হাসপাতালে ঢুকেও সাংবাদিককে কোপাল ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা
মোটরসাইকেলে ধাক্কা লাগাকে কেন্দ্র করে চুয়াডাঙ্গা পৌরসভায় সোহেল রানা ডালিম (৩৬) নামের স্থানীয় এক সাংবাদিককে ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। দুই দফা হামলা চালিয়ে ধারালো অস্ত্রের আঘাতে তার শরীরের বিভিন্ন স্থান ক্ষতবিক্ষত করা হয়েছে।
সোমবার (১৬ আগস্ট) রাত সোয়া ৮টার দিকে ইমার্জেন্সি সড়কের আব্দুল্লাহ সিটি মার্কেটের সামনে এবং দ্বিতীয় দফায় সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগে এ হামলার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় পুলিশ জেলা ছাত্রলীগের সাবেক ছাত্রবিষয়ক সম্পাদক রাজু নামের একজনকে আটক করেছে।
আহত সোহেল রানা ডালিম চুয়াডাঙ্গা পৌর এলাকার সিঅ্যান্ডবি পাড়ার বাসিন্দা ও দৈনিক সময়ের সমীকরণ পত্রিকার স্টাফ রিপোর্টার।
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন সোহেল রানা জানান, রাতে সংবাদ সংগ্রহ শেষে শহরের ইমার্জেন্সি রোড হয়ে সময়ের সমীকরণ পত্রিকার অফিসের দিকে যাচ্ছিলেন তিনি। এ সময় আব্দুল্লাহ সিটির সামনে পৌঁছালে তার মোটরসাইকেলের সঙ্গে সাবেক ছাত্রলীগ নেতা রাজুর মোটরসাইকেলের ধাক্কা লাগে। এতে রাজু ক্ষিপ্ত হয়ে সোহেল রানার মোটরসাইকেলের চাবি কেড়ে নেয়। এ নিয়ে তাদের মধ্যে বাগবিতণ্ডা চলে।
সোহেল রানা বলেন, ‘তখন হঠাৎ করে একজন পেছন থেকে আমার পিঠে ছুরি দিয়ে আঘাত করে। আমি কোনো রকমে হেলমেট দিয়ে তাদের প্রতিহত করে একটি চলন্ত ইজিবাইকে করে দ্রুত সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগে আসি। জরুরি বিভাগে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আমাকে আবারও কুপিয়ে জখম করে তারা।’
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগে কর্মরত এক স্বেচ্ছাসেবক বলেন, সাংবাদিক সোহেল রানাকে গুরুতর জখম অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে আসার পর আমরা তার ক্ষতস্থানে সেলাই দিচ্ছিলাম। এর কিছুক্ষণ পর তিনজন যুবক এসে তাকে আবারও ধারালো অস্ত্র (চাপাতি) দিয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে জখম করে। আমরা ভয়ে কিছু বলতে পারিনি। আমরা তাদের চিনিও না। পুলিশ আসার খবর শুনে পালিয়ে যায় তারা।
সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক সাকিল আরসালান জানান, ধারালো অস্ত্রের আঘাতে সোহেল রানার পিঠ, বুক ও হাতে গভীর ক্ষত হয়েছে। প্রচুর রক্তক্ষরণও হয়েছে। তাকে হাসপাতালে ভর্তি রেখে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। তিনি এখনও আশঙ্কামুক্ত নন।
এ বিষয়ে চুয়াডাঙ্গা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু জিহাদ ফকরুল আলম খান জানান, ঘটনার পর অভিযান চালিয়ে একজনকে আটক করা হয়েছে। হামলায় জড়িত বাকিদের ধরতে অভিযান চলছে।
চুয়াডাঙ্গা প্রেসক্লাবের সভাপতি সরদার আল আমিনসহ সাংবাদিক মহল এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে অভিযুক্তদের দ্রুত গ্রেফতারের দাবি জানিয়েছেন।