মেয়েদের দিয়ে ‘খারাপ কাজ’, বাবা-মাকে হত্যা করে থানায় ফোন মেহজাবিনের
রাজধানীর কদমতলীর মুরাদপুরে স্বামী-স্ত্রী ও মেয়ের লাশ উদ্ধারের ঘটনায় পুলিশকে চাঞ্চল্যকর তথ্য দিয়েছে আটক মেহজাবিন (২৬)।
শনিবার (১৯) সকালে জাতীয় জরুরি সেবা ট্রিপল নাইনে কল পেয়ে রাজধানীর কদমতলীর মুরাদপুরের বাসা থেকে তিনজনের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
নিহতরা হলেন- মাসুদ রানা (৫০), তার স্ত্রী মৌসুমি ইসলাম (৪৫) ও মেয়ে জান্নাতুল (২১)।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, শনিবার সকালে জাতীয় জরুরি সেবা ট্রিপল নাইনে কল করে মেহজাবিন জানায়,‘‘আমার মা-বাবা ও বোনকে হত্যা করা হয়েছে। দ্রুত আসেন। আপনারা আসেন। আমাকে ধরে নিয়ে যান। আরও দুজন বেঁচে আছে। তাদের জীবিত নিতে চাইলে দ্রুত চলে আসেন।’ কল পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে তিনজনের লাশ উদ্ধার করে হাসপাতাল মর্গে পাঠায় পুলিশ। এছাড়াও মেহজাবিনের স্বামী ও সন্তানকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। এসময় মেহজাবিনকে আটক করে থানায় নিয়ে যায় পুলিশ।
আটক মেহজাবিন পুলিশের কাছে দাবি করেছে, তার বাবা মাসুদ রানা ১২ বছর ধরে বিদেশে ছিলেন। সম্প্রতি দেশে ফিরেছেন। ওই সময় তার মা মৌসুমী তাকে ও তার ছোট বোনকে দিয়ে ‘খারাপ কাজ’ করাতেন। এরই মধ্যে মেহজাবিনের বিয়ে হয়ে যায়। বাবা দেশে ফিরে আসেন। বিষয়টি জানতে পারলেও মায়ের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেননি। উল্টো নীরব সমর্থন দিয়ে যাচ্ছিলেন। বিষয়টি কোনোভাবেই মানতে পারছিলেন না তিনি।
অন্যদিকে তার মায়ের কর্মকাণ্ডও বন্ধ হয়নি। তার মা ছোট বোনকে দিয়ে বারবার একই কাজ করাচ্ছিলেন। বাধ্য হয়ে মেহজাবিন ছোট বোনকে তার বাসায় নিয়ে রাখেন।
সম্প্রতি তার মা ছোট বোনকে সেখান থেকে নিয়ে আসেন এবং আবারও একই কাজ করাচ্ছিলেন। বিষয়টি জানতে পেরে তার মাকে নিষেধও করেন; কিন্তু মা শোনেননি। শুক্রবার রাতে তিনি স্বামী ও তার বাচ্চাকে নিয়ে বাবার বাড়িতে আসেন। এরপর রাতে খাবারের সঙ্গে বাসার বৃদ্ধ দাদি ছাড়া সবাইকে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে দেন। এক পর্যায়ে তারা অচেতন হয়ে পড়লে তিনি মা, বাবা ও বোনের হাত-পা বেঁধে শ্বাসরোধে হত্যা করেন।
এ বিষয়ে মেহজাবিনের আহত স্বামী শফিকুল জানান, শুক্রবার রাতে তিনি স্ত্রী ও সন্তানসহ শ্বশুরবাড়িতে বেড়াতে যান। সেখানে যাওয়ার পরে তার স্ত্রী মেহজাবিন সবাইকে চা দেন। চা খাওয়ার পরে তার আর কিছু মনে নেই। ওই চা তার শ্বশুর শাশুড়িও খেয়েছেন। তার স্ত্রীর সঙ্গে শ্বশুরবাড়ির কারও সম্পর্ক ভালো না। প্রায়ই তাদের মধ্যে কলহ চলতো বলেও জানান তিনি।
এ বিষয়ে ডিএমপির ওয়ারী বিভাগের ডিসি ইফতেখার আহমেদ জানান, মেহজাবিন ও তার বোনকে দিয়ে মা খারাপ কাজ করাত। এই ক্ষোভ থেকে সে মা, বাবা ও বোনকে হত্যা করেছে বলে জানিয়েছে। এ ছাড়া আরও কোনো কারণ রয়েছে কি না তা জানার চেষ্টা করা হচ্ছে। আমরা তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করছি।