শরীয়তপুরে শিক্ষক হত্যায় ৪ জনের মৃত্যুদণ্ড, ৯ জনের যাবজ্জীবন

শরীয়তপুরে শিক্ষক হত্যায় ৪ জনের মৃত্যুদণ্ড, ৯ জনের যাবজ্জীবন
শরীয়তপুরে শিক্ষক হত্যায় ৪ জনের মৃত্যুদণ্ড, ৯ জনের যাবজ্জীবন  © প্রতীকী ছবি

শরীয়তপুর সদর উপজেলার চিকন্দি সরফ আলী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুস ছামাদ আজাদ হত্যা মামলায় ৪ জনের মৃত্যুদণ্ড ও ৯ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ দিয়েছেন আদালত। একই মামলায় অপরাধ প্রমাণিত না হওয়ার ৫ জনকে খালাস দিয়েছে আদালত। বুধবার (১৫ সেপ্টেম্বর) ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-৩ এর বিচারক মো. মনির কামাল এ রায় ঘোষণা করেন।

মৃত্যুদণ্ড প্রাপ্তরা হলেন- নুরুজ্জামান খান, জাহাঙ্গীর মাতবর, জুলহাস মাতবর ও চান মিয়া। পাশাপাশি তাদের ২০ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে।

যাবজ্জীবন কারাদণ্ড প্রাপ্তরা হলেন- ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আব্দুল হালিম মোল্লা, আজিজুল মাতবর, ফারুক খান, আজাহার মাতবর, মীজান মীর, আকতার গাজী, জলিল মাতবর, এমদাদ মাতবর ও লাল মিয়া। তাদেরও ২০ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে। অনাদায়ে আরও ৬ মাসের কারাদণ্ডের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

খালাস প্রাপ্তরা হচ্ছেন- আজিবর বালী, আব্দুল খন্দকার, খোকন বেপারী, আজাহার মোল্লা ও ছোরাব মোল্লা।

মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, শরীয়তপুর সদর উপজেলার চিকন্দি সরফ আলী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ছিলেন আব্দুস ছামাদ আজাদ। তিনি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে তৎকালীন চেয়ারম্যান হালিম মোল্লার কাছে অল্প ভোটের ব্যবধানে পরাজিত হয়েছিলেন। পরবর্তী নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার পর জন্য তিনি এলাকায় পোস্টারিং করে আসছিলেন। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে হালিম মোল্লা হুমকি দিয়ে আসছিলেন।

পরে ২০১০ সালের ১৫ জানুয়ারি সন্ধ্যা ৭টার দিকে শিক্ষক ছামাদ আজাদ শরীয়তপুর জেলার পালং থানার সন্তোষপুর বাস স্ট্যান্ডের লক্ষ্মীর মোড়ের বাবুল মুন্সির ক্রোকারিজের দোকান থেকে বের হয়ে রাস্তার ওপর আসার পরই তাকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। সে সময় তাকে বাঁচাতে এগিয়ে এসে গুলিবিদ্ধ হন রহিম পেদা, ওয়াজেদ শীল, সেলিম ফকির, ইসাহাক মুন্সী ও বিশ্বজিৎ শীল।

ওই ঘটনায় নিহত প্রধান শিক্ষকের স্ত্রী বাদী হয়ে তৎকালীন চেয়ারম্যান হালিম মোল্লা ও সাবেক চেয়ারম্যান আজিবর বালীসহ ৩০ জনকে আসামি করে শরীয়তপুরের পালং থানায় একটি মামলা করেন।

একই বছর ১৪ আগস্ট পালং থানার উপপরিদর্শক শহীদুল ইসলাম ১৭ জনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। এতে নারাজি দেন মামলার বাদী। এরপর ২০১১ সালের ১১ মে একই থানার এসআই সুলতান মাহমুদ ১৯ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করেন।

২০১৪ সালে মামলাটি বিচারের জন্য শরীয়তপুরের সিনিয়র দায়রা জজ আদালতে আসে। সেখানে ২০১৬ সালের ২০ জানুয়ারি আদালত আসামিদের বিরুদ্ধে চার্জগঠন করেন। পরে ২০১৮ সালের ৯ এপ্রিল মামলাটি দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য ঢাকার ৩ নম্বর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে পাঠানোর প্রজ্ঞাপন জারি হয়।

ওই বছর ২১ জুন মামলার নথি ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে আসে। এরপর একই বছর ৯ সেপ্টেম্বর মামলার সাক্ষ্য গ্রহণ শুরু হয়।


সর্বশেষ সংবাদ