এক অধ্যক্ষকে বদলির দাবিতে কলেজের শতাধিক শিক্ষক-কর্মচারীর আন্দোলন

আন্দোলনে বগুড়া সরকারি শাহ্‌ সুলতান কলেজের শতাধিক শিক্ষক-কর্মচারী
আন্দোলনে বগুড়া সরকারি শাহ্‌ সুলতান কলেজের শতাধিক শিক্ষক-কর্মচারী  © ছবি : সংগৃহীত

এক অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে অনিয়ম ও দুর্নীতির ১৬টি অভিযোগ উত্থাপন করে তাকে বদলির দাবিতে আন্দোলনে নেমেছেন ওই কলেজের শতাধিক শিক্ষক-কর্মচারী। বগুড়া সরকারি শাহ্‌ সুলতান কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক শাহিদুল আলমের বিরুদ্ধে অভিযোগগুলো আনা হয়।

বুধবার বিকেলে এক জরুরি সভা ডেকে শিক্ষক-কর্মচারীরা অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে অনিয়ম ও দুর্নীতির ১৬টি অভিযোগ উত্থাপন করেন। বৃহস্পতিবার দুপুর পৌনে ২টায় তারা মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন। এই আন্দোলনে শিক্ষাঙ্গনটিতে শিক্ষার্থীদের নিয়মিত পাঠদান কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে।

শিক্ষক-কর্মচারীরা জানিয়েছেন, দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত প্রতিদিন দুপুরে কলেজ প্রাঙ্গণে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হবে। 

অধ্যক্ষ অধ্যাপক শহিদুল আলমের বিরুদ্ধে উত্থাপিত ১৬ অভিযোগের মধ্যে রয়েছে- কলেজের বিভাগীয় সেমিনার ও বিভিন্ন সেবামূলক খাত থেকে প্রয়োজনীয় অর্থ উত্তোলনে চেক স্বাক্ষরে অতিরিক্ত অর্থ দাবি, সেই দাবি পূরণ না করলে হয়রানি, শিক্ষকদের এসিআর (বার্ষিক গোপনীয় রিপোর্ট) সংক্রান্ত বিষয়ে ভয়ভীতি প্রদর্শন, বার্ষিক কর্ম সম্পাদন চুক্তি (এপিএ) যথাযথভাবে প্রতিপালন না করে ভুয়া প্রতিবেদন পাঠানো, শিক্ষক-কর্মচারীদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার, গুরুত্বপূর্ণ ফাইল স্বাক্ষরের ক্ষেত্রে গড়িমসি করা এবং যে কোনো যৌক্তিক পাওনা ও অফিসিয়াল চিঠি পাঠাতে দেরি করা এবং করোনা মহামারি পরবর্তী ক্লাসে যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি প্রতিপালনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা না নেওয়া ইত্যাদি।

বিসিএস শিক্ষা ক্যাডারের ১৪তম ব্যাচের কর্মকর্তা অধ্যাপক শহিদুল আলম প্রায় দুই বছর আগে ২০১৯ সালের আগস্ট মাসে কলেজটিতে অধ্যক্ষ হিসেবে যোগ দেন।

অধ্যাপক শহিদুল আলমের সঙ্গে বিভিন্ন ইস্যুতে শিক্ষক-কর্মচারীদের মতপার্থক্য ও দূরত্ব রয়েছে। করোনাকালে তা বিরোধে রূপ নেয়। গত ১২ সেপ্টেম্বর কলেজে পাঠদান শুরু হলে বিরোধ আরও তুঙ্গে ওঠে। গত ১৫ সেপ্টেম্বর বুধবার কলেজে শিক্ষক পরিষদের জরুরি সভা হয়। এতে ৬৮ জন শিক্ষকের মধ্যে ৫৬ জন অংশ নেন। এ সভার সিদ্ধান্তের সঙ্গে ৬৫ কর্মচারীর মধ্যে ৫৬ জন একাত্মতা ঘোষণা করেন।

কলেজের শিক্ষক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ও রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মোহাম্মদ আইয়ুব আলী জানান, পরীক্ষার দায়িত্ব পালন ও শ্রান্তি বিনোদনসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে শিক্ষক-কর্মচারীদের জন্য বরাদ্দ ভাতা বিতরণে অধ্যক্ষ দেরি করেন, অনেকের কাছে ভাতা থেকে নির্দিষ্ট অঙ্কের অর্থও দাবি করেন। কোনো শিক্ষক-কর্মচারী অবসরে গেলেও অধ্যক্ষ তার ফাইল আটকে রাখেন। তিনি বলেন, দুই বছর ধরে অধ্যক্ষের এসব কর্মকাণ্ডের প্রতিবাদ করে আসছি আমরা।

তবে অধ্যাপক শহিদুল আলম তার বিরুদ্ধে সহকর্মীদের আনা দুর্নীতির সব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, সরকারি নীতিমালা অনুযায়ী সব কাজ করে থাকি। তা হয়তো অনেকের পছন্দ নয়। আর সে জন্যই হয়তো তারা আমার বিরুদ্ধে কথা বলছে।


সর্বশেষ সংবাদ