নির্যাতন করত। চাহিদা মতো টাকা দিতে না পারার অজুহাতে মরে যাওয়ার কথা বলে কটাক্ষ করত। এতে মানসিকভাবে মুন্না ভেঙ্গে পড়ে। গত বুধবার সে আত্মহত্যার প্রস্তুতি নিয়ে স্ত্রীকে ছবি পাঠায় এবং ক্ষুদে বার্তা পাঠায়। কিন্তু স্ত্রী উষা এতেও কর্ণপাত করেনি। বরং উল্টো উস্কানিমূলক কথাবার্তা বলেন।

এতে মুন্না ক্ষোভে ঘরের সিলিং ফ্যানের সঙ্গে ওড়না পেচিয়ে আত্মহত্যা করে। পরে পরিবারের লোকজন শব্দ পেয়ে দরজা ভেঙে তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়। পরে ময়নাতদন্ত শেষে গতকাল বাদ জোহর গুধির পুকুরপাড় ঈদগাহ ময়দানে এমরান হোসাইন মুন্নার জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। এরপর তাকে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়।

কুমিল্লা কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি আনোয়ারুল আজিম গণমাধ্যমকে বলেন, নিহতের পরিবার আত্মহত্যার প্ররোচনার মামলা করেছে। আমরা বিষয়টি তদন্ত করে দেখছি।


সর্বশেষ সংবাদ