চা–বাগান কর্মকর্তাকে ছাত্রলীগের মারধর, পাল্টা হামলা শ্রমিকদের

মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে গ্র্যান্ড মুবিন রিসোর্টের ভাঙচুর করা কক্ষ
মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে গ্র্যান্ড মুবিন রিসোর্টের ভাঙচুর করা কক্ষ  © সংগৃহীত

ঢাকা থেকে যাওয়া ছাত্রলীগ নেতাদের ছবি তুলতে নিষেধ করায় মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে জেরিন চা–বাগানের ডেপুটি ম্যানেজারকে মারধর করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। পরে চা–বাগানের শ্রমিকেরা ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের ওপর হামলা করেন এবং পাশের গ্র্যান্ড মুবিন রিসোর্টের চারটি কক্ষে ভাঙচুর চালান।

শ্রীমঙ্গল থানার পুলিশ হোটেলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। বৃহস্পতিবার সকালে উপজেলার রাধানগর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

হামলায় দুই পক্ষের প্রায় ১৫ জন আহত হয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন। আহতরা হলেন জেরিন চা–বাগানের শ্রমিক মামুন মিয়া (২৪), অঞ্জলী (২৫), ছন্দা সবর (৩৫), বিশ্বমনী রিকিয়াশন (২৬), পারুল বেগম (৩০), ভারতী সাঁওতাল (৪০), অনিতা গোয়ালা (৪০), আলো মনি বাড়ই (২৫), সৃতি সাংমা (৪০), মুসলিম মিয়া (২০), উত্তম গড়াই (২৫), আবদুল কাদির (২৬), ইন্দ্রজিৎ দাস (২৫) এবং ঢাকা থেকে আসা ছাত্রলীগের নেতা মো. রাফি (২৯) ও মো. রাসেল মিয়া (২৭)।

আরও পড়ুন: ঢাবিতে ভুয়া সনদে শতাধিক কর্মকর্তার পদোন্নতির আবেদন

জানা যায়, ঢাকা মহানগর (উত্তর) ছাত্রলীগের সভাপতি মো. ইব্রাহীম হোসেন এবং ঢাকা উত্তর ছাত্রলীগের বিভিন্ন ইউনিটের আরও ১৮ নেতাকর্মী গতকাল বুধবার রিসোর্টে ওঠেন। বেলা সাড়ে ১১টার দিকে তাঁরা রিসোর্টের পাশে জেরিন চা–বাগানের ৯ নম্বর সেকশনের কালাবন এলাকার ছবি তুলছিলেন। এ সময় ওই এলাকায় কর্মরত মহিলা চা–শ্রমিকেরা তাঁদের ছবি তুলতে নিষেধ করেন। এ নিয়ে শ্রমিকদের সঙ্গে নেতাকর্মীদের কথা কাটাকাটি হয়। পরে হামলার ঘটনা ঘটে।

জেরিন চা–বাগানের ব্যবস্থাপক সেলিম রেজা বলেন, ‘রিসোর্টের পাশের চা–বাগানে নারী শ্রমিকেরা চা–পাতা তোলার কাজ করছিলেন। এ সময় ঢাকা থেকে আসা ছাত্রলীগের নেতা–কর্মীরা চা–বাগানে ঢুকে নারীদের ছবি তুলছিলেন। চা–বাগানের শ্রমিকেরা ও আমাদের ডেপুটি ম্যানেজার মো. আলী তাঁদের ছবি তুলতে নিষেধ করলে তাঁরা ডেপুটি ম্যানেজারকে গালমন্দ করেন। ডেপুটি ম্যানেজার বারবার তাঁদের নিষেধ করলে তাঁরা উত্তেজিত অবস্থায় কথা বলতে থাকেন। বাগ্‌বিতণ্ডার একপর্যায়ে তাঁরা আমাদের ডেপুটি ম্যানেজারের গায়ে হাত তোলেন। তাঁকে টেনে রিসোর্টে নিয়ে যেতে চাইলে চা–বাগানের শ্রমিকেরা বাধা দেন। ছাত্রলীগের কর্মীরা নারী শ্রমিক ও ডেপুটি ম্যানেজারের ওপর হামলা করলে শ্রমিকেরা চা–বাগানের পাগলা ঘণ্টা বাজালে শ্রমিকেরা উত্তেজিত হয়ে রিসোর্টে যান। পরে আমরা গিয়ে শ্রমিকদের শান্ত করে বাগানে ফিরিয়ে এনেছি।’

আরও পড়ুন: করোনায় বয়সে ছাড়: দ্রুত শূন্যপদ পূরণের নির্দেশ

ঢাকা মহানগর উত্তর ছাত্রলীগের সভাপতি ইব্রাহিম হোসেন বলেন, ‘চা–বাগানে ছবি তোলা নিয়ে স্থানীয় চা–শ্রমিকদের সঙ্গে একটু কথা কাটাকাটি হয়েছিল। পরে স্থানীয়রা সমাধান করে দিয়েছেন। এটি আসলে একটি ভুল বোঝাবুঝির কারণে হয়েছে। আমাদের ওপর কেউ হামলা করেনি। আমরাও কাউকে মারধর করিনি।’


সর্বশেষ সংবাদ