কোচিং সেন্টারের শিক্ষক থেকে যেভাবে ইভ্যালির এমডি রাসেল
ছিলেন কোচিং সেন্টারের শিক্ষক। পরে চাকরি নেন ব্যাংকে। এরপর শুরু করেন ব্যবসা। আর সেই ব্যবসাকে পুঁজি করে জনসাধারণকে প্রলোভন দেখিয়ে নেমে পড়েন অফার-বাণিজ্যে। এভাবেই গ্রাহকদের কোটি কোটি টাকা হাতিয়েছেন ইভ্যালির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ রাসেল।
র্যাবসূত্রে জানা গেছে, জিজ্ঞাসাবাদে রাসেল জানিয়েছেন, প্রতিষ্ঠার পর থেকেই লোকসানে ছিল ইভ্যালি। গ্রাহকের টাকা দিয়েই অফিস খরচ ও বিলাসবহুল জীবনযাপন করতেন তিনি।
আজ শুক্রবার (১৭ সেপ্টেম্বর) র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, একটি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মাস্টার্স করে ২০০৯ সালে রাজধানীর একটি কোচিং সেন্টারে শিক্ষকতা শুরু করেন রাসেল। এ পেশায় কেটে যায় দুই বছর। ২০১৩ সালে একটি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমবিএ করেন। ২০১১ সালে একটি ব্যাংকে চাকরি করেন।
৬ বছর ওই প্রতিষ্ঠানে চাকরি করার পর ২০১৭ সালে নিজেই ব্যবসা খোলেন। ইভ্যালি চালু করেন ২০১৮ সালে। চটকদার বিজ্ঞাপন দিয়ে লাখ লাখ গ্রাহককে আকৃষ্ট করেন খুব দ্রুত।
র্যাব জানায়, ইভ্যালিকে পুঁজি করে লোভনীয় অফারের মাধ্যমে গ্রাহকদের কাছ থেকে অর্থ আদায় করতে নানা প্রতারণার আশ্রয় নেন প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. রাসেল। নতুন গ্রাহকদের টাকায় পুরনো গ্রাহক ও সরবরাহকারীদের কিছু টাকা পরিশোধ করতেন। দায় মেটাতে বিভিন্ন অজুহাতে সময় বাড়ানোটাও ছিল তার ব্যবসায়িক অপকৌশল।
প্রতিষ্ঠানে রাসেলের একক কর্তৃত্ব থাকায় স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা ছিল না। জুন থেকে ইভ্যালিতে কর্মরত অনেকের বেতন বকেয়া রয়েছে। তবে রাসেল ও প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান শামীমা নাসরীন নিজেরা প্রতি মাসে পাঁচ লাখ টাকা করে বেতন ঠিকই তুলেছেন।
‘প্রতিনিয়ত দেনা বাড়তে থাকায় নতুন সব অপকৌশলের আশ্রয় নেয় রাসেল’, এমনটা উল্লেখ করে খর্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক বলেন, ‘রাসেল এখন পর্যন্ত যা যা করেছে তা ছিল তার ব্যবসায়িক নেতিবাচক স্ট্র্যাটেজি। যার কারণে অনেক সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান ও আর্থিক লেনদেন সুবিধা প্রদানকারীরাও সরে এসেছে।’
গ্রাহকের টাকা কীভাবে ফেরত দেওয়া হবে এ নিয়ে রাসেলের কোনও পরিকল্পনা ছিল না বলেও জানান তিনি। তিন বছর পূর্ণ হলে শেয়ার মার্কেটে অন্তর্ভুক্ত হয়ে শেয়ারহোল্ডারদের ওপর দায় চাপানোর পরিকল্পনা ছিল তার। এমনকি ইভ্যালিকে দেউলিয়া ঘোষণারও পরিকল্পনা ছিল।